পরিবর্তন(পঞ্চম পর্ব)
*******
প্রায় দু মাস হয়ে গেল পরি অনন্যার কাছে আছে। ওর মা বাবার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি, কোথাও কোনো মিসিং ডায়েরিও নেই। পরির ছবি খবরের কাগজে, টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হলেও কেউ দাবি জানাতে আসেনি।
আশ্চর্য, এইটুকু একটা বাচ্চা মেয়ের কেউ নেই ভাবলে অনন্যার অবাকই লাগে! অত রাত্রে ও একা যাচ্ছিলোই বা কোথায়? কোনো জামাকাপড় বা তেমন কিছু জিনিসও সঙ্গে ছিলোনা।
অনেক অনেক চেষ্টার পর ওর নাম বলেছিলো 'পরি', তবে অনন্যা ছাড়া আর কাউকেই ও যে বিশ্বাস করেনা, সেটা ওকে দেখলেই বোঝা যায়, আঁকড়ে থাকে অনন্যাকে।
সেদিন ট্রেন থেকে ওকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে গিয়ে কম ঝামেলা পোয়াতে হয়নি।
বৌদি কিছুতেই ওকে ঘরে ঢুকতে দেবেনা, অনেক অনুরোধ, উপরোধের পর বাইরের বারান্দায় ওকে থাকতে দিতে রাজি হয়েছিলো, ওখানে একটা চৌকি আছে, সেখানেই পরির তখনকার মতো শোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিলো।
অনন্যার খুব খারাপ লাগলেও কিছু করার ছিলোনা।
বৌদির নিজের মেয়ে থাকা সত্বেও পরিকে পরার জন্য একটাও জমা দিতে রাজি হয়নি, শেষে অনন্যা, আলমারি খুলে ঋকের পুরোনো জামা প্যান্ট বার করে পরিকে পরতে দিয়েছিলো।
পরদিন ওকে নিয়ে থানায় গিয়ে অবাক, দ্যাখে, ছোটবেলার পাড়ার বন্ধু শুভাশীষ ওখানকার থানার এস আই।
শুভাশীষকে ও সব খুলে বলেছিলো, এদিকে, পরি অনন্যাকে কিছুতেই ছাড়তে রাজি না হওয়ায়, অনন্যা শুভাশীষকে অনিরোধ করেছিলো, যতদিন পরির মা বাবার খবর না পাওয়া যায়, ততদিন যদি পরি অনন্যার কাছে থাকে, শুভাশীষ জানিয়েছিল, সেটা আইন বহির্ভুত কাজ হবে, অনাথ আশ্রমেই পাঠানো হয় এদের।
কিন্তু অনন্যার একান্ত অনুরোধে, ব্যক্তিগত দায়িত্বে শুভাশীষ পরিকে অনন্যার কাছে রাখার পারমিশন দেয়।
অনন্যা এখনো ওকে স্কুলে ভর্তি করেনি, কারণ পরির মা বাবার খবর পাওয়া গেলে তো পরিকে চলে যেতে হবে, দুরুদুরু বুকেঅনন্যা রোজ প্রতীক্ষা করে, কখন শুভাশীষ ফোন করে ওর বাড়ির সন্ধান দেবে!
মেয়েটার ওপর কেমন যেন মায়া পড়ে গেছে, ছাড়তে মন চায় না, কিন্তু পরের সন্তানকে আটকে রাখেই বা কি করে!
পরি প্রতিদিন ওর সাথে স্কুলে যায়, বড়দির পারমিশন নিয়েই অনন্যার সাথে জুনিয়র ক্লাস গুলোতেও যায়, অনেক কিছু শিখেও গেছে, এখন একটু করে গল্পও করে অনন্যার সাথে। অনন্যার ইচ্ছে থাকলেও ওকে স্কুলে ভর্তি করতে পারেনা। মা বাবার নাম কি দেবে? পরি মা বাবার ভালো নাম বলতে পারেনি।
তাও যেটুকু কথা বলে,সবকিছু গুছিয়ে না বলতে পারলেও মোটামুটি একটা ধারণা অনন্যা নিজের মতো করে তৈরি করে নিয়েছে।
পরির মা বাবা দুজনেই আছেন, এমনকি ওর একটা ছোট্ট ভাইও আছে। ভাইটাকে ও বড্ড ভালোবাসে!
----
রাত প্রায় এগারোটা বাজে।খেয়েদেয়ে পরি ঘুমিয়ে পড়েছে, অনন্যা ওর মুখের দিকে চেয়ে মনটা মায়ায় ভরে গেল।কে জানে, ওর বাবা মাকে আদৌ পাওয়া যাবে কি না...মেয়েটাকে ছাড়তে মিন চায়না, এই কদিনেই বড্ড মায়ায় জড়িয়েছে!
নিজের ছেলেটাকে তো মনের মত করে বড় করা হলোনা, একে যদি কাছে রাখতে পারতো!
অনন্যা অনেক চেষ্টার পর ঋকের সাথে যোগাযোগ করতে পেরেছে।
ছেলে এখন মাঝেমাঝেই মায়ের সাথে মোবাইলে কথা বলে।
এইমাত্র ঋকের সাথে কথা বলে স্কুলের খাতাগুলো নিয়ে বসলো।মগ্ন হয়ে খাতা দেখতে দেখতেই মোবাইলটা বেজে উঠলো।
তাকিয়ে দেখে, ওর এস আই বন্ধু শুভাশীষ ফোন করছে....
বুকটা ধক করে উঠলো, তবে কি পরির মা বাবার সন্ধান পাওয়া গেছে? পরি কি তবে চলে যাবে?
মনে একরাশ প্রশ্ন নিয়ে ও বললো, "হ্যালো, বল কি খবর..."
