পৃষ্ঠাসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

সোমবার, ১৭ আগস্ট, ২০২০

জয়ীতা ব্যানার্জী

                

তারাদের সার্কাসে আলো জ্বলে



মনখারাপের দিনে বৃষ্টিকে অন্ধের ফেরিওয়ালা মনে হয়
অন্ধ কেবল ওই স্বরটুকু চেনে। বোঝে
নক্ষত্রের পসরা সাজিয়ে ভাঙাচোরা সাঁকোটি পেরোলে

মেঘের ভিতর থেকে তার-ই দুয়েকটি ঝরে কি পড়ে না
মাটির উপর তাঁরা গাছ হয়, অন্ধ জেনেছে
আর সবচেয়ে কোমলটিকে 'মা' বলে ডাকে


তুমি সোনার কাঠির মতো। জ্বরের ঘোরেই বুঝি
কত কথা বলা হয়ে উঠলো না এবার-ও তোমাকে

দূরে তারাদের সার্কাসে আলো জ্বলে। সারারাত
এত আলো তবু কেন
তোমার হাতের ছায়া পড়ে না কপালে


তেরছা রোদ এসে ভরে দিচ্ছে শব্দছক। পেরে যাওয়া শব্দগুলিতে টিক দিতে দিতে বড় হয়ে উঠছে চাঁপাডালের ছায়াটি। আর সামান্য বড় হতেই উল-কাকু এসে দাঁড়ালেন। ঝরঝরে সাইকেল বোঝাই উলে আসল মানুষটিই ঢাকা পড়ে গেছেন যেন। মা-কাকিমারা পছন্দের রং বাছছেন। পুরনো রঙের সঙ্গে মিলিয়ে মিলিয়ে নতুন রং খুঁজছেন। তিনি টান মেরে বার করে আনছেন চকচকে শীতের ওম। হাতের কায়দায় ছুঁড়ে দিচ্ছেন শূন্যে! তারা নেমে আসতে আসতে সোজা-উল্টোয় কী সুন্দর সেজে উঠছে বাগান। রিনরিনে চুড়ির শব্দ কেড়ে বাবা বলে উঠছেন মায়ের হাতে না কি জাদু আছে। আমি তাকিয়ে আছি আকাশের দিকে। মায়ের হাসির শব্দ ভেসে আসছে।


নামতার সুর যতখানি একঘেয়ে ঠিক ততখানিই মধুর। দুলে দুলে নামতা পড়ার অভ্যেসে মা এসে গরম দুধের গ্লাস রেখে যান। শীতের বিছানা জড়িয়ে ধরে আরও কিছুটা সকাল পেরিয়ে যাওয়া যায়। বন্ধ জানালার ফাঁক গলে সোহাগী রোদ ছুঁয়ে নিচ্ছি, নেব -- ভাবতে ভাবতেই মায়ের আঁচলের গন্ধ দূরে সরে যেতে থাকে। দুহাতে মুখ গুঁজে চেনা ঘ্রাণ হাতড়ে বেড়াই, রোজ। সবার মতো আমার আর বড় হওয়া হয় না, বাড়ির সবার আগে ঘুম ভেঙে ওঠা হয় না, গুছিয়ে কাজ শেখা হয় না আমার। দিন জিতে যাওয়া বন্ধুটি যেন, অনেকটা এগিয়ে গিয়ে পেছন ফিরে ভেংচি কাটছে।


পরমান্ন সাজিয়েছি। এসো সুখ পাত পেড়ে বোসো
তোমাকে একটি দিন আদরে খাওয়াই। আঁচলের
আলতো পরশে মুছি ছিটেফোঁটা নুনের দেমাক

তোমাকে দেখতে সুখ অবিকল মায়ের মতই

------------



২টি মন্তব্য: