পৃষ্ঠাসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০

সম্পাদকীয়

           .                           

যদি মায়াজন্ম পাই তবে যেন আবারও মা হতে পারি৷সারা বিশ্ব খুঁজলেও মা'র মতন শক্তিশালী সম্পদ মিলবে না ৷যখন চোখ ফোটে আমাদের ,কিছু বলতে ,বোঝাতে পারি তখন একমাত্র মা বোঝেন তার সন্তানটির চাহিদা ৷সন্তানদের মনের খবর একমাত্র জানে মা । মা হলেন এমন  এক প্রজাতি যা প্রকৃতির দেওয়া সর্বশ্রেষ্ট উপহার।প্রকৃতির জল, হাওয়ায় মা বড় হয়৷ নারী , পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের মধ্যে যেমন  মা বেঁচে থাকে তেমন সকল জীবজগতে মা থাকে ৷ একটি গরু যখন সন্তান প্রসব করে তখন বাছুরটি বার বার দাঁড়ানোর চেষ্টা করে আর পড়ে যায় ৷ মা তখন অতি যত্ন করে দুধ খাওয়ায় তাকে ৷কুকুরের ছানা,বিড়াল ছানা তারা তাদের সন্তানকে নিরাপদ স্থানে রেখে আসে I যদি মা তাদের সন্তানদের খুঁজে না পায় পাগোলের মত করতে থাকে৷ চারিদিক খঁুজে খুঁজে সন্তানদের আবিষ্কার করে৷পাখিরা সকালবেলায় বাসা থেকে  বেরানোর আগে সন্তানদের নিরাপদ স্থানে লুকিয়ে যায় ৷ 


আত্মরক্ষা করা সকল জীবকূলের মা'র একটা জিনগত বৈশিষ্ট্য বলা যায়৷পৃথিবীর সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতা থেকে সন্তানদের রক্ষা করা তার কাজ ৷ যে ভাবেই হোক নিজের সন্তানের মাধ্যমে অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখে একজন মা।সকল প্রকার বর্হিশক্তি থেকে সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখাটা একটা চ্যালেঞ্জ৷একটা পিঁপড়ে মরে যাওয়াকে ভয় করে৷ প্রকৃতি এভাবেই সৃষ্টি করছে জীবজগৎকে৷আর সেই ভাবে গড়ে তুলেছে জীবজগতকে৷প্রত্যেকটা জীবকে এমন ভাবে তৈরী করেছে যাতে ঝড় বৃষ্টি প্রাকৃতিক সকলপ্রতিবন্ধকতা থেকে রক্ষা পায় ৷ প্রকৃতি.মানেই মা ৷ সে চায় তার সন্তান বেঁচে থাক ৷ হরিণ যখন বাঘের শিকার হয় তখন প্রাণপণ বাঁচিয়ে রাখতে চায় শাবককে ৷ আর মনুষ্য জাতির মধ্যে এরও ব্যতিক্রম হয় না৷তাই তো কয়েকশ বছর পরও মাটির তলায় চাপা পড়া ধ্বংসাবশেষে দেখা যায় এক জন পা তার সন্তানকে মাথায় করে  রখেছেন৷অর্থাৎ ধ্বংস হবার আগের  মুহূর্তে মা তার সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখেন৷ঠিক যেমন ঝড় ওঠার আগে পাখিরা তার সন্তানদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দেয়৷ 


"আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে" I এই দাবী যে শুধু মা করেন তা নয়। বাবাও করেন ৷পৃথিবীর সকল বাবার মধ্যে মা লুকিয়ে থাকে৷মা মানে স্নেহের ছায়া I একটা আড়াল।যে কিনা সকল প্রকার আদর ,আসকারা দিয়ে বড় করে তুলবে৷ নিজে না খেয়ে সন্তানের জন্য রেখে দেওয়া এটা সকল জীবজগৎ করে রাখে৷ বাঘ তার সাবকের জন্য খাদ্য সঞ্চয় করে রাখে৷ঘরে চাল বাড়ন্ত থাকলে মিথ্যে ঢেকুর তুলে মা এক গ্লাস খেয়ে শুয়ে পড়েন৷ এই চিত্র আমাদের পরিচিত৷ পাড়ার কুকুরকে যখন খেতে দেওয়া হয় সে মুখে বাচ্চাদের সেখানে নিয়ে আসে৷ পোকামাকড়দের মুখে করে খাবার নিয়ে যেতে দেখা যায়৷

সঞ্চয় শব্দটার উৎপত্তি পৃথিবীর সকল মার থেকে ৷ তাই অন্নপূর্ণাকে সারা জীবন সন্তানদের  দুধ , ভাতের অভাব থাকবে না এই বর দিতে হয় ৷ সঞ্চয় মানেই ভবিষ্যত ৷ তুলে রাখা উত্তরাধিকারদের জন্য ৷

মা মত করে ভালোবাসার
কেউ নেই 
পৃথিবীতে তাই আজও 
মা'র কোন প্রতিশব্দ নেই

আমাদের জীবন, আমাদের চেতনা সবই গড়ে তোলেন মা ৷ বাবা আর্শীবাদ করেন ," বড় হও ,মানুষ হও৷" মা বলেন, " ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুক ৷ তিনি তোমাকে আশীর্বাদ করুন৷"মা চান তার সন্তানেরা যেন সর্বদা ঈশ্বরের শুভাশিসে থাকেন।আমাদের দুঃখ ,কষ্ট অনুভব প্রথম মা করতে পারেন৷তাঁর চোখে এড়ায় না কখনও।

দুঃখ বেদনা ,গ্লানি 
ধুয়ে, মুছে যায়
একটি মাত্র শব্দে
"মা" 

"মা " শব্দের মত পবিত্র শব্দ অভিধানে নেই৷সারদা মাকে ঘিরে সারা বিশ্বে উন্মাদনার শেষ নেই৷তিনি গর্ভে ধারণ না করলেও জগতের মা ৷কোটি কোটি মানুষ তাঁকে মা বলে ডাকেন৷
এক বার জয়রামবাটিতে দুর্ভিক্ষের সময় ক্ষুধার্তদের গরম খিচুড়ি বিতরণ করার সময় (তখন মা সারদার অল্প বয়স) তাঁর মধ্যে প্রকৃত জনসেবা করার রূপটি ফুটে উঠেছিল। ওই গরিব মানুষদের পাশে বসে হাতপাখায় তাদের বাতাস করে দিয়েছেন। ওই মানুষগুলো তখন মায়ের পরম স্নেহ পেয়ে আনন্দে মত্ত হয়ে উঠেছিল। অভাব, জ্বালা, যন্ত্রণা ভুলে সকলেই একাত্ম হয়েছিল সে দিন। আর মা সারদার এমন আচরণের নজির নানা উপলক্ষে রয়েছে একাধিক।আমরা মায়ের এক ভক্ত আমজাদের কথা স্মরণ করতে পারি। নিজের হাতে তাকে খেতে দিয়েছিলেন, এমনকী খাওয়া শেষে এঁটো থালা পরিষ্কার করতেও তাঁর কোনও দ্বিধা ছিল না। আমজাদের পরিচয় সম্পর্কে মাকে মনে করিয়ে দেওয়ায় তিনি বলেছিলেন, ‘আমার শরৎ যেমন ছেলে, ওই আমজাদও তেমন ছেলে’। শরৎ, অর্থাৎ পরবর্তী কালে স্বামী সারদানন্দ মহারাজ। এই সামান্য ঘটনাটির তাৎপর্য মোটেও সাধারণ নয়। 

সুতরাং মা হলেন সকল প্রকার ধর্মীয় ভেদাভেদ, হিংসা ,লোভ ,ক্ষমতা সব কিছুর উর্দ্ধে ৷অনেকে ভাবেন মা মানে নারী ৷কিন্তু তা নয় ৷একজন পুরুষের  মধ্যে মা বেঁচে থাকে৷ আমর তাকে অনুভব করতে পারি না ৷ মা মানে নিরাপদ আশ্রয় ৷ যার ছায়ায় বসে বিশ্রাম নেওয়া যায়৷ ভালোবাসার আর এক শব্দ মা৷

সৃজন এই সংখ্যায় থাকছে উপন্যাস, প্রবন্ধ ,গল্প কবিতা ৷ পড়ুন সবাই৷ সৃজনে থাকুন ।

পারমিতা চক্রবর্ত্তী
সম্পাদক




চিত্রঋণ - জয়িতা ব্যানার্জী

১৬টি মন্তব্য:

  1. কি সুন্দর লিখেছো পারমিতা ❤


    সুতপা সরকার

    উত্তরমুছুন
  2. সম্পাদকীয় খুব সুন্দর লেখা হয়েছে

    উত্তরমুছুন
  3. খুব ভালো লিখছো সম্পাদকীয় ۔۔তেমন ই সুন্দর প্রচ্ছদ

    উত্তরমুছুন
  4. খুব ভাল হয়েছে প্রচ্ছদ ও সম্পাদকীয়।

    উত্তরমুছুন
  5. খুব সুন্দর লিখেছো সম্পাদকীয়। শুভকামনা

    উত্তরমুছুন
  6. দারুণ সম্পাদকীয়।লেখা / ছবি নির্বাচন;ভীষনভাবে আন্তরিক ভালোলাগা জানাই

    উত্তরমুছুন