প্রায় দু মাস হয়ে গেল পরি অনন্যার কাছে আছে। ওর মা বাবার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি, কোথাও কোনো মিসিং ডায়েরিও নেই। পরির ছবি খবরের কাগজে, টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হলেও কেউ দাবি জানাতে আসেনি।
আশ্চর্য, এইটুকু একটা বাচ্চা মেয়ের কেউ নেই ভাবলে অনন্যার অবাকই লাগে! অত রাত্রে ও একা যাচ্ছিলোই বা কোথায়? কোনো জামাকাপড় বা তেমন কিছু জিনিসও সঙ্গে ছিলোনা।
অনেক অনেক চেষ্টার পর ওর নাম বলেছিলো 'পরি', তবে অনন্যা ছাড়া আর কাউকেই ও যে বিশ্বাস করেনা, সেটা ওকে দেখলেই বোঝা যায়, আঁকড়ে থাকে অনন্যাকে।
সেদিন ট্রেন থেকে ওকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে গিয়ে কম ঝামেলা পোয়াতে হয়নি।
বৌদি কিছুতেই ওকে ঘরে ঢুকতে দেবেনা, অনেক অনুরোধ, উপরোধের পর বাইরের বারান্দায় ওকে থাকতে দিতে রাজি হয়েছিলো, ওখানে একটা চৌকি আছে, সেখানেই পরির তখনকার মতো শোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিলো।
অনন্যার খুব খারাপ লাগলেও কিছু করার ছিলোনা।
বৌদির নিজের মেয়ে থাকা সত্বেও পরিকে পরার জন্য একটাও জমা দিতে রাজি হয়নি, শেষে অনন্যা, আলমারি খুলে ঋকের পুরোনো জামা প্যান্ট বার করে পরিকে পরতে দিয়েছিলো।
পরদিন ওকে নিয়ে থানায় গিয়ে অবাক, দ্যাখে, ছোটবেলার পাড়ার বন্ধু শুভাশীষ ওখানকার থানার এস আই।
শুভাশীষকে ও সব খুলে বলেছিলো, এদিকে, পরি অনন্যাকে কিছুতেই ছাড়তে রাজি না হওয়ায়, অনন্যা শুভাশীষকে অনিরোধ করেছিলো, যতদিন পরির মা বাবার খবর না পাওয়া যায়, ততদিন যদি পরি অনন্যার কাছে থাকে, শুভাশীষ জানিয়েছিল, সেটা আইন বহির্ভুত কাজ হবে, অনাথ আশ্রমেই পাঠানো হয় এদের।
কিন্তু অনন্যার একান্ত অনুরোধে, ব্যক্তিগত দায়িত্বে শুভাশীষ পরিকে অনন্যার কাছে রাখার পারমিশন দেয়।
অনন্যা এখনো ওকে স্কুলে ভর্তি করেনি, কারণ পরির মা বাবার খবর পাওয়া গেলে তো পরিকে চলে যেতে হবে, দুরুদুরু বুকেঅনন্যা রোজ প্রতীক্ষা করে, কখন শুভাশীষ ফোন করে ওর বাড়ির সন্ধান দেবে!
মেয়েটার ওপর কেমন যেন মায়া পড়ে গেছে, ছাড়তে মন চায় না, কিন্তু পরের সন্তানকে আটকে রাখেই বা কি করে!
পরি প্রতিদিন ওর সাথে স্কুলে যায়, বড়দির পারমিশন নিয়েই অনন্যার সাথে জুনিয়র ক্লাস গুলোতেও যায়, অনেক কিছু শিখেও গেছে, এখন একটু করে গল্পও করে অনন্যার সাথে। অনন্যার ইচ্ছে থাকলেও ওকে স্কুলে ভর্তি করতে পারেনা। মা বাবার নাম কি দেবে? পরি মা বাবার ভালো নাম বলতে পারেনি।
তাও যেটুকু কথা বলে,সবকিছু গুছিয়ে না বলতে পারলেও মোটামুটি একটা ধারণা অনন্যা নিজের মতো করে তৈরি করে নিয়েছে।
পরির মা বাবা দুজনেই আছেন, এমনকি ওর একটা ছোট্ট ভাইও আছে। ভাইটাকে ও বড্ড ভালোবাসে!
----
রাত প্রায় এগারোটা বাজে।খেয়েদেয়ে পরি ঘুমিয়ে পড়েছে, অনন্যা ওর মুখের দিকে চেয়ে মনটা মায়ায় ভরে গেল।কে জানে, ওর বাবা মাকে আদৌ পাওয়া যাবে কি না...মেয়েটাকে ছাড়তে মিন চায়না, এই কদিনেই বড্ড মায়ায় জড়িয়েছে!
নিজের ছেলেটাকে তো মনের মত করে বড় করা হলোনা, একে যদি কাছে রাখতে পারতো!
অনন্যা অনেক চেষ্টার পর ঋকের সাথে যোগাযোগ করতে পেরেছে।
ছেলে এখন মাঝেমাঝেই মায়ের সাথে মোবাইলে কথা বলে।
এইমাত্র ঋকের সাথে কথা বলে স্কুলের খাতাগুলো নিয়ে বসলো।মগ্ন হয়ে খাতা দেখতে দেখতেই মোবাইলটা বেজে উঠলো।
তাকিয়ে দেখে, ওর এস আই বন্ধু শুভাশীষ ফোন করছে....
বুকটা ধক করে উঠলো, তবে কি পরির মা বাবার সন্ধান পাওয়া গেছে? পরি কি তবে চলে যাবে?
মনে একরাশ প্রশ্ন নিয়ে ও বললো, "হ্যালো, বল কি খবর..."
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন