ব্যাখ্যা
______________
মৃত্যুকে দেখতে দেখতে রাস্তা ফুরিয়ে আসছে আমাদের
হলুদ পাখিদের ঠোঁটে ঝুলে আছে বিকেলের রোদ
চৈতন্য ঘেরা বাড়িতে কারা বসবাস করে?
রেলিং এর ফাঁকে ফাঁকে দেখা যায় বোধ
রাস্তায় ধর্ষণ চিৎকার করে
পুলিশ ছুটে যায়
মর্গের উদ্বোধনে নতুন যুবতী
চকচকে অস্ত্রগুলি হাসে
মানুষ যদিও মানুষের ব্যাখ্যা করে
আর মৃত্যুরও ব্যাখ্যা হয়
ব্যাখ্যা শুনতে শুনতে বেলা পড়ে আসে
হলুদ পাখিরা উড়ে যায় কোন্ অন্ধকার বনে!
🐦
আমার মৃতদেহ
_____________________________
ঝাঁক ঝাঁক পিঁপড়েরা আমার রক্তমাংস খুঁটে নিয়ে যাচ্ছে
আমি বাধা দিচ্ছি না
আমার তর্জনী আর কলম ধরতে পারছে না
আমার বোধের শব্দ ও অক্ষরগুলি ঝরে পড়ছে
কে লিখবে তাদের?
সময়ের কবরের নিচে শুয়ে আছি
কে খুঁড়বে সময়?
উপর দিয়ে সাপ চলে যাচ্ছে
বিস্ফোরক বোঝাই গাড়িও
ন্যাংটো মানুষের দল
আর রাতের সঙ্গম
আমার পাথরচোখ দেখতে দেখতে অন্ধ হয়ে যাচ্ছে
🐦
নিজের ছায়ায়
এখনো চলার পথ কত বাকি আছে?
নিবেদন ফুরিয়ে গেছে
এখন একাকী নিজের ছায়ায় নিজে
স্মৃতির আমলকি গাছের বাতাসে
জিরিয়ে নিতে থাকি
দূরের শাদা ডানা হাঁস উড়ে গেলে
আমার 'দেখা' ক্রিয়াটিও শূন্যে দোল খায়
কোথাও ঘর নেই যদিও থাকার জায়গা আছে
যদিও চায়ের কাপে এখনো উষ্ণতা
এখনো গ্রামবাংলায় পৌষ মাস আসে
পিতৃ-পুরুষের লন্ঠনটি এখনো দেওয়ালে ঝোলে
কেউ আর জ্বালায় না ওকে
মৃত বাউলের মতো সে শুধু অতীত জ্বরে জ্বলে
ভাঙা আয়নার কাছে দাঁড়াই
ইচ্ছে করে না নিজেকে দেখি
আয়ুরেখা দিগন্তের সীমানায় কাঁপে
ইচ্ছে করে না আর কুয়াশাকে বলি সরে যেতে!
🐦
যদি ছুঁতে পারো
আমি দৈর্ঘে নেই ,প্রস্থে নেই, শূন্য অবতলে কোথাও নেই
অথচ আমার ভাষা ব্যাপ্ত চরাচরে শব্দ ও স্বপ্নের তালিকায়
বাঁচা ও মরার নির্বাহী ক্রিয়ায় ছলকে ওঠে গন্ধে ধূপে
তুমি এসে ছুঁয়ে যাও যদি ছুঁতে পারো
যদি এ নিঃসঙ্গতার বেড়া থেকে আমাকে বের করে দাও!
ইহজাগতিক পথে জয়ঘোষণার কাছে কারা কারা গেল ?
আমি শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে যাব ওই তো জবা গাছ,
কত জবা ফুল ফুটে আছে সবাই ডাকছে আমাকে
তুমি ছোঁও , একটিবার অন্তত ছুঁয়ে যাও!
তৈমুর খান
ভালো লাগলো সবকটি।
উত্তরমুছুন