রুমাল ।।
...
চোখ ভিজে যাচ্ছে বারবার । বুকের ভিতর এতটা শোক তবে ছিল ! শোক নাকি আবেগ বুঝতে পারছেন না অপার্থিববাবু । এতকাল সেভাবে মনে পড়েনি তেমন । একাকী ব্যস্ত লেখক জীবনে কই , বকুলের কথা মনেই পড়েনি তাঁর ।
আজকেও হোম থিয়েটারে মৃদু শব্দে সেতার বাজছে । টেবিলে ফুলদানে রজনীগন্ধা । পাশেই কাচের গ্লাসে দামী হুইস্কি । ছাইদানে আধপোড়া ফিল্টার ...
ফোনটা করেছিল বকুলের বান্ধবী অন্তরা । সে অপার্থিববাবুরও বান্ধবী ।যোগাযোগ এত বছরেও ম্লান হয়নি ।
এত রাতে ফোন মূলত আসেনা । তাছাড়া অপার্থিববাবু রাতের এই নিজস্ব সময়ে কারো ফোন রিসিভ করেন না । অন্তরা নামটা দেখেই রিসিভ করেছিলেন । শুনলেন চরম দুঃবাদটা যে , বকুল আর নেই । সন্ধ্যায় চলে গেল । ওর ডাক্তার বর অনেক চেষ্টা করেছিল । তবু শেষ রক্ষা হল না ।
খবরটা শোনার পর থেকেই কেমন যেন লাগতে শুরু করল অপার্থিব মুখার্জির । প্রায় পঁচিশ বছর আগেই সেই চঞ্চল মেয়েটা । কবিতা পাগল । আবৃত্তিকার বকুল ভেসে উঠল । সেই মেয়েটার প্রেমে পাগল হলেন বয়সে অপেক্ষাকৃত বড় আবৃত্তির বিচারক তরুণ লেখক অপার্থিব ।তারপর নন্দন - ভিক্টোরিয়া - রবীন্দ্রসদন । নাটক- সিনেমা । পায়ে পায়ে কলকাতার ধুলো ।চার বছর প্রেম ।
অপার্থিববাবু উঠে গেলেন । আলমারিটা খুললেন । ভেতরের চোরাকুঠুরী থেকে রের করে আনলেন একটা সাদা রুমাল । পঁচিশ বছর আগের । রুমালে ছোপ ছোপ দাগ । হাতে নিয়ে গন্ধ শুকলেন । কই , সেই গন্ধটা তো নেই -- ন্যাপথালিনের গন্ধ । কিন্তু তাঁর নাকে লেগে আছে আজো প্রথম দিনের সেই মিষ্টি গন্ধটা । সেই গন্ধটাই তিনি খুঁজছেন অথচ আজ কেন পাচ্ছেন না ?
মনে পড়ে গেল প্রথম বার পার্কে দেখা করার দিনটি । দুপুর গড়িয়ে বিকেল , বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা-- এবার তো উঠতে হবে , বলে উঠে দাঁড়াল বকুল । হাত টেনে ধরলে অপার্থিব । তোমাকে ছাড়তে ইচ্ছে করছে না । একটু এগিয়ে নিজের হাতের সুগন্ধী রুমালটা ছুঁড়ে দিয়েছিল অপার্থিব- এর হাতে । বলেছিল , আমার পরিবর্তে এইটা দেখবে । গন্ধ নেবে । আমাকেই পাবে । সেই থেকে বড় যত্নে রেখেছে সে এই রুমালটিকে ।
আজ এত দিন পর সব স্মৃতিগুলিই জীবন্ত হয়ে উঠৈছে চোখের সামনে । নিজের অজান্তেই ভেজা চোখ মুছলেন রুমালটা দিয়ে অপার্থিববাবু । মনে হল বকুল-ই যেন মুছিয়ে দিচ্ছে তাঁর চোখের জল । জীবন - যন্ত্রনার দাহ ।
...
চোখ ভিজে যাচ্ছে বারবার । বুকের ভিতর এতটা শোক তবে ছিল ! শোক নাকি আবেগ বুঝতে পারছেন না অপার্থিববাবু । এতকাল সেভাবে মনে পড়েনি তেমন । একাকী ব্যস্ত লেখক জীবনে কই , বকুলের কথা মনেই পড়েনি তাঁর ।
আজকেও হোম থিয়েটারে মৃদু শব্দে সেতার বাজছে । টেবিলে ফুলদানে রজনীগন্ধা । পাশেই কাচের গ্লাসে দামী হুইস্কি । ছাইদানে আধপোড়া ফিল্টার ...
ফোনটা করেছিল বকুলের বান্ধবী অন্তরা । সে অপার্থিববাবুরও বান্ধবী ।যোগাযোগ এত বছরেও ম্লান হয়নি ।
এত রাতে ফোন মূলত আসেনা । তাছাড়া অপার্থিববাবু রাতের এই নিজস্ব সময়ে কারো ফোন রিসিভ করেন না । অন্তরা নামটা দেখেই রিসিভ করেছিলেন । শুনলেন চরম দুঃবাদটা যে , বকুল আর নেই । সন্ধ্যায় চলে গেল । ওর ডাক্তার বর অনেক চেষ্টা করেছিল । তবু শেষ রক্ষা হল না ।
খবরটা শোনার পর থেকেই কেমন যেন লাগতে শুরু করল অপার্থিব মুখার্জির । প্রায় পঁচিশ বছর আগেই সেই চঞ্চল মেয়েটা । কবিতা পাগল । আবৃত্তিকার বকুল ভেসে উঠল । সেই মেয়েটার প্রেমে পাগল হলেন বয়সে অপেক্ষাকৃত বড় আবৃত্তির বিচারক তরুণ লেখক অপার্থিব ।তারপর নন্দন - ভিক্টোরিয়া - রবীন্দ্রসদন । নাটক- সিনেমা । পায়ে পায়ে কলকাতার ধুলো ।চার বছর প্রেম ।
অপার্থিববাবু উঠে গেলেন । আলমারিটা খুললেন । ভেতরের চোরাকুঠুরী থেকে রের করে আনলেন একটা সাদা রুমাল । পঁচিশ বছর আগের । রুমালে ছোপ ছোপ দাগ । হাতে নিয়ে গন্ধ শুকলেন । কই , সেই গন্ধটা তো নেই -- ন্যাপথালিনের গন্ধ । কিন্তু তাঁর নাকে লেগে আছে আজো প্রথম দিনের সেই মিষ্টি গন্ধটা । সেই গন্ধটাই তিনি খুঁজছেন অথচ আজ কেন পাচ্ছেন না ?
মনে পড়ে গেল প্রথম বার পার্কে দেখা করার দিনটি । দুপুর গড়িয়ে বিকেল , বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা-- এবার তো উঠতে হবে , বলে উঠে দাঁড়াল বকুল । হাত টেনে ধরলে অপার্থিব । তোমাকে ছাড়তে ইচ্ছে করছে না । একটু এগিয়ে নিজের হাতের সুগন্ধী রুমালটা ছুঁড়ে দিয়েছিল অপার্থিব- এর হাতে । বলেছিল , আমার পরিবর্তে এইটা দেখবে । গন্ধ নেবে । আমাকেই পাবে । সেই থেকে বড় যত্নে রেখেছে সে এই রুমালটিকে ।
আজ এত দিন পর সব স্মৃতিগুলিই জীবন্ত হয়ে উঠৈছে চোখের সামনে । নিজের অজান্তেই ভেজা চোখ মুছলেন রুমালটা দিয়ে অপার্থিববাবু । মনে হল বকুল-ই যেন মুছিয়ে দিচ্ছে তাঁর চোখের জল । জীবন - যন্ত্রনার দাহ ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন