মুহূর্তরা
--------_------
©
বাসের জানালা ধারে বসে সামান্য টিফিন টা খেতে খেতে, একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিল মাঝ বয়েসী অদ্রিজা। মনে মনে ভাবে, কত বছর এই ভাবে, শুধু দুজনে দুজনার মতো করে কোথাও যায় না! আজ তার অনেক দিনের সাধ পূরণ হলো।
আজকাল, ফেবুর বন্ধুরা মালয়েশিয়া, ক্যালিফোর্নিয়া , ব্যঙ্কক, পাটায়ায় তোলা স্বামীর সাথে সব অন্তরঙ্গ মুহূর্তদের ওপেন পোস্ট করে...
অদ্রিজার খুব ইচ্ছে করে, একটা এমন ছবি পোস্ট করে, পরক্ষণেই মনে হয়, এমন ভাবে ছবি সে দেবেইবা কি করে! এই পঁচিশ বছরের বিবাহিত সময়ে এমন অন্তরঙ্গ কটা মুহূর্তই বা তারা কাটিয়েছে তেমন ভাবে!
সংসার, ছেলে ,মেয়ে, অসুস্থ শ্বশুর, শাশুড়ি এই নিয়েই কেটে গেছে অদ্রিজার আর অনুপের সংসার।
তবু আজ, এত বছর পর, সামান্য একটা শ্রুতিনাটকে পাঠ করার পর মহাজাতি থেকে বাড়ি ফেরার পথে অনুপের সহচার্য ভীষণ ভাবে দামী মনে হচ্ছিল তার। আপাত উদাসীন মানুষটার সারা শরীরে ঘামের গন্ধের সাথে, তার মাথার জুঁই ফুলের গন্ধ মিলে মিশে একটা সুন্দর আবেশের সৃষ্টি করেছিল। খুব ইচ্ছে করছিল ব্যাগের থেকে মোবাইল টা বের করে এই মুহূর্তটাকে মুঠোবন্দী করে সে, কিন্তু পরক্ষণেই লজ্জা পায়...
কি ভাববে অনুপ, সে আজও ছেলেমানুষই রয়ে গেলো!
ভীষণ ইচ্ছে করছিল অনুপ কে বলে দিতে, অন্তরের কথা। যার সাথে আজ বারো বছর সম্পর্ক রেখে চলেছে সে। মননে শুধু নয় শরীরেও...
কি বলতে পারে কিম্বা কেমন আচরণই বা করতে পারে অনুপ এই পরিপ্রেক্ষিতে! চিন্তা করেই গাল বেয়ে মুক্তদানা নামে অদ্রিজার...
নাহ, আর সে ভাববে না! এইভাবেই চলুক, কিছুটা স্বগক্তি করেই কানে হেড ফোন লাগাতেই পছন্দের রেডিও স্টেশন মির্চীতে বেজে ওঠে...
"মন রাখা আছে কোন ঈশান কোনে বিষন্নতায়, চোখ কাটাকুটি হোক সহজ কথার সময় কোথায়
এই নরম অসুখ হাওয়ায় হাওয়ায় সেরে যাক,
ফের সন্ধ্যে নামুক ব্যথা তোমার সেরে যাক
চুপ মুহুর্ত চুপ, ঠোঁটের তুরুপ এই তোমাকে ছুঁয়ে দিলাম..."
|
পৃষ্ঠাসমূহ
▼
পৃষ্ঠাসমূহ
▼
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন