পৃষ্ঠাসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০

জয়াশিস ঘোষ

                                       

 রথ


-দিদি, রথের মেলায় নিয়ে যাবি?

-যদি দুপুরে ঘুমোস, নিয়ে যাবো।

-এই দেখ চোখ বুজলাম। ঘুমিয়ে পড়ছি কিন্তু।

-তুই ঘুমোবি! তাহলেই হয়েছে। 

-দিদি, যদি উঠতে না পারি। সেই সেবারের মত। মাও তো উঠল না। কত ডাকলাম। 

-চুপ কর। নিয়ে যাবো তোকে। পাঁপড়ভাজা খাওয়াবো। বাঁশি কিনে দেবো। এরোপ্লেনে চড়াবো।

-জিলিপি খাবো কিন্তু একশো গ্রাম করে। কড়া দেখে নেবো। আচ্ছা দিদি, এরোপ্লেনে কি এরকম গোল গোল করেই ঘোরে ? 

-না, অনেক উঁচুতে ওঠে। মেঘের দেশে। যেখানে পরিরা আছে। নীচ থেকে দেখা যায় না। 

-ওখানে গিয়ে আমি পরিদের সাথে খুব ঝগড়া করবো। মাকে নিয়ে আটকে রেখেছি। কত ডাকি। শুনতেও পায় না।

-শুনতে পায় রে। কিন্তু এরোপ্লেন থামে না তো ওখানে। আসতে পারে না। 

-তাহলে বুঝবো কি করে যে মা শুনতে পাচ্ছে? আমি ডাকছি কত করে!  

-মা কাঁদছে আসতে পারছে না বলে। বাইরে কেমন কান্নার আওয়াজ আসছে শুনতে পাচ্ছিস না?

-না তো। জানলা বন্ধ করে রেখেছিস তো। দিদি, একটা পাঁপড়ের কত দাম? 

-কেন? দেবো তো বললাম কিনে। 

-মায়ের জন্য একটা কিনবো। আমার কৌটোর পয়সা দিয়ে। এরোপ্লেনে রেখে আসবো। মাকে দিয়ে দিতে বলবো এরোপ্লেনওয়ালাকে।

-মাকে বলে দে।  আমি জানালা খুলে দিচ্ছি। 

-কান্না কোথায়? এ তো বৃষ্টির শব্দ।

-রথের দিনে সমস্ত হারিয়ে যাওয়া মায়েরা কাঁদে। তাই বৃষ্টি হয়। বলে দে ভাই। মা তোকে শুনতে পাচ্ছে। 


মা... মা.... তোমাকে পাঁপড় কিনে দেবো। একসাথে খাবো। এখানের এরোপ্লেনগুলো বিচ্ছিরি। খালি গোল গোল ঘোরে।  নাগরদোলায় ওপরে উঠলে হাত বাড়াবো। তুমি একটু মেঘ সরিয়ে দেখো, দেখতে পাবে...

৩টি মন্তব্য: