পৃষ্ঠাসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০

অর্পিতা বোস






আত্মপক্ষ 

____________

                           

--মা,  নীলাদ্রির বয়স বত্রিশ আর আপনার ত্রিশ বছর হলো বিয়ে হয়েছে!  কি বলছেন!
  পুত্রবধু কোয়েলের কথায় চমক ভাঙে রঞ্জিতার। অসতর্কভাবে একি বলে ফেললেন!  এত বছর যে কারণে সবকিছু  মনের মাঝে লুকিয়ে রেখে, সবার থেকে দূরত্ব  রেখে এখানে  এলেন। আজ হঠাৎ  কি করলেন! আমতা  আমতা করেন । মিথ্যে কথাটাও কি বলবেন বুঝে পাননা। এতবছর মিথ্যে সম্পর্ক সবাইকে বোঝানোর  চেষ্টা করলেও ছেলের বউকে মিথ্যে বলতে পারলেন না। চোখ না তুলেও বুঝতে পারেন কোয়েল তার দিকে সন্দেহের চোখে  তাকিয়ে  আছে। 
  - মনে হয়  ফোন  বাজছে, আমি  ঘরে যাচ্ছি বৌমা। তুমি বাসনগুলো তুলে শুয়ে পড়ো।
 বলেই রান্নাঘর ছাড়েন।  খাটে বসে ভাবেন  এতটা অসতর্ক হলেন কি করে!  নীলাদ্রী সবটা জানলে যদি...
  নাহ্!  বুকের  কাছটা অজানা  আশঙ্কায় কেঁপে  ওঠে। শরীরটা কেমন করে ওঠে, ফ‍্যানটা ফুলস্পিডে থাকলেও খুব ঘাম  হতে থাকে। কাঁপা হাতে মোবাইলটা নিতে  গিয়ে  ভাবেন, এতদিন ধরে এতকষ্ট সবটা বোধহয়  শেষ  হয়ে গেল নিজের  একটা ভুলে....
     চোখে  ঘন অন্ধকার নেমে আসে রঞ্জিতার---

 __________________________________
                          **
     লকডাউনে স্কুল ছুটি থাকায় দুপুরে একটা গল্পের বই নিয়ে শুয়েছিল কোয়েল।মন বসছিল না বইতে।বারবার শাশুড়িমার আজকের  কথা আর ব‍্যবহারটা মনে পড়ছিল।
 ছ'মাস হলো বিয়ে হয়ে  এসেছে এবাড়িতে। এমন ছোট ছিমছাম পরিবারে  নীলাদ্রীর ভালোবাসায় কোয়েলের সুখী দাম্পত্য জীবন শুরু হয়।চারজনের এই পরিবারে নীলাদ্রীর পরেই শাশুড়িমা  বড়ো আপন করে নিয়েছেন  কোয়েলকে। 
   চুপচাপ থাকা এই  মানুষটাকে কোয়েলের অদ্ভুত লাগে।কাজের লোক  থাকা সত্ত্বেও  সকাল  থেকে  রাত পর্যন্ত  সবসময়  বাড়িতে  টুকটাক  কাজ করতেই  থাকেন। কোয়েল, নীলাদ্রী আর শ্বশুরমশাই নীলাঞ্জনবাবুর যেন কোনো  অসুবিধা না হয়  সেদিকে সবসময়  সজাগ দৃষ্টি  শাশুড়িমার।তবে নীলাদ্রীকে নিয়ে যেন একটু বাড়াবাড়ি করেন মনে হয়  কখনও। বাচ্চা ছেলের মতো আগলে রাখার চেষ্টা করেন। অবাক লাগে মাঝে মাঝেই। 
  তবে  নিজের থেকে কখনও কোনো বিষয়ে কৌতূহল  দেখাননা অথবা কথাও বলেননা। কিন্তু সবাইকে এক অদৃশ্য ভালোবাসার বাঁধনে বাঁধার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। কিন্তু  শ্বশুরমশাইয়ের সাথে কোথাও  যেন অনেকটা দূরত্ব  আছে বলে কখনও মনে হয়  কোয়েলের। দুজনের দুই ঘরে বসবাস দেখে  অবাক  হয়েছিল। কিন্তু   শ্বশুরমশাইয়ের রাতজেগে বইপড়ার অভ‍্যাসে ঘুমের  ব‍্যাঘাত হয়  শাশুড়িমায়ের তাই আলাদা ব‍্যবস্থা। এই যুক্তিকে মেনে নিয়েছিল। আসলে এত ভাবনার জন‍্য বেশি সময়ও ছিল না এতদিন। সকালে একটু দেরি করেই ঘুম  থেকে  ওঠে নবদম্পতি। তারপর  স্কুলে যাওয়ার তাড়া থাকে। নীলাদ্রী অফিস যাওয়ার পথে তাকে নামিয়ে দেয়।
  এই লকডাউনে কাজের  লোক আসেনি  তাই  কোয়েল হাতে হাতে কিছু সাহায্য করে বটে কিন্তু  শাশুড়িমা নিজেই  যতটা পারেন করেন। এমনিতে চুপচাপ থাকা শাশুড়িমায়ের সাথে এই লকডাউনে কোয়েলের একটা সখ্যতা গড়ে ওঠে। যদিও  উনি নিজের  সম্পর্কে  কিছু  বলতেই  চাননা। কিন্তু কোয়েলের জোড়াজুড়িতে কখনও  কিছু কিছু কথা বলেন। এমন করেই আজ কথার মাঝে বলেন যে এই চব্বিশে আষাঢ় তাদের ত্রিশ বছরের বিবাহবার্ষিকী। অবাক কোয়েল বলে ফেলে,
--মা,  নীলাদ্রির বয়স বত্রিশ আর আপনার ত্রিশ বছর হলো বিয়ে হয়েছে!  কি বলছেন!         
   অবাক হয়ে দেখে শাশুড়িমায়ের মুখটা কেমন ফ‍্যাকাশে হয়ে গেছে। ফোনের  আছিলায় ঘরে চলে যান। হঠাৎ করে কেন এমন  করলেন মা?- এমন ভাবনার মাঝেই একটা ভারি কিছু পড়ার আওয়াজ আসে। দৌড়ে যায়  শব্দের  উৎসের দিকে---
____________________________________
                      ***
    নীলাঞ্জন বসে আছেন ভিজিটার্স লাউঞ্জে। রঞ্জিতার জন্য  খুব চিন্তা হচ্ছে। ম তার সংসারটাকে আগলে রেখেছেন এতবছর। অথচ স্ত্রীর অধিকার কখনও দাবী করেননি। কথা রেখেছেন বিয়ের পর থেকে।অবশ‍্য কথা রেখেছেন দুজনেই।   শর্তসাপেক্ষে করা এই  তিরিশ বছরের  বৈবাহিক  সম্পর্ক সত্যিই  অন‍্যরকম। রঞ্জিতা না থাকলে নিজের চাকরি বাঁচিয়ে  এভাবে নীলাদ্রীকে মানুষ করতে পারতেন কিনা খুব  সন্দেহ জাগে। রঞ্জিতাকে তিনি  সম্মান করেন তার কর্তব্য, নিষ্ঠা আর অধিকারের সীমারেখার মাত্রা  বজায় রাখার জন্য । কিন্তু নীলাদ্রীর কাছে তিনি ও রঞ্জিতা এক বড়ো  সত‍্য গোপন করেছেন। আজ  সবটা জানার পরে যদি ....
 এমন দোলাচলের মাঝেই  কাঁধে একটা চেনা স্পর্শে পিছনে ফিরে দেখেন নীলাদ্রী আর কোয়েল। দুজনের  চোখে-মুখেই অনেক  প্রশ্ন। 
আজ সব প্রশ্নের উত্তর  দিতে হবে ,জানেন নীলাঞ্জন। দুজনকে পাশে বসিয়ে  ফেরেন পুরোনো দিনে।

 বড়লোকের  একমাত্র  ছেলে নীলাঞ্জন  আর গ্রাম‍্য সরলতামাখা সুজাতার বিয়ে হয়। সেই সুখের সংসারে এল তাদের  ভালোবাসার সন্তান  নীলাদ্রী। তারপর  হঠাৎ ঝড়ের  মতো সব বদলে গেল যেন। সেবার নীলাঞ্জন অফিসের কাজে ট‍্যুরে গেলে দেড়বছরের ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন  সুজাতা । সেখানেই তিনদিনের জ্বরে হঠাৎ ..
   একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেন নীলাঞ্জন।সুজাতার চলে যাওয়াটা তখনও  মেনে নিতে পারেননি, আজও পারেননা। সেইকথাটাই  বিয়ের  আগে স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন রঞ্জিতাকে। অবশ্য তিনিও জানতেন রঞ্জিতার কোনো মতামতের মূল্য দেওয়ার মতো অবস্থা ছিলনা। 
       সুজাতার একমাত্র ছোটবোন রঞ্জিতা   কলেজ থেকে এক বৃষ্টির সন্ধ্যায় ফিরছিলেন। কে বা কারা তাকে ঘিরে ধরে আর ধর্ষণ করে আজ পর্যন্ত  কাউকে বলেননি। স্টেশনের পাশে তার ক্ষতবিক্ষত অচৈতন্য  দেহ উদ্ধার করে চিকিৎসা চললেও  দোষীদের সনাক্ত করতে  অদ্ভূতভাবে নিরুত্তর  থেকে গেছেন। 
   গ্রামে ধর্ষিতা মেয়েকে নিয়ে বসবাস করা দায় হয়ে  উঠেছিলে। একদিন রঞ্জিতার  সাথে  বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে জোড়হাতে এসেছিলেন  শ্বশুর- শাশুড়ি।অস্বীকার করতে বাধা নেই নীলাঞ্জনও নিজের স্বার্থ  দেখেছিলেন। অত ছোট্ট  ছেলেকে সামলে অফিসের কাজ করতে  নাজেহাল  হচ্ছিলেন।
 শর্ত  রেখেছিলেন নিজের  স্বার্থেই -  বিয়ের পরে রঞ্জিতা শুধু  নীলাদ্রীর মা হয়েই থাকবেন। সুজাতার জায়গা রঞ্জিতাকে দিতে  অপারগ নীলাঞ্জন। স্পষ্ট সেকথা জানিয়েছিলেন। মেনে নিয়েছিলেন রঞ্জিতা।   শুধু নীলাদ্রীর আপন মাতৃত্বের  অধিকার চেয়েছিলেন । উভয় পক্ষের  সম্মতিতে  গোপনে বিয়েটা হয়ে যায় রেজিস্ট্রি করে। বিয়ের পর থেকেই  নীলাদ্রীর ঘরেই আশ্রয়  নিয়েছিলেন রঞ্জিতা।আর  সুজাতার ছবিও সরিয়ে  রেখেছিলেন  নীলাঞ্জন। এমন করে কিছুদিন কাটল। সুজাতাদের গ্রামের জমি বাড়ি বিক্রি করে প্রথমে  শ্বশুর- শাশুড়িকে নিজের  বাড়িতে  এনে তোলেন। তারপর  অফিসে  বদলি নিয়ে বহরমপুরের  পাট চুকিয়ে এখানে  নতুন  জীবন  শুরু করেন। 
   তবে রঞ্জিতা সংসার গুছিয়ে  নিলেও কখনও স্ত্রীর  অধিকার  দাবী করতে আসেননি। নীলাদ্রীর মা হিসেবেই থেকেছেন। রঞ্জিতার বাবা-মা একে একে গত হলে সেই  ঘরেই রঞ্জিতা নিজের ঠাঁই  করেছেন। নীলাঞ্জনও  লাইব্রেরী-কাম শোবার  ঘরেই  রাত কাটিয়ে দেন  সুজাতার স্মৃতির সাথে। একছাদের তলায়  বসবাস করলেও  নীলাঞ্জন আর রঞ্জিতা শুধু  কর্তব্য পালন করেছেন  একে অপরের প্রতি। কিন্তু  নীলাদ্রীকে কেন্দ্র  করেই রঞ্জিতার জীবনের  নতুন  অধ‍্যায় শুরু  হয়েছিল।
আর তাই আজ অজান্তেই  সত্যি  কথা বেরিয়ে ভয় পেয়েছেন রঞ্জিতা।সেই মানসিক চাপে অসুস্থ হলেন। 
 
 এতবড়ো সত‍্যিটা জেনে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে নীলাদ্রী। যাকে এতদিন  মা বলে   জেনে এসেছে তিনি আসলেই মাসি! সুজাতার ছবিটা দেখতে চায়। মানিব‍্যাগ থেকে  সুজাতার  একটা ছবি দেখান নীলাঞ্জন। দুচোখ  ভিজে যায়  অজান্তেই। চেয়ার ছেড়ে  এগিয়ে যায়  নীলাদ্রী। 


 জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকা নীলাদ্রীর মনের ভেতরে ঝড় চলছে। এতবড়ো সত্যিটা এতবছর সে জানলোই না। নাড়ির  সাথে যার সম্পর্ক সেই গর্ভধারিনীকে আজ প্রথম  দেখল!তাও ছবিতে অথচ সেই ছোট থেকে  যাকে মা বলে জেনেছে, জীবনের প্রতিটা ওঠাপড়ায় পাশে যে ছিল মাতৃরূপে তিনি....
   চোখটা বন্ধ  করে সুজাতাকে  মাতৃরূপে অনুভব করতে চাইছে। কিন্তু কিছুতেই রঞ্জিতার  মাতৃত্বের সত‍্যকে অস্বীকার করতে পারছেনা । কোয়েলের ডাকে চোখ মেলে। আপন মনে বলে ওঠে,
--' মা ' শব্দটা আজ আমার কাছে বড়ো  অদ্ভুত লাগছে। ছোটবেলাতেই থেকে  যে মানুষটা আমার  ঘুম থেকে ওঠা থেকে আমার  ঘুমিয়ে পড়া, আমার  পড়াশোনা শরীর খারাপ  সব কিছুতে আমার  সাথে সাথে জড়িয়ে আছেন  তিনি  আমার  মা নন!  আর আমার আসল মা... 
  একটা দীর্ঘশ্বাস  ফেলে  আবার  বলতে শুরু করে,
-- জানো  চোখ বন্ধ করে নিজের মায়ের ছবিটা যতবার  দেখতে চাইছি ততবার মাকে মানে মাসিকে  ...

 কথাটা শেষ করার আগে কোয়েল মৃদু হেসে হাতে ভরসার হাত রেখে বলে ওঠে, 
-- হ‍্যাঁ, নীলাদ্রী,তোমার  মাকেই দেখছ। মাতৃত্ব যখন যখন  সব সম্পর্কের উর্ধ্বে চলে যায়  তখন  এমন হয়। মা অথবা মাসি যে নামেই ডাকোনা কেন, তোমার  চেতনে অথবা অবচেতনে একজনকেই দেখবে। তোমার স্বত্ত্বায় মাতৃত্বের একটাই মূর্তি। ভালোবাসা আর স্নেহ দিয়ে গড়া এমন সম্পর্ককে  অস্বীকার করার ক্ষমতা  কারো নেই। 
-- কিন্তু  এতবড়ো মিথ্যে!
-- আমি  সত্যি-মিথ‍্যে এভাবে বুঝিনা নীলাদ্রী। আমি অনুভবে সম্পর্কের বাঁধন চিনি। ওনার জীবনে বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন তুমি। হ‍্যাঁ, কখনও কখনও  ওনার  তোমার প্রতি পজেসিভনেস দেখে আমিও  অবাক  হয়েছি। তবে একথা স্বীকার করি তোমার খুটিনাটি সব বিষয়ে ওনার যা নজর, ততটা আমার গর্ভধারিনীর নেই। এটাই ভালোবাসা  এটাই সত্য।যিনি তোমাকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে অসুস্থ  হয়ে  পড়েছেন।তাকে ভুল বুঝোনা প্লিজ। চলো ভিজিটিং আওয়ার শুরু  হয়েছে..


 
___________________________________
                  ****
      ঝাপসা ছবিগুলো স্পষ্ট  দেখতে  পাচ্ছেন  রঞ্জিতা--
     
    অষ্টাদশী রঞ্জিতা স্টেশনে নামতেই  ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি  নামল। আজ  কলেজের পরে লিলির জন্মদিনের জন্য  ফিরতে বেশ দেরি হলো। এদিক- ওদিক তাকাতেই দেখে স্টশনটা প্রায় ফাঁকা  হলেও  ঐ ছেলের দলটা বসে আছে। ওদের দেখেই বুকটা কেঁপে ওঠে। কতদিন  ধরেই  কলেজ  যাতায়াতের পথে বিরক্ত করছে। দলের পান্ডাটা আবার গ্রামের প্রধানের ছেলে। লিলির জন্মদিনের আনন্দে ভুলেই গেছিলেন এদের  কথা।ওদের  দেখে স্টেশনে আর দাঁড়িয়ে  না থেকে বৃষ্টির  মধ্যেই  পা বাড়ালেন। গ্রামের রাস্তা সন্ধের পরেই লোকজন কম থাকে,আর আজ তো বৃষ্টি। শুনশান  রাস্তায়  কিছুটা এগোতেই  বুঝতে পারেন বিপদ পিছু নিয়েছে...

সেই ভয়ানক সর্বনাশের পর হাসপাতালের বেডে শুয়ে চেয়েছিলেন  সত‍্যটা প্রকাশ করবেন। কিন্তু পুলিশ আসার একটু  আগেই  ওয়ার্ড বয়ের ছদ্মবেশে  সেই কুকীর্তির একজন এসেছিল। নিজের থেকেও বেশি  ভয় পেয়েছিলেন বাবা-মায়ের জন‍্য। তাই অপরাধীদের  শনাক্ত করতে পারেননি পুলিশকে জানান। কিন্তু বাড়িতে  ফিরতেই শুরু হলো আরেক অত‍্যাচার। ধর্ষকের নয় ধর্ষিতার শাস্তি হয়  সর্বদা। তাই প্রতিবেশী থেকে শুরু করে ধর্ষকের বাবার  হুমকি  আর মানসিক  চাপে নিজেকে শেষ করে দিতে  গিয়েছিলেন। কিন্তু  মা দেখে  ফেললেন, তারপর...
 তারপর  অন‍্য জীবন। সে জীবনের  একমাত্র  অবলম্বন  দুবছরের নীলাদ্রী। লতার মতো আগলে বাঁচতে চাওয়া। ওকে ঘিরেই  তো সবকিছু। কিন্তু  আজ হঠাৎ   ভুলে  বলে ফেললেন। সত্যিটা জেনে যদি নীলাদ্রী তাকে....
  বন্ধ  চোখের পাতা থেকে  গড়িয়ে  পড়া জলটা মুছে  দেয় চেনা হাতের স্পর্শ। চোখ মেলতেই দেখেন হাসিমুখে দাঁড়িয়ে  আছে নীলাদ্রী আর কোয়েল। আর বেশ কিছু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটার চোখেমুখে আজ উৎকণ্ঠার ছাপ। 
  
  --মা,
-- তোকে বলিনি রে আমি  তোর মা...
    কথাটা শেষ করতে পারেননা রঞ্জিতা।
-- তুমিই  আমার  মা। তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে বাড়ি চলো।

   রঞ্জিতার হাতটা শক্ত করে ধরে নীলাদ্রী। স্পর্শেরা জানান দেয় আত্মজ না হলেও মাতৃত্বের সম্পর্কের  বাঁধন অনেক শক্তিশালী। 
___________________________________

      



 


1 টি মন্তব্য:

  1. খুব সুন্দর লাগলো।
    মানবিক সম্পর্কের এই গল্প.... মাতৃত্বের বাঁধন সত্যিই খুব শক্ত।

    উত্তরমুছুন