যে জন আছেন পদ্যে আর মদ্যে
(১)
(গলা খাঁকারি – ধরতাইও বলতে পারেন, মানে সন্ধ্যেবেলা মদের টেবিলে বসার আগে পাঁড় লোকজন যেমন গুছিয়েগাছিয়ে পাঞ্জাবিটা, ধুতির খুঁটটা সামলে বসতেন একসময়, তেমনই আর কি... আর কিছুক্ষণের মধ্যে গ্লাস আসিবেক, একটা আঙ্গুলে গ্লাসে ডুবিয়ে সামান্য মদ ছুঁইয়ে নিয়ে শুরু হবে গলায় ঢালা অনেকটা কমলকুমারের ইস্টাইল... উচ্ছুগ্গ করা আর কি)
‘আন্ধেরা কায়েম রহে্’... সেই কিলবিষ! ছোটোবেলার শক্তিমানের ভিলেন। তো, শক্তিমান হয়ে উঠতে হয় কাউকে না কাউকে, যাকে দেখে, যার চারপাশ মে গুল খিল্তে হ্যায় ইয়াহা... তেমনই তো, নাহ্, সেভাবে ভিলেন কেউ নেই, আবার আছেও। চল্লিশ, পঞ্চাশের দশকে যখন বাংলা সাহিত্যকে দেখে ভক্তিবাদী অনেকে হয়তো বলে উঠছেন, ‘পথিক, তুমি কি পথ হারাইয়াছো?’ আর তাদের সামনে জলপান করাতে আসছেন, আর সেই অবাক জলপানে তেষ্টা মিটে আর উঠছে কই! মানে ওই এন্তার সস্তা লেখার মধ্যে সেভাবে আলাদা করে দাগ কেটে উঠছেন না কেউ, ব্যতিক্রম জীবনবাবু, আর ঠাকুরমশাইয়ের অতি-দানবিক ব্যাপারস্যাপারের বাইরে এসে কিছু করে উঠতে পারছেন না, তখন জানা গেল, কিছুদিনের মধ্যেই বাংলা সাহিত্যের মেনস্ট্রিমের বাইশ গজে নেমে পড়তে চলেছেন সেকেণ্ড ডাউন শক্তি চট্টোপাধ্যায়। মানে সাধারণ ছাপোষা বাঙালী যার বছরে তিনবার করে শান্তিনিকেতনে গুরুদেবকে দেখে আসার সামর্থ্য নেই, বা চান না ততটাও, বা যার মধ্যে কিছুটা ব্যাডবয় ইমেজ রয়ে গেছে (অভিযোজন ইনকমপ্লিট) যা তৎকালীন লেখাপত্তর পড়ে হেজে উঠেছে আর তিনি একটা টোটাল আইকনের খোঁজে তাকিয়ে বসে আছেন পথপানে চেয়ে... শক্তি চাটুজ্জে তাকেই আর কিছুদিনের মধ্যে পাকড়াও করবেন। অনেকটা মন্ত্রমুগ্ধের মত ব্যাপার, অনেকটা ছেলেধরা টাইপের আর ওই কি যেন বলে না, হ্যামলিন, হ্যাম-লীন হয়ে যেতে শুরু করবে যার মধ্যে, সেই মানুষ রেডি হচ্ছেন।
ওপেনিংয়ের সমস্যা বলুন, বা সুবিধেই, হ্যাজ। তেমন ভাবেই মিডল অর্ডারেরও সমস্যা বলুন, আর সুবিধেই, সে’ও হ্যাজ। নতুন বলে যেমন কিছু বাউন্সার আসতে পারে আর তা থেকে ইনিংসকে পথ দেখানো কঠিন হয়ে পড়ে, তবে আবার এও বটে তখনও ফাস্ট বোলারের জড়তা কাটেনি, তেমন অভাবনীয় খেলার সামান্য কাঠিন্য দেখাতে পারলে তা অনেকাংশেই দর্শকের মন জিতে নিতে পারে (এক্ষেত্রে রবিবাবুর ব্যাপারটার সাথে কোনো সামঞ্জস্য না খুঁজতে যাওয়াই সমীচীন, তিনি ব্র্যাডম্যান। আপনি প্রাজ্ঞ হে পাঠক, জানি, সে ভুল আপনি করবেন না... আর এমন ভুলও করে উঠবেন না যে জড়তাময় বোলারকে আমি পাঠক বলে সামান্য এসেন্সও দিতে চেয়েছি... বেড়াল প্রথম রাতেই মেরে রাখা ভালো। পরে সে কি অলুক্ষুণে কাণ্ডই না ঘটাতে পারে তা তো নিউটনের গল্পে পড়েইছেন, ওই রিসার্চের কাগজপত্র পুড়েটুড়ে গিয়ে এক্সা।)
ক্রমশঃ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন