পৃষ্ঠাসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০১৭

বনবীথি পাত্র


জ্বালা

.
"আমি ভাবি ঘোড়া হয়ে
মাঠ হব পার ,
কভু ভাবি মাছ হয়ে 
কাটিব সাঁতার ।
কভু ভাবি পাখি হয়ে
উড়িব গগনে ,
কখনো হবে না সে কি
ভাবি যাহা মনে ।"
দিদিমণি ক্লাসে ছড়াটা পড়াচ্ছেন আর ক্লাসের ঐ নীল-সাদা জামা পরা ছেলেমেয়েগুলো দুলে দুলে কবিতাটা বলছে । 
ক্লাসঘরের দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে শুনছিল পাঁচবছরের ফেলি । ওর জন্মের পর নাকি  ওকে কারা ফেলে পালিয়েছিল । মা কুড়িয়ে এনে নাম দিয়েছে ফেলি । 
কবিতাটা শুনতে শুনতে ফেলির ও মনে মনে ভাবতে থাকে , ঐরকম নীল-সাদা জামা পড়ে সেও বই-খাতা-ব্যাগ নেই বেঞ্চে বসে দুলে দুলে পড়া করছে । 
তখনি কেঁদে ওঠে ছোট বোনটা । কাল রাতে কিছু খাবার জোটেনি । ক্ষিদে পেয়েছে ওর । ফুলির ও ক্ষিদে পেয়েছে । কিন্তু ফুলি ক্ষিদে পেলে দু-তিনবার ঢোক গিলে পেট ভরাতে শিখে গেছে এখন ।
ইঁটভাটায় কাজ সেরে ফিরে এসে মা ভাত রাঁধবে বলেছে ।
কিন্তু সে তো অনেক দেরি । বোনটা যে কেঁদেই চলেছে....
ঐ বড়ো তিনতলা হলুদ বাড়ির কালকে ওদের বাড়ির সামনের ঘাসগুলো তুলে দিলে পাঁচটাকা দেবে বলেছিল ।
ঘাসগুলোর মধ্যে অনেক পিঁপড়ে ছিল বলে রাজি হয়নি ফেলি ।
ক্লাসে বসে পড়া করার মিথ্যা স্বপ্ন দেখে লাভ নেই ....
আজ যদি ঘাস পরিষ্কারের কাজটা পায় করবে । পিঁপড়ের কামড়ের জ্বালা কি ক্ষিদের থেকেও বেশি !!!!
বোনটাকে কাঁখে নিয়ে হলুদ বাড়িটার দিকে হাঁটতে থাকে ফেলি...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন