অনুভব
বর্ষার জল শার্শী বেয়ে বেয়ে নামছে তরতরিয়ে।আবছায়া কাঁচের জানালার দিকে অপলক দৃষ্টিতে দূরের রাস্তার দিকে চেয়ে রয়েছেন মিসেস শর্বরী মুখার্জী। আজকাল হলদেটে অতীতগুলো কেমন যেন টানে তাকে। দুই মেয়েকে বিয়ে দেবার পর যেটুকু সঞ্চয় ছিল তার সেটুকুর জোরেই বাকী জীবনটা কাটাবেন ভেবেছিলেন কিন্তু জীবন যে কত রকম ভাবে পরীক্ষা নেয় তার হিসেব কেউ কোনদিন দিতে পারেনি হয়তো আগামীতে পারবেও না।
স্বামীর মৃত্যুর পর একহাতে গ্রিলের কারখানাটাকে সামলানো, সংসারে দেওর, ননদ সকলের সঙ্গে যথাসম্ভব যোগাযোগ রক্ষা করা লোক লৌকিকতা এমন কি অসুস্থ সৎ শাশুড়ির দেখাশোনার ভারও তিনি সামলেছেন কড়া হাতে এবং মমতার সঙ্গে। তখনও তো কেউ কোন আঙ্গুল তুলতে পারেনি তার দিকে । সকলেই বৌদি, দিদি, শর্বরী করে করে মাথায় তুলে রাখতো। অথচ আজকাল... আজকাল কেউ আর তার খোঁজ নেয় না, নেয় শুধু সঞ্চিত অর্থের হিসেব নিকেশ আর খোঁচা দিয়ে দিয়ে মেয়েদের উস্কে দেয় তাদের সৎ মায়ের অস্তিত্বের কথা।
অনেকটা দেরী হয়ে গেলেও আজই সিদ্ধান্ত নিলেন মিসেস মুখার্জী সঞ্চিত সম্পত্তি ট্রাস্টি করে দেবেন তার তৈরি বৃদ্ধাশ্রমের জন্য।শেষ ঠিকানার নাম হবে তার 'বানপ্রস্থ'। সবাই জানুক অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই এ মিসেস মুখার্জী হেরে যাবেন না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন