পৃষ্ঠাসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২১

সমিধ গঙ্গোপাধ্যায়

                         


চন্দ্রাহত অথবা সেয়ানা ধর্ষণকারীর স্বীকারোক্তি 
--------------------------------------------------------------------



না না চাঁদ দেখলে আমার আর অন্য কিছু

হজম হয় না
এই আমিদেহ নাকি চাঁদ নিয়ে সুস্বাদু কবিতায়
প্রজ্ঞা আর প্রেম বেঁধে ঘোড়া হাঁকিয়েছে? কই না তো!

আমার বউ অন্ত্রের ক্যান্সারে মারা যাওয়ার আগে
একটা সরোবর খেতে চেয়েছিলো
প্রোমোটারও চেনা ছিলো 
বললেই সমস্ত তরল আওয়াজগুলো চেপেচুপে 
দশতলা প্রমাণ এক টিফিন বাক্সে পাঠাতো
কিন্তু আমার গাফিলতি সরোবরের বদলে কিছু পাখির ছবি এঁকে দিয়েছিলো
খেয়াল করিনি ওরা পরিযায়ী,তাই যাবার সময় বউকেও নিয়ে চলে গেছে কবে

আমার প্রেমিকার মালভূমিতে তালু চাপড়ে
বলেছিলাম "হেই দ্যাকো উঠে পড়েছি পৃথিবীর ছাদে"
আমার প্রেমিকার পিঠে বারকয়েক লাথি মেরে অবাক হয়ে বলেছি "কই প্রেম যদি ভাঙলো তবে শব্দ পেলাম না কেন?"
তার ঠোঁট থেকে দুটো আনকোরা মেঘের কান ছিঁড়ে নিতে নিতেও বলেছি "কই বাপু প্রেমে এতো যন্ত্রণা কই?"
আমার প্রেমিকার হাস্যকর করোটি নিয়ে বাজি ধরেছি
"এক ঘায়ে ফাটাতে পারবে?"
আর ফেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছাইমাখা ধোঁয়া খানিক নাকে যেতেই নিশ্চিন্ত হয়েছি 
"যাক তাহলে প্রেম ওই মানবাধিকারের মতোই বড় বেশি ভঙ্গুর ছিলো, তাই টিকতে পারেনি!"

এমনকি নিজেকেও বিশ্বাস করো দোস্ত,
গোড়ালি কন্ঠা বৃন্ত বগল নাকের লোমের আলাদা আলাদা বিমার পেটে ঢুকিয়ে রেখেছিলাম, হ্যাঁ গো সুপারিশের সহিত
আর তারা একটুও বিপ্লব না-ফাটিয়ে সকাল সকাল
পুরসভার সবেধন নীলমনি কমোডের যে কোনো একটায়
সকাতরকলরবে শান্তিময়, বেরিয়ে গিয়েছে

এমনিতে মাঠে ঘাটে রাতের দিকে যাই
সে তো অন্য কারণে
তবে অন্যের গায়ের চামড়া আমি যে এখনও অবধি 
একবারও কেড়ে নিইনি সেও তুমি জানো
যেটুকু আভাসমেঘে বেলা হ'লে তোমরা টের পাও
তারা সব নিজে থেকে এসে জল ঢালে আর পাম্প ক'রে
দেখে নেয় কতক্ষণ পরে পরে কতখানি নিচ থেকে সবটুকু জল 
ফিরে আসে

শুধু যদি চাঁদ ওঠে দুপুরের দিকে,
আমার রুটি  তিথি তরকারি বারবেলা গতে 
এগারো নম্বর রাশিফলের বারণ 
এবং ইসবগুল কিচ্ছুটি হজম হয় না
নিজেকে একটা কাঁকর বানাতে ইচ্ছে হয়
সেই কাঁকরে চাঁদের অসম্ভব তিতকুটে রোদ্দুর যখন 
প্রথম পোয়াতি জরায়ুর মতো খুশিয়াল শ্রাবণ হয়ে ওঠে
আর সেইমুহুর্তে চাঁদ টুক ক'রে নেমে এসে দাঁতে তুলে নিয়ে খুব কামড়াকামড়ির পর থুতু ছড়িয়ে উধাও হয়ে যায়
তখন সেই রক্ত লালা ঘাম স্রাব পুঁজ বমির ক্ষীর মাখা দেহখানা 
সরকারি চাকুরে কবিতার পাশে রেখে সামান্য মজা দেখি আমি

এর বেশি আমার কোনও দোষ তুমি ধরতেই পারবে না!


তিন নম্বর পৃথিবীর একচালায়
--------------------------------------------

কোনো কোনো সীমন্তিনী
গোবর থেকে উত্তীর্ণা হন

কেমন একটা অদ্ভুত আলো হয়ে ওঠে চারদিক
আমরা অস্বস্তি গিলে টকঝাল ঢেঁকুর তুলি

রাতের শেষ ট্রামে ফুসলে ওঠাতে পারি না

ত্যক্ত কারখানার মাঠে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে পারি না

স্বচ্ছ শাড়ি অস্বচ্ছ বোরখা কার্যকরী গাউন
ভবিষ্যৎ জেনে ফেলা বিকিনি কোনোটাই মাপমতো
লাগাতে না পেরে

তার নগ্নতায় সামান্য মাটি লেপে দিই

তারপর মহানন্দে অকপটে জুলজুলে
নেত্রপাত করে নিই দফায় দফায়

তাকে অকারণে একটু দুর্গা বানাই

নিশ্চিন্তে পাঠ করি
লিখে ফেলি পাতার পর পাতা
বান্ডিল ওড়াতে থাকি কাগুজে খিদের

তারপর মাটি বেশি জমে গেলে
কাকভোরে ডুবিয়ে দিয়ে আসি

নতুন কোনও নগ্নতায় চামড়ার অনটনে
আবার একটু অকারণে নিজেদের লেপে দেবো ব'লে।


স্বনির্ভরতা
----------------

ঘুম আসবে বলেছে
আজ-কাল-পরশুর প্রাইম সময়ে
স্লট পেয়েছে যেমন আর যতক্ষণ খুশি

শয্যা-চমকহীন জন্মান্তরের বড় প্রশ্নে
গন্ডারের শিঙেওয়ালা নম্বর থাকে
যদি হাসাতে না পারো তবে ফুঁ দেবারও
অধিকার নেই

নিতান্ত ঘুমের জেদ আসবে বলেছে
তাই বড়জোর চোখ আর পেট থেকে খোসা চেঁছে
ধুনো হতে পারো
এক আধ নম্বরের শ্বাসে টিক দিতে দিতে
সূর্যও ভুলে গেছে জল ধরে রাখার বয়ান
তুমি কোন ছাড়

তিলোত্তম আবছায়া হয়ে ওঠাই
সাফল্যের অদ্বিতীয় ধর্ম--
রোল নম্বর মনে রাখতে পারে না বলে
নিজেরই খড়মপেটা খেয়ে,
স্বয়ং ব্রহ্মেরও অন্ডকোষ
পরষ্পরের চেয়ে দূরতর হয়ে গেছে
ভাসা ভাসা পথে
তুমি কোন ছাড়

শুধু দ্যাখো
ঘুম তার নিজেরই ছায়ার তরলে,
সুভদ্র বিপর্যাস মিশিয়ে মাপছে গভীরতার গড়ন

শুধু ভাবো এর বাইরে স্রেফ পাতা উলটে
না গিয়ে
যদি লেখার হাতের লেখা নির্বিকার গুমখুন
করা যেত পাশ ফেরার আগে
মাতৃদত্ত হোক না হোক বেশ খানিকটা নাম
বিক্রি করা সম্ভব হতো,
                         মুক্তিপণ নেবার অছিলায়।




1 টি মন্তব্য:

  1. Asadharon. স্বনির্ভরতা abong তিন নম্বর পৃথিবীর একচালায় ei sesh duto kobita khub onnorokom r pran sonchare sokkhom. Bhalo laglo @samidh babu

    উত্তরমুছুন