পৃষ্ঠাসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

বৃহস্পতিবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৯

দীপঙ্কর বেরা


#বুধবারের_প্রবন্ধ_বই



বই পড়া একটা অভ্যাস এই অভ্যাস ধরে রাখা খুব প্রয়োজন আমরা অনেকেই সকালের খবরের কাগজ ছাড়া আর কিছুই পড়ি না ছাড়া কেউ কেউ অফিসের চিঠি চাপাটি প্রয়োজনীয় নিজস্ব বিষয় ছাড়া আর কিছু পড়েই না ডিগ্রী অর্জনের জন্য যা করা পড়া হয়েছে তাকেই ভাঙিয়ে অনেকেই অনেক বিজ্ঞ পরবর্তীতে আর সে রকম বই পড়াই হয় না অনেকের
সেই ফ্যামিলির শিশু বা পড়ুয়াদের কাছ থেকে আমরাই আবার অনেক বেশি পড়ার আশা করে থাকি   ক্লাসের বাইরের কিছু না পড়লে কি ভাবে জীবনকে জানবে বড়রা যেমন প্রয়োজনের অতিরিক্ত পড়ে না কেবল বই জমা করে রাখে তেমনি শিশুরাও হারিয়ে ফেলছে পড়ার প্রতি আগ্রহ তারা তো দেখে শিখছে
অনেক মা বাবা ছেলেমেয়েদের স্কুলে দিয়ে বাইরে অপেক্ষা করছে আর নিজেদের মধ্যে বেশ গুলতানি মারছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রত্যেকেই কেবল নিজেদের বা পরের বা দেশের দশের খারাপ দিকগুলো তুলে ধরে আর তাই নিয়ে নানান হাসি মস্করা করে সেখানে যদি দু একটা বাচ্চা থেকেও যায় অনেকে বলে কিছু বুঝবে না
পড়ুয়ারা যদি মাকে বাবাকে কোনদিন বই টেনে নিয়ে পড়তে না দেখে , সে যদি দেখে টিভি কম্পিউটারে , মোবাইল , ট্যাব নাই নাই জীবনের চর্চায় বড়রা ব্যস্ত তো সে কেন সব সময় পড়া আর বই নিয়ে থাকবে সে তার জগতে আরো কি এন্টারটেন্ট আছে তাই খুঁজবে
রান্না অফিস দৌড়াদৌড়ির মাঝে পড়ার সময় নেই বলা যাবে না অবসরটাই যদি মল , টিভি বেড়ান , আড্ডা , রিলাক্স হতে পারে তার মাঝে পড়াটাকে ধরে রাখা যেতেই পারে অল্প অল্প করে করা যায় শুধু ইচ্ছেটাকে তৈরি করা কেন না এই ইচ্ছে আগামী তৈরি করবে না হলে এখন আর কেউ তেমন বই পড়তে চায় না বলে খুব রব তুলে লাভ কি ? এর জন্য বড়রা কতটা দায়ী তাও ভেবে দেখা দরকার
বাচ্চারাও ক্লাসের বই ছাড়া পড়তেই চায় না তারা কেবল ইলেক্ট্রনিক্স মিড়িয়াতে খুব বেশি আকৃষ্ট আমরাও কম কিসে ?
কিছু জিজ্ঞেস করলেই দাঁড়া নেট খুলে দেখে বলছি হাতের কাছে বই খুলে অক্ষর গিলে গিলিয়ে শিশুটির মস্তিষ্কের বিকাশে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেত তা না করে তার সামনে একটি খুঁজতে হাজার প্রলোভনের দরজা খুলে দিলাম তাকে তা টানবেই যতই বাধা দিই আজ নয় কাল সে তাতে প্রলুব্ধ হবেই আর দোষ পড়বেকেউ বই পড়তে চায় না তা বললে হবে না
বই নিয়ে বসে পড়াতে হবে বলে অনেকেই টিউশন ব্যবস্থা করছে যাতে সেই সময় বড়রা অন্য কাজ করতে পারবে আর বড়রা পেয়ে যায় বই পড়া থেকে রেহাই সেই ভাবনাটা কিন্তু ছড়িয়ে যাচ্ছে আগামীর মধ্যে
বইমেলাতে গিয়েও অনেকেই কেবল ছেলেমেয়ে কি বই কিনবে অথবা ভবিষ্যতে সে কি কি পড়তে পারে তাকে ভেবেই বই কেনা হয় বাবা মা বা বড়রা নিজের জন্য বই কিনছে এমনটা দেখা যায় তা খুব কম
এই ব্যাপারটা যারা লেখালেখি করেন তাদের মধ্যেও আছে বই কিনে পড়ছে বা পড়ে এমন উঠতি লেখকদের মধ্যেও ভাটার টান আছে নিজের লেখা বই এবং চেনা পরিধিতেই যাতায়াত করে নেট থেকে অনেকে পড়ে তাতে দেখা গেছে অর্ধেক বা মোটামুটি পড়েই সারা আর দোষ হয়ে যায় কেউ বই পড়তে চায় না
অথচ যেভাবেই হোক অক্ষর গিলতে পারলে সব না হলেও অনেক জানা যায় আর সমস্যার সমাধান হয়ে যায় টেনশন ট্রেস ফার্স্টটেশন মাথার যন্ত্রনা চোখের আরাম এবং মানসিক মানবিক অবস্থার উন্নতি , কিছু বলা বা কিছু বিষয়কে মানবিক দিক দিয়ে ভাবা বই পড়ার মধ্য থেকে পাওয়া যেতে পারে
বইয়ের অক্ষর গিলতে যে গভীর মনোযোগ দিতে হয় তা জীবনের অনেক ক্ষেত্রে ফলপ্রসু হতে পারে আঘাত যন্ত্রণা কষ্ট রোগ শোক দুঃখ ব্যথা কান্না ব্যর্থ প্রেম ইত্যাদিকে সরাসরি হয়তো উপশম দিতে পারবে না কিন্তু পরোক্ষে এর সদর্থ ভূমিকা অনস্বীকার্য
তাই সারাদিনে সকালের খবরের কাগজ বাদ দিয়ে যে কোন বই এবং বইয়ের অক্ষর পনের বিশ মিনিট আজ থেকেই পড়া শুরু করা যেতেই পারে   রোজ অভ্যাস আমরা যদি গড়ে তুলি তা আমাদের ভবিষ্যতের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে
বই নিজেই পাবে প্রাণ সেই প্রাণ অনেক প্রাণে সতেজতা এনে দিতে পারে এই দশ বিশটা অক্ষর কিন্তু পুরোপুরি আপনার জন্য হৃদয়ে জমা হয়ে আপনাকে এক অনিন্দ্য আলোয় ভাসিয়ে নিয়ে যাবে যা অমূল্য
তাই আর নয় এখুনি পড়ে ফেলি এক দু লাইনহাতের কাছের বই টেনে নিয়ে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন