পৃষ্ঠাসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১

লিপি সেনগুপ্ত

                                          






এই সংখ্যার কবি লিপি সেনগুপ্ত ৷জন্ম অরণ্য শহর ঝাড়গ্রামে। স্কুলের পড়াশোনা সেখানেই, পরবর্তীতে কলকাতায় স্নাতকোত্তর পর্ব।ছোটবেলা থেকেই কবিতার প্রতি আগ্রহ সাথে স্কুল ম্যাগাজিনে লেখালেখি।বর্তমানে  বিভিন্ন পত্র পত্রিকা সহ ওয়েব ম্যাগাজিনের পাতায় কবিতা এবং মুক্ত গদ্য প্রকাশিত হচ্ছে।স্থায়ী বসবাস কলকাতায় ....

১॥


কেন গেলে

-------------




যাওয়ার কথা কি ছিল?তবুও গেলে

ধানক্ষেত ,বট গাছ,নদী—

ডোবায় কচুরিপানা, উঠোনে ধানের গোলা

ঐ....ঐ পাশে গোয়ালঘর

পিছনে বাঁশঝাড় আর কোণাকুণি মেঠো গলি

একটু এগোলেই রায়দের পোড়োবাড়ি

সব ফেলে। আর...থাক্—


বললে, আসি...দুয়ার ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম

তুমি এগিয়ে গেলে

শেষ ছায়াটুকুও মিলিয়ে গেল

উঠোনের রক্ত জবা গাছের আড়ালে

বেলাশেষে মাটির বুকে ঝরে পড়া রক্তজবাও বলেছিল "কেন গেলে?"


যাওয়ার কথা কি ছিল?তবুও তো গেলে

কিছু না বলে এইভাবে চলে যেতে আছে?




২॥


নিভৃত বাস

----------------

লিপি সেনগুপ্ত 


নিভৃতবাসে কোন জানলা থাকে না

অন্তর চুঁইয়ে আলো আসে

ভাবনার গুপ্ত কারুকাজ

বিম্বিত দেওয়াল


বুকে ধাক্কা দিয়ে 

ঘাট থেকে নৌকাও ভেসে যায় বারবার

জলের কাছে  

এক দিগন্ত ঋণ,অচেতন...


যাওয়ার  কথা তো সবারই 

পিছুটানে মরসুমি ফুল

কিছু কথা , সংগোপন...

সে খবর মাটি জানে


নিভৃতবাসে জানলা লাগে না

বৈরাগীই জানে

কতটুকু গেলে ফেরাও যায় সহজে।


৩।।


অভিসার 

-----------

লিপি সেনগুপ্ত 


শুরুর থেকে শুরু করে

মাঝপথে পথ ভুলে গেলে ধানক্ষেত প্রতিটি ধানের শিষে আঁকা পথ 

সেই পথ ধরে,বুভুক্ষু শরীরে

 চলে যেতে যেতে একদিন

পেয়েছি আসমানী নীল জলাশয়! 


শুরু করা সেই পথের

 নাম তো ছিল না কোনো

জলাশয় ...কি নামে ডাকব তোমায়,বলো!


যদি নাম রাখি "অভিসার"

জলজ ভেলায় আমাদের সংসার 

বলো, ভাসবে কি? 


৪॥


সাংকেতিক 

-------------


লিপি সেনগুপ্ত 



সংকেত পেতে পেতে সাংকেতিক ভাষাবুঝে গেছি সব

মিছরির মত চুষে চুষে নিই তার কুচি

এখনও বেলা পড়ে এলে টের পাই 

পাখিদের পাখসাট,খুঁনসুটি

এসব কি সেই ভাষা নয়?


স্থির জলের ভাষা যারা জানে

পাড়ে বসে থাকে নির্নিমেষ

মাঝি,সে'ও তাকায় ,দূরে...  

ধ্রুবতারা আকাশের বুকে

কি যেন বলবে

সে ভাষাও চেনা চেনা লাগে


লতাপাতা জড়ানো সায়াহ্নে 

পাথরকুচির মত কত শত মুখ

ভালোবাসা বোঝে কেউ, কেউ বা অবুঝ

সংকেত বোঝে

আমি নির্বাক নিভৃত নিশীথ 

ভাষাহীন দিনলিপি সে তো

সতত সাংকেতিক…



৫॥


বসন্ত জোনাকি

-----------------

লিপি সেনগুপ্ত 


অভিমানের দাগ মনের পিলসুজে

ছেঁড়া ছেঁড়া  কথার গায়ে চাঁদের ছায়া  

নিজেদের ভুলভ্রান্তি তুলে রাখা চিলেকোঠার ঘরে

তারপর আল ধরে হেঁটে গেছে কেউ

গর্ভের সাক্ষী সোনা ধান আর এলোমেলো বসন্ত 


এক ফাল্গুনী সন্ধ্যায় বলেছিলে,

পূর্ণিমার জোৎস্না জেনে বুঝেই নাকি পাগল করে সোমত্ত পুরুষকে


জোনাকির আলো সারা শরীরে মেখে 

সামনে গিয়ে দাঁড়াব

চোখ নামিয়ে দেখো,

পাকা ধানের গন্ধে 

তুমি যেমন রাগ পুষেছ বুকে


আমি  তেমনই  রেখেছি 

এই বসন্ত জোনাকি।



  





রিনি গঙ্গোপাধ্যায়

                                     


এই সংখ্যার গল্পকার রিনি গঙ্গোপাধ্যায়৷


পাঁচভূত



প্ল্যানটা চলছিল অনেকদিন থেকেই! তবু কিছুতেই যেন দুয়ে দুয়ে চার করা যাচ্ছিল না। থুড়ি, চার নয়, পাঁচ। পাঁচভূত একসাত! কারো না কারো কোনো না কোনো অসুবিধে থেকেই যাচ্ছিল। আলাদা করে সকলের সঙ্গে সকলেরই যোগাযোগ আছে হোয়াটসঅ্যাপ এ, সোসাল সাইটে; আর ফোন তো আছেই। তবু স্কুলের পর আর পাঁচভূতের একসাথে দেখা করা,আড্ডা মারা হয়ে ওঠেনি। শনি-রবি ছুটির দিনেও কেন দেখা হয় না বলে যারা মন খারাপ করে থাকত একসময় আজ প্রায় এক দশকের ওপর হয়ে গেল তাদের দেখা হয়নি। এর-ওর বিয়েতে যদি বা উপস্থিত হয়েছে তবু একজোট হওয়া যায়নি নানা কারণে। স্কুলবেলার সেই এক বেঞ্চিতে ঠাসাঠাসি করে বসা পাঁচভূত আজ নিজের নিজের জীবনের পথে বিচ্ছিন্ন দিন যাপন করে। প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তের খবর দূরে থাক; জীবনের বড়সড় পরিবর্তনগুলোও আজকাল আর একে অপরের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হয় না। স্কুল পাশ করার পর কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে কতজনের সঙ্গে পরিচয় হল; সামান্য ঘনিষ্টতাও হল বৈকি! কিন্তু ওই পর্যন্তই! দীর্ঘস্থায়ী, নির্ভরযোগ্য বন্ধু আর জুটল কোথায়! হ্যাঁ,প্রেমিক জুটেছে, বর জুটেছে; কিন্তু বন্ধু! 'বন্ধু' শব্দটা বললেই ওরা আজও পিছিয়ে যায় সময়ের পথ বেয়ে। স্কুলবেলার লাল ফিতের বাঁধন এখনও ওদের আলগা হয়ে যায়নি।

সেই ছোটোবেলার মতো যথারীতি সবার আগে উপস্থিত হয়েছে ক্রন্দসী। ওর আর উর্বীর বাড়ি একই দিকে। তাই আসার সময় তাড়া দিয়ে উর্বীকে গাড়িতে তুলে নিয়েছে। শপিং মলে ঢুকেই ওরা চলে এসেছে ফুডকোর্টে। টেবিল-চেয়ার গুছিয়ে ছোটো একটা বৃত্ত তৈরি করে নিয়েছে নিজেদের মতো।প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এসে উপস্থিত হয়েছে বহ্নিসখা। দূর থেকে ক্রন্দসী আর উর্বী কে দেখে এতোটাই উত্তেজিত হয়েছে যে ওর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন পর্যন্ত ঘুরে তাকাতে আরম্ভ করেছে। ক্রন্দসীর সঙ্গে ওর প্রায় ছ'বছর বাদে দেখা হলো। 

কি রে! তুই এতো মোটা হয়ে গেলি কি করে! তোকে তো রাস্তায় দেখলে আমি চিনতেই পারতাম না!!

ক্রন্দসী হালকা হাসে; বলে, তুই তো একই রকম আছিস! একটুও বদলাসনি! সেই হৈ হৈ, চিৎকার! আজ যদি এখানে শর্মিলা দি থাকতেন তুই আজও বকা খেতিস!

বাবাঃ, কার কথা বললি!! উফফ, গোটা ইলেভেন টুয়েলভ জ্বালিয়েছেন! 

উর্বী বলে, মনে আছে, রোজ ক্লাসে এসে তোকে একবার বকুনি না দিয়ে উনি পড়ানো শুরু করতেন না!

তবে তার জন্য আমার কপালে প্রায়ই ক্যাডবেরি জুটতো,সেটা বল!

হ্যাঁ,আর প্রত্যেকবার তোর ক্যাডবেরির বেশিরভাগটাই গলাধঃকরণ করতাম আমি!

আরে!তুই কখন এলি! দেখি দেখি কি সুন্দর লাগছে রে তোকে!

বহ্নিসখা জড়িয়ে ধরে শুষ্মাকে। উর্বী, ক্রন্দসীও ওদের দুজনকে জড়িয়ে ধরে। কান্না কান্না গলায় শুষ্মা বলে ওঠে,কত্তদিন পর!! 

ক্রন্দসীর চোখ ছলছল করে ওঠে।

ওরা চারজন গুছিয়ে বসে। উর্বী বলে,কিছু একটা অর্ডার দি? কি খাবি বল?

বহ্নি বলে, এখনই অর্ডার দিবি কি রে! আগে টলটলে কে আসতে দে! 

আরে তাই তো! স্রবন্তীটা এখনো এলো না কেন! ক্রন্দসী মোবাইলে স্রবন্তীর নম্বরটা ডায়াল করে।

আসছি,আসছি,এই আর দশ মিনিট!

তুই সেই লেটুই রয়ে গেলি রে! ফোন কেটে দেয় ক্রন্দসী।

কিছুক্ষণের মধ্যেই স্রবন্তী এসে উপস্থিত হয়। আরে, আর বলিস না! আমার ছোটো টা কিছুতেই ছাড়বে না! আসবেই!

শুষ্মা বলে, নিয়ে এলে পারতি তো!

ওকে একা নিয়ে এলে হবে! বড়টাও তখন বায়না জুড়বে! 

বহ্নি বলে, দু'জনকেই তো আনতে পারতিস!

রক্ষে করো! ওদের নিয়ে এলে ওই দিকেই তাকিয়ে বসে থাকতে হবে! তোদের সঙ্গে কথাই বলা হবে না!

তা কেন! তুই কথা বলতি। আমরা সবাই মিলেই ওদের সামলাতাম! উর্বী চটে ওঠে।

ছাড় তো! সারাক্ষণ ভালো লাগে না। কতোদিন পর যে আমি একটু নিজের মতো বেরোলাম!

আচ্ছা বল কি খাবি? অর্ডার দিতে হবে তো? ক্রন্দসী তাড়া লাগায়।

বহ্নি বলে,আপাতত একটু ড্রিংকস নেওয়া যাক। আর কিছু স্ন্যাকস। দাঁড়া, আমি অর্ডার দিচ্ছি।

ওদিকে শুষ্মার ফোন বেজে উঠেছে, কি হয়েছে বন্ধু! তুমি কাঁদছ কেন! দিনদিন বকেছে! ওলে বাবা লে! আচ্ছা ঠিক আছে। আমি দিনদিনকে গিয়ে বকে দেব। তুমি এখন নিজের মতো খেলা করো। বন্ধু তো আজকে ছোটোবেলার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছে! হ্যাঁ,ওকে,তুমি ঘুম থেকে উঠেই বন্ধুকে দেখতে পাবে।ঠিক আছে! শুষ্মা ফোন কেটে দেয়। 

বহ্নি বলে, ও মা কি মিষ্টি! তোর মেয়ে তোকে বন্ধু বলে ডাকে!

শুষ্মা হাসে।

স্রবন্তী বলে, কেন রে বন্ধু ডাকতে শিখিয়েছিস? মা বলে ডাকলে কতো ভালো লাগে বল তো!

ক্রন্দসী বলে, মা বলে ডাকলে যে আবার বাবার খোঁজ পড়বে? তখন সামলাবি কি করে!

শুষ্মা বলে, হ্যাঁ রে, এমনিতেই সিংগল মাদার বলে নানা কথা শুনতে হয়! আমি অবশ্য বিশেষ পাত্তা দি না!

বহ্নি অর্ডার দিয়ে এসে কথায় যোগ দেয়, আসলে কি বলতো, আমাদের সমাজটা এখনও অতটা উন্নত হয়নি যে সিংগল মাদারকে মেনে নিতে পারবে! 

ঠিকই। ফার্টিলিটি সেন্টার থেকে যেদিন প্র্যাগনেন্সি পজিটিভ রিপোর্ট টা আনলাম সেদিন বাড়িতে বাবা-মা যেভাবে রিঅ্যাক্ট করেছিল, ভাবতে পারবি না। 

উর্বী বলে, ওই সময়টা শুষ্মা নিজের বাড়িতেই এতটা একঘরে হয়ে গেছিল, বল! উর্বী হাত বাড়িয়ে দেয় শুষ্মার দিকে। আমার সঙ্গে তখন ওর রেগুলার কথা হতো!

হ্যাঁ,উর্বী ওই সময়টা খুব সামলে ছিল আমাকে। বাবা তো দ্যুতির মুখ দেখে প্রায় দশ মাস বাদে আমার সঙ্গে কথা বলেছিল।

কাকিমা তবু খেয়াল রাখতেন। উর্বী যোগ করে।

হ্যাঁ,মা খানিকটা বাধ্য হয়েই... আর শেষের দিকে জল ভেঙে খুব ক্রিটিক্যাল হয়ে গেছিলাম। তখন আর না এগিয়ে এসে উপায় ছিল না।

এখন বাড়ির পরিস্থিতি কেমন রে? ক্রন্দসী জিজ্ঞাসা করে।

এখন তো দ্যুতিকে একমুহূর্ত চোখের আড়াল করতে পারে না ওর দাদাই আর দিনদিন! সারাদিন ওকে নিয়েই কাটে!

তুই এতোটা রিস্ক না নিয়ে তো  একটা বাচ্চা এডপ্ট করলেই পারতিস! আমি তো শেষ অবধি তাই করলাম! বহ্নি বলে।

না রে, আমি ভীষণ ভাবে আমার নিজের বাচ্চা চেয়েছিলাম। যার মধ্যে আমার ছায়া দেখতে পাব আমি! 

এডপ্টেড চাইল্ডের মধ্যেও তুই নিজেকে খুঁজে পেতিস শুষ্মা। এই তো আমাকে আর ঋতকে রাস্তায় দেখে সকলেই মা-ছেলে বলে মিলিয়ে নেয়! বহ্নি ড্রিংকসে চুমুক দেয়। বলে, বাচ্চা তো কাদার দলা রে! যে পরিবেশে রাখবি তেমন করেই তৈরি হবে!

কথাটা কিছুটা ঠিক। সবটা নয় রে!  ছেলে-মেয়ের মধ্যে বংশের কারো জিন কাজ করবেই। এই দেখনা, আমার বর তো শান্ত।সাত চড়ে রা কাড়ে না! কিন্তু ছোটোটার যা রাগ, ভাবতে পারবি না! যেমন রাগ,তেমন জেদ। পুরোটা আমার শ্বশুরের মতো! স্রবন্তী ফিংগার চিপস খেতে খেতে বলতে থাকে।

আমারও সেটাই মনে হয়, উর্বী বলে। আমার বাচ্চাটা ওভাবে চলে যাওয়ার পর অনেকেই আমাকে এডপ্টেশনের কথা বলেছিল। কিন্তু আমার বর রাজি হয়নি। 

তোরা নিজেরা আর চেষ্টা করলি না কেন? ক্রন্দসী জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় উর্বীর দিকে।

করেছিলাম রে। কিন্তু... আমার ফার্স্ট প্র্যেগনেন্সির সময়ই ওভারিতে সিস্ট ছিল। ফলে আর...

তবে যাই বলিস না কেন! এডপ্টেড চাইল্ড সম্পর্কে তোদের ধারণাটা ঠিক নয়! বাচ্চা বাচ্চাই হয় রে! ঠিকমতো শিক্ষা-সুবুদ্ধি দিতে পারলে বাচ্চার মধ্যে জন্মগত কোনো প্রবণতা থাকলেও সে সেটা ওভারকাম করে যেতে পারে।

না রে বহ্নি, মেরিট, স্বভাব সব দিক থেকেই একটা পার্থক্য থেকে যায়! যদি ভালো হলো তো হলো! কিন্তু যদি খারাপ হয়,তখন সান্ত্বনার জায়গাটাও থাকে না! উর্বীকে বিষন্ন দেখায়।

 ্ই্্ই্ই্্্ই্্ই্ই্্ই্্ই্ই্্্ই্্ই্ই্্ই্্ই্ই্্্ই্্ই্ই্্ই্্ই্ই্্্ই্্ই্ই

স্রবন্তী বলে, তোদের ফাঁকা ফাঁকা লাগে না? সাধারণত তোদের মতো কাপলদের মধ্যে কিন্তু এডপ্ট করার প্রবণতা টা বেশি থাকে!


অয়ন ওর কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। বেশির ভাগ সময়ই ট্যুর থাকে ওর। আমিও ওর সঙ্গে সঙ্গে ঘুরে বেড়াই। কখনো ইচ্ছে না হলে মা'র কাছে গিয়ে থাকি। উর্বী স্ট্রটাকে ড্রিংকসের গ্লাসে নাড়াচাড়া করতে থাকে।

শুষ্মা আর ক্রন্দসী একে অপরের দিকে তাকায়। খানিকটা কথা ঘোরানোর জন্যই শুষ্মা বলে ওঠে, তোর কি খবর বলতো ক্রন্দসী? বিয়ে করছিস কবে?

তোদের মনে হয় আমি বিয়ে করবো আর!

স্রবন্তী বলে, কেন নয়! বিয়ের বয়স কি তোর পেরিয়ে গেছে?

আজকের দিনে কি আর সত্যি সত্যি বিয়ের বয়স বলে কিছু হয়! বহ্নি বলে।

শুষ্মা বলে দাঁড়া দাঁড়া, অনেকক্ষণ তো হলো! লাঞ্চ করবি তো! আগে অর্ডার টা দি। তারপর না হয় ক্রন্দসীর পেট থেকে কথা বার করা যাবে!

উর্বী আর শুষ্মা মিলে খাবার অর্ডার করতে যায়। স্রবন্তী বলে শোন না, এই সুযোগে আমি একটু ওয়াশরুম থেকে আসছি। 

কিছুক্ষণের মধ্যেই গরম গরম খাবার হাতে উপস্থিত হয় ওরা। স্রবন্তীও চলে এসেছে। বহ্নি বলে, কি রে! আমরা তো এখনো অবধি একটা ছবিও তুলিনি। শিগগিরি সেলফি তোল! আর শোন স্বপ্না দিকে কিন্তু পাঠাতেই হবে ছবি উইথ ক্যাপশান... পাঁচভূত এখনো একসাত!!

সবাই হৈ হৈ করে ওঠে। ওদের কলরবে আশেপাশের লোকজন বারবার দেখতে থাকে। উর্বী বলে,কি রে তোরা! স্কুল পেয়েছিস না কি! এতো চেঁচালে আমাদের গার্ড দিয়ে বার করে দেবে।

ধুর! ভয় পাচ্ছিস কেন! এতো দিন পরে দেখা হলো,একটু হৈচৈ করব না! 

স্রবন্তী বলে, শোন, বেশি কিছু বলতে এলে আমরা ছোটো বেলার মতো আবার অপারেশন চালাবো! এই তোদের মনে আছে, নাইন সির কতগুলো মেয়ে এসে মধুজা কে ভয় দেখিয়েছিল!

শুষ্মা বলে হ্যাঁ, হ্যাঁ, কি যেন হয়েছিল ?

আরে মনে নেই নাইন সির একটা মেয়ের দাদার সঙ্গে মধুজা লুকিয়ে প্রেম করছিল।

উর্বী বলে, হ্যাঁ মনে আছে আমরা পাঁচভূত ওদের ওপর কেমন চড়াও হয়েছিলাম।

 হ্যাঁ, হ্যাঁ,ঠিক, বহ্নি তুড়ি দিয়ে হেসে ওঠে।

স্রবন্তী বলে,তাহলে আমরা তো আজকেও একসাথে। কেউ কিছু বলুক দেখি!

ক্রন্দসী বলে, হ্যাঁ,কেউ কিছু বললেই স্রবন্তী টলটল করতে করতে ওদের সঙ্গে ঝগড়া করতে যাবে!

সবাই একসঙ্গে হেসে ওঠে।

ওরা গুছিয়ে বসে খেতে শুরু করে। শুষ্মা বলে,এই মধুজার খবর কি রে!

মধুজা তো বাইরে থাকে। অস্ট্রেলিয়ায়। দুটো বাচ্চা। স্রবন্তী নান পরোটা ছিঁড়তে ছিঁড়তে জবাব দেয়।

ও, ওরও দুটো। গীতালিরও দুটো জানিস তো। বহ্নি যোগ করে।

 কোন গীতলি?

আরে,ওই যে রে, মাধ্যমিকে প্লেস পেলো। উর্বীর প্রশ্নের উত্তরে জবাব দেয় বহ্নি।

ও, ও তো ইউ এস এ তে থাকে, তাই না!

হ্যাঁ রে, ও ,সমীপর্ণা, ওরও দুটো। বাইরে যারা আছে তাদের বেশির ভাগেরই দুটো বাচ্চা। শুষ্মা জানায়।

আসলে কি জানিস তো, এখন যে লাইফস্টাইলে আমরা অভ্যস্ত হচ্ছি ধীরে ধীরে সেখানে তো একজন মানুষ আরেকজনের থেকে চূড়ান্ত বিচ্ছিন্ন, তাই না! বন্ধুত্ব ব্যাপারটাও আজকাল আর তেমন স্ট্রং নয়।অন্তত সিবলিংস থাকলে তারা একে অপরের মনের কাছাকাছি হলেও হতে পারে।

ঠিক বলেছিস ক্রন্দসী। আমি তো ওই জন্যই দুটো বাচ্চা নিলাম। অন্তত আমাদের অবর্তমানে ওরা দুজনে দুজনের জন্য থাকবে। স্রবন্তী দীর্ঘশ্বাস ফেলে।

ইউরোপ, আমেরিকার দেশগুলোতে তবু দুটো বাচ্চা নেওয়া যায়। ওদের ওখানে কত রকম ফেসিলিটি রয়েছে। আর আমাদের এখানে জনসংখ্যার অবস্থাটা ভাব! ক্রন্দসী বলে,দেখবি একটু শিক্ষিত সমাজে কিন্তু একটা-দুটোই থাকে। আর ফুটপাতগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখ? পালে পালে জন্মাচ্ছে। সব কিন্তু হয় ভিক্ষে করবে ,না হয় শিশুশ্রমিক!

উর্বী বলে, লোকাল এনজিওগুলোতে খোঁজ নিলেই জানতে পারবি শুধু কলকাতা শহরেই এই সংখ্যাটা কত!

ক্রন্দসী বলে, জানিসতো, আমি কলেজের পরে এইরকম কিছু এনজিও তে যাই, বাচ্চাগুলোকে পড়াই... ভালো লাগে। ওখানেই শুনছিলাম এতো বাচ্চা দিনের পর দিন অবহেলায় বড় হচ্ছে যে আমরা যদি একটু এগিয়ে আসি ওরা তাহলে অন্তত লেখাপড়াটা করতে পারে!

ও, তুই আবার কলেজের পর এসব করিস না কি!

ক্রন্দসী স্রবন্তীর দিকে তাকিয়ে বলে, হ্যাঁ, ভালো লাগে ওদের কাছে যেতে।

তা তুই তো নিজেই একজনকে এডপ্ট করলে পারতিস?

ক্রন্দসী বলে, না রে বহ্নি, একজনকে যত্ন করে বাড়িতে আনলেই তো আর সমস্যাটা মিটবে না! বললাম না সংখ্যাটা অগুন্তি।

না,সে তুই ওদের জন্য যতটা পারিস কর না, তার সাথে তোর নিজের বলেও কেউ থাকল! কাকিমার পর তুই তো একদম একা! শুষ্মা ক্রন্দসীর পিঠে হাত রাখে।

না রে, একটা বাচ্চার দায়িত্ব ওভাবে নেওয়া আমার পক্ষে কঠিন। আমি তো আমার লেখালেখি,কলেজ, এনজিও এসব নিয়ে ব্যস্ত থাকি। বাচ্চাটাকে সময় দেব কি করে!

আরে কাকিমা তো আছে! স্রবন্তী টেবিলে চড় মারে।

, মায়েরও তো বয়স হয়েছে! মা'র পক্ষে আর সম্ভব না। তাছাড়া যতদিন বাড়িতে থাকবে ততদিন একরকম! যখন স্কুলে ভর্তি হবে! বা পাশাপাশি একস্ট্রা ক্যারিকুলার এক্টিভিটির জন্য নানা জায়গায় নিয়ে যেতে হবে তখন মা কি করে পারবে! আর আয়ার হাতে আমি বাচ্চাকে ছেড়ে দেব না। সত্যি কথা বলতে, সারাদিন বাদে বাড়ি ফিরে বাচ্চার ধকলটা আমার পোষাবে না!

এভাবে বলছিস কেন রে! দেখনা আমার দুটো তো সারাদিন মারপিট, দুষ্টুমি করেই চলেছে। আমিও হয়তো রাগের মাথায় দু-চার ঘা বসাই। কিন্তু দিনের শেষে যখন মা বলে জড়িয়ে ধরে কোলের মধ্যে মুখ গুঁজে দেয়, তখন অদ্ভুত একটা স্যাটিসফেকশান আসে।

দেখ স্রবন্তী,কিছু মনে করিস না,কথাটা আমি তোকে বলছি না, আমার পরিচিত আরো কতগুলো পরিবারের সূত্রেই বলছি, বাচ্চা কিন্তু শুধু স্যাটিসফেকশন বা আদিখ্যেতা দেখানোর জন্য নয়।একটা বাচ্চাকে বড় করতে গেলে অনেক প্ল্যানিং লাগে, ম্যাচিউরিটি লাগে। আমি এক বাবা-মাকে চিনি যারা পুরোপুরি আনপ্ল্যান্ড ওয়েতে একটা বাচ্চা এনেছে; বাচ্চাটাকে কি খাওয়ানো প্রয়োজন, কিভাবে খাওয়াতে হয় তাই তারা জানে না! সারাদিন শুধু বাচ্চার ভিডিও তুলে চলেছে! এভাবে বায়োলজিক্যালি বাবা-মা হয়ে একটা বাচ্চাকে বিনা যত্নে বড়ো করার তো কোনো মানে নেই! আর একটা বাড়িতে আমি দেখেছিলাম জানিস, বাচ্চা কে নিয়ে বাবা-মা গবেষণায় নেমেছে। তাঁরা বাচ্চাকে ভালো-মন্দ কোনো শিক্ষাই দেয় না। বাচ্চা নিজেই নাকি বড়ো হতে হতে সেসব বুঝে নেবে।তার ফলটাও হয়েছে তেমন! বাচ্চাটা অসভ্যের চূড়ান্ত। কারো কথা শোনে না। ক্রন্দসী উত্তেজিত হয়ে পড়ে।

বহ্নি বলে, ঠিকই বলেছিস। আদর, যত্ন তো একটা ব্যাপার বটেই। সেই সঙ্গে যত বড়ো হবে তত মানসিকতার পরিবর্তন হবে। বিশেষ করে অ্যাডোলেসেন্সের পিরিয়ডটায় একটা বাচ্চার প্রতি অনেকটা অ্যাটেনশন দিতে হয়।সেটা ওয়ার্কিং মাদারদের পক্ষে বেশ অসুবিধার।

সত্যি কথা বলতে কি আমিও কিন্তু সিংগল মাদার হিসেবে আমার বাবা মায়ের ওপর এ ব্যাপারে পুরোপুরি ডিপেন্ডেন্ট। শুষ্মা মাথা ঝাঁকায়।

উর্বী বলে,দেখ একদিক থেকে ক্রন্দসীর কথা কিন্তু ঠিক। একটা বাচ্চার জন্য ইনভেস্ট না করে যদি সেই ইনভেস্টমেন্ট ও পরিশ্রমে অনেকগুলো বাচ্চাকে হেল্প করা যায় সেটাই বেটার।

আর কি জানিস তো, দিনের শেষে আমরা সবাই একা।আজ তোরা যে সন্তানদের বড় করছিস নিজেদের সবটা দিয়ে একদিন সে আরো ভালো কিছু করার জন্য তোদের ছেড়ে এখানে ওখানে চলে যেতে বাধ্য হবে। তোরাও কোনোভাবেই তার উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবি না। তখন তো সেই একা! এই একাকীত্ব আমাদের মেনে নিতেই হবে রে। ক্রন্দসী স্রবন্তীর হাতে হাত রাখে।

স্রবন্তী মাথা নিচু করে চুপ করে থাকে।

বহ্নিই বলে ওঠে, সত্যি দেখ, আমাদের ছোটোবেলাটা নিয়ে কি আমাদের বাবা-মারা এতো জটিল করে ভেবেছে! অথচ আমরা ভাবছি, ভাবতে বাধ্য হচ্ছি।পৃথিবীটা কেমন পাল্টে পাল্টে যাচ্ছে।

ওরা সকলেই কেমন থম মেরে থাকে কিছুক্ষণ। নিজেদের অসহায়তাগুলো নিয়ে নিজেদের মনে নাড়াচাড়া করতে থাকে। এক বেঞ্চে ঠেসেঠুসে বসা এই পাঁচটি মেয়ে এদের আগামী প্রজন্মের জন্য কোন্ পৃথিবীকে রেখে যাচ্ছে তা নিয়ে বিপন্ন বোধ করে। এই প্রতিযোগিতার দুনিয়ায় তাদের ছেলেমেয়েরা সত্যি আর কোনো বন্ধুকে খুঁজে পাবে কি না তারা জানে না। পাঁচবন্ধুকে পাওয়া তো দূরস্ত! সেই বিচ্ছিন্ন এককের কি সেই মনের জোর থাকবে যার দৌলতে তারা একা একাই পেরোতে পারবে জীবনের বন্ধুর পথ। জানে না;  তারা জানে না। তাই শুধু আশঙ্কা আর আতঙ্ককে সম্বল করেই তাদের গড়ে তুলতে হবে তাদের আগামী প্রজন্মকে; আরো এক ক্ষণভঙ্গুর প্রজন্মের জন্য।





রবিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২১

জয়তী রায় ( মুনিয়া)

                                                   


 



মস্তিষ্কের ভুল ভুলাইয়া / মানব জীবনের অভিশাপ

************

   দ্বিতীয় ভাগ


___________________

 দ্বিতীয় ভাগে আলোচ্য বিষয় হবে, কিছু ঘরোয়া টিপস। প্রাচীন সনাতনী বিলুপ্ত প্রায় কিছু অভ্যেস। যেগুলি সাহায্য করবে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে। 

*************

ঋষি বলতেন: যে কোনো অভ্যাস ছোট থেকেই তৈরি করো। শরীর এবং মনের বিদ্যায় অভিজ্ঞ ঋষিদের কাছে বালক বয়স থেকেই ধ্যান ছিল জরুরি।  বালক যখন বয়ঃপ্রাপ্ত হবে, অভিভাবকের বেড়া সরে যাবে, তখন যেন সাফল্য আর ব্যর্থতা দুটোই বহন করার মত শক্তি ধারণ করতে পারে। ধ্যানের মধ্যে দিয়ে উজ্জীবিত হতে থাকে মস্তিষ্কের কোষকলা।

  বিজ্ঞান বলে, ভুলে যাওয়া  মস্তিষ্কের রোগ। তার  কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়া। মস্তিষ্ক ক্ষমতা উন্নত করার প্রক্রিয়া ত্রিকালজ্ঞ ঋষিরা বলে গিয়েছেন। মানব জীবন সুন্দর করার জন্য নিরন্তর গবেষণা করতেন তাঁরা। হয়ত কালের প্রভাবে বিলুপ্তির পথে চলে গেছে সে সমস্ত উপায়। তবু, কিছু এখনো আছে। তার আগে , আরো একবার বলি, স্মৃতিভ্রংশ হল নিঃশব্দ হত্যাকারী। খুব ধীরে ধীরে আসে। কাজেই প্রতিদিন নিজেকে একবার করে দেখতে হবে।  হ্যাঁ বন্ধু! নিজেকে আগে বাঁচিয়ে তারপর অন্যের জন্য ভাবতে হবে। 

লক্ষ্য রাখতে হবে:

 :একদিনে কতটা মনে রাখতে পারছি। কিছুক্ষণ আগের কথা ভুলে যাচ্ছি কি না?

: রান্নার রেসিপি, টেলিফোন নম্বর , ব্যাংক কার্ডের তথ্য ভুলে যাচ্ছি কি না? 

: ফোন নম্বর ভুলে যাওয়া অথবা নাম মনে করতে না পারা। 

: সকালের ওষুধ খাওয়া হল কি না? কিছুতেই মনে পড়ছে না। 

: কথা বলার সময় সঠিক শব্দ খুঁজে পাওয়া যায় না। 


    অবহেলা একেবারে নয়। যৌবন মানে হল ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা। তাকে ঠিক মত কাজে লাগাতে হবে। যৌবনে অনেক কিছু করার ক্ষমতা থাকে। সেটাকে কাজে লাগিয়ে বৃদ্ধ বয়সে লড়াই করার ক্ষমতা অর্জন করতে হয়।

***********

  তাহলে উপায়:

****************

১. জীবনের সঙ্গে যুক্ত করে নেওয়া হোক অ উ ম শব্দটি। ওম। ধর্মের সঙ্গে যোগসূত্র খোঁজার প্রয়োজন নেই। সকালে পাঁচ বার করে সঠিক উপায়ে করলে নিজেই নিজের পরিবর্তন টের পাওয়া যাবে। 

________

২. সঠিক সঙ্গ

     নানা ধরণের লোকের সঙ্গে মিশতে হবেই। কিন্তু কেউ একজন থাক, যে এনার্জি সঞ্চারিত করতে পারে। সে যে কেউ হতে পারে। বাড়ির কাজের লোক হওয়া বিচিত্র নয়। তেমন লোক যেন সঙ্গে থাকে। একজন চরম সফল মানুষকে এখন জানি, যিনি ঘরের মেঝেতে হামাগুড়ি দিয়ে চলেন। সমস্ত ভুলে গেছেন। জীবন শুধু সাফল্য দিয়ে মাপলে চলবে না। সুখী হতে হবে আগে। এই ব্যালেন্স না জানলে নিজের খিদের মুখে নিজেকেই আহুতি দিতে হবে এক সময়। 

____________

৩. সঠিক ব্যায়াম

     ব্যাংককে দেখতাম, বিকেল হলেই ছেলে বুড়ো পিল পিল করে বেরিয়ে পড়ছে খেলতে। সেখানে কলকাতায় চলছে ফোন কালচার। আর অবান্তর গসিপ। রাজনীতি ইত্যাদি। খেলার মাঠ বন্ধ করে গড়ে উঠছে মস্তবড় বিল্ডিং। কোথায় খেলবে বাচ্চাগুলো? মা বাবা বিকেলে হাঁটবে কোথায়?

শরীরের ব্যায়ামের সঙ্গে সঙ্গে মনের ব্যায়াম জরুরি। নিয়মিত গান কেউ শুনছে না। আগে আড্ডা হত। সেমিনার হত। মস্তিষ্কের চর্চা হত। এখন সাহিত্যসভা হয়। একটা করে গল্প কবিতা পাঠ করে চলে যায় লোক। সেগুলো যদি একটু অন্যভাবে ব্যবহার করা যায়। আলোচনা সভা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ায়। সঙ্গীত নাচ ছবি আঁকা ... ঢিমে তালে চলা মস্তিষ্ককে উত্তেজিত করে তুলতে পারে। 

__________

৪. সূর্য ডুবে যাওয়ার পরের নোটবই। 

**********

 নিজের সারাদিনের কাজ। ছোট্ট করে লিখে ফেলা।  স্মৃতিশক্তি বাড়বে। আত্মবিশ্বাস বাড়বে। একটা নোট বুক থাকুক। টুক করে লিখে ফেললেই হয়। সুন্দর যৌন জীবন সাহায্য করে ভালো থাকতে। যৌনতা কিন্তু টনিক।

৫. ধ্যান করা

***********

 ধ্যান নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা রকম জটিলতা কাজ করে। যেন ওটা একটা বিশেষ কাজ। কঠিন কাজ। বুড়ো বয়সের কাজ। অনেকে আবার লজ্জারও কাজ  ভাবেন। 

দিনের যে কোনো সময় যে কোনো অবস্থায় করে ফেলা যায় ধ্যান। যেমন পিপাসা পেলে জল খায় লোক। তেমনি সমস্যা হলে একটু নিজের ভিতর তাকাতে হয়। উত্তর ভিতরেই আছে। অমুক করব না তমুক? যাব কি যাব না? 

ছোট্ট ছোট্ট ডিসিশন। উত্তর পাওয়া যায় নিজের কাছ হতে।

 জাদু আঙ্গুল

*************

. হাতের আঙ্গুলের সঠিক ব্যবহার। 

সারাক্ষণ মোবাইল বাটন টিপে চলা ছাড়াও আঙ্গুলের কাজ আছে। চোখ মন মস্তিষ্ক আঙ্গুলের সঠিক মুদ্রায় সাড়া দেয়। 

তর্জনী ও বুড়ো আঙ্গুল লক করুন মাঝে মাঝে। অজস্র স্নায়ুর অন্তিম অংশ এখানে থাকে। আমরা খেয়াল করিনা। আমাদের নিজস্ব শক্তি বাইরে বেরিয়ে। যাচ্ছে। এই লক সিস্টেম আবার শক্তিকে নিজের মধ্যে ফিরিয়ে আনে। প্রাণিক সার্কিট তৈরি করতে সাহায্য করে। এ নিয়ে পরে বিস্তারিত আলোচনা করব। 

 আর একটা সহজ মুদ্রার কথা বলে আজকের আলোচনা শেষ করব। 

 :জ্ঞানমুদ্রা

 তর্জনী ও বুড়ো আঙ্গুলের মাথা দুটি যুক্ত করুন। দুই হাতের। বৃত্ত তৈরি করুন। অন্য আঙ্গুলগুলি সোজা রেখে , দুই হাত দুটি হাঁটুর উপর রেখে মনে মনে পাঁচবার অ উ ম ভেঙ্গে ভেঙ্গে উচ্চারণ করুন। 

 এই মুদ্রা স্মরণশক্তি ও একাগ্রতা  বাড়িয়ে দেবে। ধৈর্য বাড়িয়ে দেয়। বালকবয়স থেকে এই মুদ্রা করলে খুব ভালো কাজ হবে। 

হাতের আঙ্গুলের অসীম শক্তি নিয়ে আলাদা লেখা লিখব। এখন , লক আর জ্ঞানমুদ্রা এই দুটোই নিয়মিত করলে ফল লাভ হবে। 

***********

ভারতবর্ষের আছে অসীম রত্নভান্ডার। খাদ্য তালিকায় ফাস্ট ফুডের দখল দারি কমিয়ে নিয়ে আসা যাক ব্রাহ্মীশাক। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলায় প্রভূত পরিমাণে উৎপন্ন হয় অমৃত শাক ব্রাহ্মী। এই শাকে উপস্থিত আছে। ব্যাকো সাইড নামে এক ধরনের রাসায়নিক জৈববস্তু। এটি ব্রেন টিসুর ক্ষত সারিয়ে তাদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। মনে আছে, আমার এক পিসি, আমার মাকে ঠাট্টা করে বলেছিল: ঘাস পাতা খায় গরু। অর্থাৎ মা এত ঘাস পাতা খান! তিনি গরু। অপমান করল আর কি! আমার মা ৯২ বছর বয়সে সজ্ঞানে একদিনের মধ্যে মৃত্যু বরণ করেন। স্মৃতিশক্তি ঈর্ষণীয় ছিল। মায়ের রেগুলার ডায়েট ছিল এই শাক। যেদিন মারা গেছেন, লাঞ্চ খেতে পারেন নি। সেদিন ও মেনুতে ছিল ব্রাহ্মীশাক।  

এখানে উপস্থিত অনেক ধরণের কার্যকরী উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র হিপোকমপাস অংশটির ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়। ব্রেনের hippocampus অংশটির কি ক্ষমতা গুগল করে জেনে নাও বন্ধুরা। আমাদের মা বাবাদের গুগল ছিল না। ছিল পরম্পরা জ্ঞান। যা এখন নষ্ট হতে চলেছে। 


ভুলে যাওয়া সমস্যা ক্রবর্ধমান।আগে প্রবীণদের রোগ ভাবা হত, এখন সব বয়সীদের হয়। সাবধান হতেই হবে। এখন থেকেই।

নীলাদ্রি দেব

                                                   


                


  
এই সপ্তাহের কবি নীলাদ্রি দেব।জন্ম ১৪এপ্রিল, ১৯৯৫ কোচবিহার (পশ্চিমবঙ্গ)।শারীরবিদ্যায় স্নাতক৷যুক্ত আছেন শিক্ষকতায়৷
কবিতাবই- ধুলো ঝাড়ছি LIVE, জেব্রাক্রসিং ও দ্বিতীয় জন্মের কবিতা, এবং নাব্যতা. 
সহ সম্পাদিত পত্রিকা- ইন্দ্রায়ুধ, বিরক্তিকর

ডায়েরি 

নীলাদ্রি দেব 

এক. 
চৈত্রে হাওয়া ছোটে খুব. ধুলো ওড়ে, শুকনো পাতা. এলোমেলো একটা জীবন আরেকটু বেঁধে, গুছিয়ে রাখতে চেষ্টা করি. কিন্তু... এরপরও আলোর অধিকাংশ জুড়েই অন্ধকার. কত ছবি তৈরি হয় রোজ. ছায়া বাড়ে, ছায়া কমে. নিজস্ব ছায়া. যা বইতেই হয় অভ্যেসবশত.  

দুই. 
কত নিঃশব্দ পথ পেরিয়ে যাচ্ছি 
মুখোমুখি বলতে না পারা কথারা 
                    ভিড় করে আসছে 
নিচু হয়ে আসছে মেঘের মতো 
আর শাদা কালো জুড়ে 
   গলে যাওয়া মুখোশ, না মেলা অঙ্ক 

আমি কি আমার ভেতরে নিথর 
আমি কি ভাসছি আশ্চর্য আকাশ 

প্রমাণ আয়তন তুলো টেনে নিচ্ছে 
               যাবতীয় নির্মাণ কৌশল

তিন. 
রঙ, রোদ মিলেমিশে একটি সামান্য 
                                 যাত্রাবিরতি
স্তব্ধতারও ডাকনাম থাকা আবশ্যিক 
অথচ আলাপ, স্পর্শহীন দুপুর 
কার্নিশে বোগেনভেলিয়া ছড়িয়ে আছে 
 ফড়িঙের ডানায় সামান্য জীবনের ছায়া

চার.
দরজা বন্ধ করে দিন 
আলো ও আলোর টান এক নয় 
আপাতত দূরত্ব বজায় রাখতে শিখুন 
বিধি ও নিষেধের মাঝে হাইফেন 
সুতরাং ব্যক্তিগত জীবনের ওপর 
                          রাষ্ট্রীয় থাবার ছায়া

পাঁচ. 
সবটা বিক্রি হয়ে গেলে আপনার ঘুম পাবে
মালিকানাহীন জীবন বয়ে বেড়াচ্ছেন 
অথচ বিশ্বাস করছেন না 
        মালিকও মৌলবাদের পাঠ দেন 
আপনি নাইটগাউন খুলে রেসমাঠে এলেই 
  সমস্ত ঘোড়া ফিনিশিং লাইনের দিকে দৌঁড়োবে
জকির চোখের পলকে খসে যাবে টুকরো জীবন

ছয়. 
খসে যাচ্ছে পলেস্তারা, পুরনো শেকড় 
অবশিষ্ট কঙ্কাল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কেউ 
অস্তমিত সূর্যের হাসি দেখছে ওর ঘুলঘুলি
অ্যান্টেনার পূর্ব পশ্চিম থাকে 
উঠোনের নির্দিষ্ট ব্যাসার্ধ 
তবু তুলসীমঞ্চে আলো জ্বালানোর কেউ নেই
এমন একটি আবহাওয়ার শেষে 
                  ভুল করে সিন্ডিকেট লিখে আসি 

সাত. 
গুহাচিত্রের পাশে কোনও প্রবেশ বা বাহিরপথ 
                                               লেখা ছিল না
অতএব গুপ্তঘাতক বিষয়ে রচনা লেখা হয়নি 
মাছের চোখ নিয়ে ততটা আগ্রহী নয় বুলেট 
শার্টটা ইন করে নিন 
কবির আস্তিনে বারুদ রাখা কবে বেআইনি হয়েছে!
রাজনৈতিক পতাকার নিচে 
                        নীল জলওলা বোতল বেঁধে রাখুন
যতিচিহ্ন ঠিক করতে গিয়ে হারিয়ে ফেলবেন না
                                                           শিরোনাম

আট. 
গাছে ফুল এলেই বা কী, না এলেই বা! 
পত্ররন্ধ্র একটি গোপন আস্তানা 
ডোরবেল ও ডোরম্যাট-এর পর লম্বা করিডোর 
পেছনের বারান্দা, বাগান পেরিয়ে ডুয়ার্সের ঝোরা 
বয়ে যাওয়া জলস্রোতের পর শ্মশান 
শ্মশানের তীব্র চতুর্ভুজে শ্যাওলা লেগে আছে
এভাবেই সমস্ত শুরু ও শেষের মাঝে সাঁকো I 
                                              কোন সেতু নেই I

নয়. 
আপাতত কথা বন্ধ থাক 
বিস্তারিত খবরের চক্করে ব্রেকিং নিউজকে 
                               অস্বীকার করবেন না
হ্যারিকেনের আলো পড়ে এসেছে, বললে... 
       টাইম মেশিন বিষয়ক সেমিনার শুরু হয় 
এসব প্রতিবর্ত কাজ
সহজাত 
কিন্তু ঐ যে সুতো গুটিয়ে রেখেছেন, 
    একবার খুলে দিলে খেলা বদলে যেতে পারত
যদিও টস একটি অজুহাত 
পিচের পাশে ঘাস ক্রমে দীর্ঘ হচ্ছে, শ্বাসও 

দশ. 
এলোমেলো অক্ষরের শেষে 
                  বন্ধনীকে বন্ধ করবেন না 
সূত্র ধরে সব অংক মেলে না 
যা থেকে যায়, 
    অন্য একটি জটিল সমাধানের সুতো
বা সুতোর একক



রবিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২১

সোনালী মিত্র

 




এই সংখ্যার কবি সোনালী মিত্র।জন্ম ১৯৮৬ সালের ১৮ ই নভেম্বর নবদ্বীপ নদীয়ায়।এম এ পাশ করার পর কিছুকাল স্কুল শিক্ষকতায় নিযুক্ত থাকলেও বর্তমানে দিল্লিবাসী।লেখালিখি শুরু সেই স্কুল পত্রিকা থেকেই।বর্তমানে বহু পত্রিকায় লিখে চলা। সাহিত্য মূলক পত্রিকা "মায়াজম" এর হোতা তিনিই। প্রিন্ট এবং ওয়েব দুটি ভার্সনেই প্রকাশ হয়ে থাকে পত্রিকাটি। " স্পর্ধাকাল" তার একমাত্র কাব্যগ্রন্থ।


১) রানওয়ে / 


ইদানিং মৃত্যুর পর আর জন্ম নিতে ইচ্ছে করে না

জন্ম মানেই একটা অজানা হারেম থেকে

লোকায়ত অদৃশ্য রাজা- বাদশার হারেম ! জন্ম নিলেই

সেই তো ঘোড়া , সেই তো হাতি, দাঁতে শান দেওয়া জন্তু জানোয়ার !

সেই তো হাজার ওয়াট মৌলবাদী লোলুপ থাবা

এর আগে কিছু নেই , পরে চিতাকাঠ

ছাই , ধোঁয়া , কার্বন

যুদ্ধ যুদ্ধ যুদ্ধ

অনর্গল শ্বাসে মিথেন।

নদী ভেসে যাওয়া অসময়ের বৃষ্টি

শূন্য রানওয়ে

কয়েক কয়েক কয়েক কোটি হায়না দৌড়ে যায়

শূন্য মানুষের দিকে

শূন্যর দিকে…

************************************

নেই কাব্য 

না দানে , না ধ্যানে আমি কোথাও নেই । 
না রক্তদানে , না বন্যাত্রানে । না দয়ায় , না দাক্ষিণ্যে । 
আমি ঠিক যেন কোন ভূমিকাতেই নেই
না গরিষ্ঠ নায়কে না জ্ঞান বিতরণে
না পুজো প্যান্ডের ডালের হাতায় না সংসারের ছ্যাঁচড়া চাকায়
না মঞ্চের কেন্দ্রে না না  , মঞ্চের পিছনে । 
#
লোকে আতেল বলে , অধঃপতনে সিদ্ধ বলে । 
কবিতা পাঠের শেষে হাততালি দিতে ভুলে যাই বলে 
ইদানিং মহাকবিরা ডাকে না আর , 
কেরোসিনের লাইন দেখে আগুন আগুন চিৎকার করি বলে 
রেশনকার্ড থেকে নাম বাদ গেছে আমার । 
প্রতিদিন দরজা বন্ধ ঘরে আত্মহত্যামূলক শব্দ দিয়ে 
শরীরে পিন ফুটিয়ে প্রত্যক্ষ করি রক্ত ও শিরার ভালোবাসার গভীরতা 
মৃত্যুর অভিনয়ের নাম জীবন - দুবার খাতায় লিখে কাটি
আমি জন্মে নেই , মৃত্যুতেও নেই । শোকে বা আনন্দে 
শ্বাসে নেই , দীর্ঘশ্বাসে নেই , গাঁয়ে নেই শহরে 
রাস্তায় হেঁটে যাই , বাচ্চারা পাথর ছোঁড়ে
আমি পাগলে নেই , প্রলাপেও নেই । তবু লোকে পাগল বলে ...

**************************************
গন্তব্য

একত্রিশ বসন্ত ধরে হাঁটছি
দারুচিনি নির্জন দ্বীপে,প্রাক্তন প্রেমিকদের বলিষ্ঠ বাহুরেখায়
কত কি যেন তীব্রভাবে পেতে চেয়ে কান পাতে থাকি,
অচেনা বাঁশিওয়ালার সুরে!
আসলে কিই যে পেতে চাই গন্তব্যের দিকে!
শুনতে পেলাম কি পেলাম না,তুমি কি অসুস্থ বলে ডাকলে?

ওষুধের ধারাভাষ্য মিলিয়ে রোগ নির্ণয় লিখে রাখ,
অযথা জটিলতা নিয়ে,ক্ষয় নিয়ে,তার বিস্বাদ নিয়ে
বজ্র বিদ্যুৎ ছোটাও ঘরেলু ঝড়ে
আর বৃষ্টি মাখতে মাখতে ঘুমিয়ে পড় আফিম খেতে।
আমায়ও আফিম ঘুম দেবে?
প্রেমিকের তৃপ্ত অবগাহন লেগে থাকবে একজন্ম সুস্থতায়।

*******************************************



শাকম্ভরী 

তোমার চুলের রঙ সোনালি, তুমি নাবিক তুমি জলদস্যু।জন্মসূত্রে পাওয়া নীল চোখ নিয়ে পর্তুগাল থেকে ভেসেছিলে সমুদ্রে , ভরা তুফানের রাতে তোমার স্বপ্নে জেগেছিল ডাঙা।  বহুদিন পরে বহুপথ ঘুরে তোমার জাহাজ নোঙর ফেলেছিল নারকেল বনের কাছে ।
সেখানে ভাঙা মন্দিরঘাট ,বিষ্ণুসত্যের দেবতা উলঙ্গ দেবীর থান আর খালিগায়ে নেংটি পরা মানুষের জঙ্গল । তুমি প্রেমঅজ্ঞপুরুষ , দুপাশ দিয়ে সরে সরে যাচ্ছে গাংচিল , সওদাগরি নৌকা ,তুমি রেশম থেকে খুঁটে নিচ্ছ বাংলা অপভ্রুংশের গৌরব।তোমার নামের পাশে লেখা হচ্ছে  ভারত আবিস্কারক  ।
#

আমি চন্ডালজাতিকা ,  শবরীগন্ধী।গুঞ্জরীমালী শরীরের কোণে কোণে। ভিজে কাপড়ে লেপ্টে থাকা শ্যামলা বুকের ইউরোপিয়ান শিল্পকলা ,আমার দেহের ভিতরে লুকনো স্যান্ধভাষার পদটিকা, ভূমি দখলের চিহ্ন। 


তুমি ডোম্বিনীর অরণ্য ভাঁজে মুখ ঘষে খুঁজে চলেছ আমার পূর্বপুরুষের সংগ্রাম ,মোঘলের ধ্বব্জা , তোমার পূর্বজের অভিসম্পাত।এখানেই ভাসাও বজ্রা, খুঁজে নাও বঙ্গ, পুণ্ড্ৰ,হরিকেল,সমতট।

আমি গাছের আড়াল থেকে তোমাকে দেখি 
সমুদ্রনীলের মতো তুমি নেশা। তোমার স্ত্রী দূরে , ছেলেপুলের মুখ দেখনি কতকাল। কোন এক ঝড়জলের রাত এনে ফেলুক তোমার এই শ্যামলা নাভিপ্রভায়। পৃথিবীর সব সমুদ্রই নারীর বুকে ভিতরে থাকে , ভেসে যেও।


******************************************

নেশা

কবিতার সত্যমিথ্যা জানি না 
কবিতায় আছে ব্যথার প্রলেপ , যুদ্ধবাজ রাফেল 
গরুমারা অভয়ারণ্য , উন্মত্ত যৌনতা , নষ্ট বীর্যের ছলনা
কলের জলে বইয়ে দেওয়া বিকলাঙ্গ সন্তানের দায়ভার। 

এসব কোথা থেকে পেয়েছি জানতে চেও না 

তুমি কী চাও আমি জানি 
মিথ্যার এসব উপকরণ খাদ্য , তোমাদের সম্বল 
#

পাঠ কর পাঠক

আধখোলা যুবতীবুকের ডালিম  জানি , খিদে পেলে
ডানা ঝাপটানো পাখিকেও চিনি 

রাত নামলে যেসব চাঁদ সস্তা হয়ে যায় টাকার কাছে  
তাদেরও চিনি , যাদের লুকিয়ে রাখা যায় মানিব্যাগের ছায়ায়
#
পড় পাঠক পড়

তুমি মিথ্যে প্রতারণায় খুঁজে পাও রাধাঘাট , একাডেমি ও সম্মান

আমি মিথ্যের সৃষ্টি জানি , সত্যির মধ্যে কিছুটা মিথ্যে মেশালে নেশার 
ঘনত্ব বড় পাতলা
 
নিজেকে মিশিয়ে মিশিয়ে মিথ্যের সাথে ভাসিয়ে দিই সত্যতা।

নেশা কর পাঠক
কারণ আমি জানি না যতটুকু তুমি জানো 
আমি লিখি তোমারই খননের কথাগুলো,  জানা কথাগুলি

************★*****★****************

টার্গেট 

বাবা তার যুবকবেলার বিশটা বছর ধরে শুধু যুদ্ধে লড়বার স্বপ্ন দেখে গেলো
বাবা বিশ বছর ধরে মুর্গী লড়াইয়ে বাজি রেখে দৌড়ে মরেছিলো 
স্বপ্নদোজখের মধ্যে গামবুটসহ পায়ে শক্রু শিবির জিরো পয়েন্ট টার্গেট ,
সৈনিক হবার ব্যর্থ স্বপ্নের ভিতর খিদে আর বুলেট নিয়ে 
বাবা লিখে ফেলেছিলো ২৪৫ টি বতন - এ -
গুলদস্তা


ফৌলাদি সিনা থেকে , বাবার শ্রমবিবর্ণ ফুটিফাটা পাঞ্জা থেকে চামড়া ছাড়ানোর উৎকট গন্ধ বের হয়

দেশ শান্ত হলে মা যত্ন করে মুছিয়ে দেন ঘর লাগোয়া রক্তের অপবাদ 
অথচ আমাদের কুসুমকলি শিং নাড়িয়ে  বকনা বিয়োলেই মহল্লায় মিঠাই বাটেন বাবা
গলায় ঘন্টি পড়িয়ে আদর করে নাম দেন তার 'আজাদ'

গাই কিচ্ছু বোঝে না , বাবাও না , বড় বড় চোখ নিয়ে চেয়ে থাকে শুধু একে অপরের দিকে

আমরা বুঝি , বাবার স্বপ্ন - 
যুদ্ধ নেমে আসে আমাদের রেশনের লাইনে , 
ভোটার কার্ডের থাপ্পায় , নামাজ পাটির চৌকাঠে 
রোজ যুদ্ধ লিখে কাটি , শরীরের ফুটে থাকে পিন 'কাফের'
বাবা স্বপ্নের ভিতর , পতাকা উড়িয়ে বলেন , জয় হিন্দ জয় হিন্দ জয় হিন্দ
********************************************

ঈশ্বরের খিদে

ঘরে ফেরা পাখির ডানায় গোধূলিআলোটুকুর
আয়ুকাল সুখ নামে ডাকি 
ভোরশিশিরের শরীরে মিশে ছিল রোদের স্বার্থ 
আত্মাবিসর্জন  ও অন্ধকারের মধ্যে ফারাক যতখানি 
ঠিক ততখানির মধ্যে আমাদের শ্বাসঘাত অবিরাম 

ঘাসেদের শরীর ভাঙতে ভাঙতে এগিয়ে যাচ্ছে খোকন...
খোকনের হাতে ঢোলকলমির ডাল ,সাঁইসাঁই ছুঁড়ে দিচ্ছে
আকাশমুখীন ,হাতের চলনের ছিঁড়েখুঁড়ে দেয় আগাছার যতশোক
শোকের ঊর্ধ্বে ঈশ্বর ,ঈশ্বরের পেটে সর্বগ্রাসী খিদে

সূর্যফুল ফোটার সাথে মায়ের আঙুল ও সিঁদুরের 
টান ছোঁয়ায় বৃদ্ধি পেল সংসার আয়ুরেখা।
বাবার গায়ে বুনোফুলের গন্ধ ,বাবার হাতে ঘি আগুনের গন্ধ।
বাবার বাঁশ ও ঠেলা আগুনের তোড়ে মায়ের উষ্ণ ভাতের স্নেহ।
বটগাছ থেকে শ্মশান পর্যন্ত নিভে যাচ্ছে খোকনের পুতুলসংসার।

★★****************************★******


একটা আঁচলের নাম শ্রীকৃষ্ণকীর্তন

গোলাপি আঁচল খসে গেলে বিধ্বংসী ঝড় ওঠে 
পুরুষদ্বীপে , আসমানি দেবতা দোলে ঝড়ের দোলনায় 
তোর আঁচল খসে গেলে কদম্বতরুতলে আড়বাঁশিতে 
ভিখারি মাধব , উড়ে যায় শখের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন।

ওই,আঁচল খসে গেলে রাজা দেখে  প্রজার ঘরে অফুরন্ত ধন , 
গুপ্তঘাতক  অস্ত্র নামিয়ে ভক্ত বনে যায় 
সনাতন আঁচল খসে গেলেই কে আপন কে পর!
দাদার হাতে বাবার চোখে আঁচলখোলা রাধিকার যৌবন ।

তোর,আঁচল খসে গেলে  শিরায় শিরায় রাসায়নিক 
যুদ্ধ প্রস্তাব , ঘাপটি মেরে প্রধানমন্ত্রী হালুমের প্রত্যাশায়

আঁচল খসে গেলে কে সীতা কেই বা দ্রৌপদীর বর 
লোলুপজঙ্গলে সকলেই বাঘ , যতই তোর চোখে
থাকুক ধুলোবালির বৃন্দাবন ।





***************************************


জন্মদিনের গল্প 

বারোতম বছরের জন্মদিনে বাবা একটা স্টপ ওয়াচ দিয়েছিল
বলেছিল , সময় হিসাব করে খরচা করতে হয়। 

মা ,কাকিরা একটা ফুলতোলা নক্সা কাটা ওড়না দিয়ে
বলেছিল মেয়েদের লুকিয়ে রাখতে হয় এর মধ্যে । 
পুতুল খেলা ঘরে সুব্রত বলেছিল কি দেবো তোকে বল ?
বুকের শুঁয়োপোকা দিয়ে দিলাম তোকে 
খুব ভয়ে পেয়েছিলাম , সব দামি উপহারের মধ্যে
ওটা ছিল কুৎসিত ও হুলফোটানো দায়ক 

ষোলতম জন্মদিনে চমকে গিয়েছিলাম 
সেই শুঁয়োপোকাটা দিব্যি ডানা মেলে প্রজাপতি!
দারুণ লজ্জা আর সোহাগী আবেগ , কোথায় লুকাই ! 
কোথায় রাখি এই অদ্ভুত শিহরণ ?
অথচ সুব্রতদা শুঁয়োপোকাকে কি উড়তে দিতে চেয়েছিল ,
অথচ আমি কি বেড়ি দিয়েছিলাম পায়ে ?

আবার এক জন্মদিন এল আমার তেইশ বছরের
বিসমিল্লার সানাই সন্ধ্যা বুকে নিয়ে ছাব্বিশ বসন্তের 
বুকে মুখ রেখে যখন খুঁজতে চাইছিলাম 
প্রজাপতিটা কোথায় উড়ছে , উড়ছে কি কোন
নীলপাঁজরের ঘায়ে...

সুব্রতা দা আজকাল নাকি কবিতা লিখছে 
খ্যাতির চুড়ায় অসংখ্য তার ময়ূর পালক 
এখন নাকি অনেক প্রজাপতি ওর কবিতার খাতায়.....


************************************

১০

মৃত্যুকালীন কাব্য

এত লোভ দেখাবেন না ঘাতক ...মৃত্যু এবং আমায়
সফেদ জ্যোৎস্নায় ঝলকে উঠছে আপনার উদ্ধত তরবারি 

পবিত্র স্নান সেরে বসে আছি নগ্ন শরীরে 
স্রোতের উজানে কপালে লাল তিলক, পেলব গ্রীবায় দোদুল্য জবার মালা

প্রিয় ঘাতক,এই গোলাপী গুহায় জেগে আছেন ঈশ্বরী,
অলৌকিক কবিতাদের জন্ম দান করুন এই কামাক্ষ্যাতট ছুঁয়ে

ঘাতক,রেশমী ঘাসের সুরম্য অরণ্যে কোন হেমলক রাখা নেই।
স্বর্গের খুব কাছাকাছি থাকে নরক,এসব ভেবে নষ্ট করবেন না সময়
অমরাবতীতে ধুয়ে নেবেন হন্তারক অস্ত্রসমূহ

কথা দিলাম,গোপন থাকবে কবিতা এবং হত্যা বিষয়ক অভিযান।

প্রিয় ঘাতক,
অন্তিম চিতার ভিতর শুয়ে যথার্থ একটি কবিতাই তো হতে চেয়েছিলাম।




জয়তী রায়( মুনিয়া)

                                                





 মস্তিষ্কের  ভুলভুলাইয়া/ মানব জীবনের অভিশাপ। 

_________________________

  :নামটা কিছুতেই মনে করতে পারছি না! 

: কাল যেন কোথায় যেতে হবে? ফোনে সেভ করা আছে। দেখে নিচ্ছি। 

: ফোন নম্বর। দূর। ওতো সব সেভ করা। 

: বারবার জিনিস হারিয়ে ফেলা। 

  হাল্কা সুরে বলা কথাগুলি ইঙ্গিত দিচ্ছে একটা ভয়ংকর অসুখের। আলঝাইমার।

   মধ্য বয়স নিয়ে লেখা এই পর্বে এসে বলব, নিজেকে অবহেলা করার চূড়ান্ত ফল কি হতে পারে! 

 আজকাল সবাই সব জানে। একটা বোতাম টিপলে হাজির হচ্ছে তথ্য। আলাদিনের দৈত্য কাহিনীর আধুনিক রূপ হল স্মার্টফোন।  শুধু জানে না, ২৪ ঘণ্টা সময় ঈশ্বর আমাদের দিয়েছেন, তার মধ্যে লুকিয়ে আছে সুখে থাকা অথবা অসুখে থাকার উপায়। 

  কিছু অসুখ ঘটে যায়।  আমাদের হাতে থাকে না। আবার কিছু অসুখ আমাদের ভুল জীবন শৈলীর ফল হতে সৃষ্টি। যার মধ্যে একটি হল আয়ালজাইমার। অথবা ভুলে যাওয়ার অসুখ। সম্প্রতি Alzheimer's Association International conference 2020 এর একটি গবেষণায় উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

পড়াশুনো এবং খারাপ জীবন যাপনের ধরণের জন্যই মানুষ পরবর্তী জীবনে মানুষ অ্যালজাইমারের মত রোগের শিকার হতে পারে। 

  মধ্য বয়স বলছি বটে, তবে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা অল্প বয়স থেকেও শুরু হতে পারে।

 যে যে রোগের ক্ষেত্রে জিন ঘটিত কারণ উল্লেখ  করা হয়, ভুলে যাওয়া তার মধ্যে একটি।

এছাড়া, স্ট্রোক হলে, টাইপ ২ ডায়াবেটিস হলে মস্তিষ্ক দুর্বল হয়ে যেতে পারে। 

   আমি সেটার মধ্যে যাচ্ছি না। আজকের আলোচনায় থাকবে, পরিবেশ ও জীবন শৈলী র ভুল পদক্ষেপ কিভাবে মানুষকে ধীরে ধীরে অন্ধকারে ঠেলে দিতে থাকে। 

**********

  একদিনে ২৪ ঘণ্টা। কম নয়। ঘুমিয়ে থাকার সময়েও আমাদের মস্তিষ্কের চিন্তা শক্তি সচল থাকে। এই চিন্তা মানুষের জীবনের একটা বড় অস্ত্র। এর অপপ্রয়োগ বহু সময় ডেকে আনতে পারে বিপর্যয়। চিন্তাঅশ্বের লাগাম ছোট থেকে কষে ধরে রাখতে হবে। মন এবং মেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে তাকে শান্ত ভাবে বুঝিয়ে ফেলা প্রয়োজন। মন আশকারা পেলে মাথায় চড়ে বসে। তুচ্ছ কারণেও বিক্ষিপ্ত হয়ে উঠতে পারে বারবার। তখন সে পারিপার্শিক সব ভুলে যেতে চায়। বা , ইচ্ছে করে মনে রাখতে চায় না। ক্রমাগত করতে করতে এটা অভ্যাসে পরিণত হয়। সুতরাং, দিনের উল্টোপাল্টা চিন্তায় লাগাম  পরিয়ে দিতে হবে। 

: সময়ের সঠিক ব্যবহার না করতে পারলে মেজাজ খারাপ হয়। স্কুলে পড়াকালীন অভ্যাস তৈরি করে দিতে হয়। বহু সময়, স্কুলে খাতা বই ফেলে রেখে আসা অথবা বাড়িতে টিফিন ভুলে যাওয়ার প্রবণতাকে কেউ তেমন গুরুত্ব দেয় না। ধীরে ধীরে এই অভ্যাস পরিণত হয় স্বভাবে। বড় হয়েও ভুল হতে থাকে রোজ। ঢাবির গোছা, অফিসের ফাইল আরো নানান কিছু। রোজ ঠিক মত সময় জিনিস পত্র গুছিয়ে রাখতে পারলে, আপনা হতেই মস্তিষ্ক ইঙ্গিত দেবে। মনে করিয়ে দেবে। 

: নিজের চিন্তা শক্তির উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে মানুষ রাগী স্বভাবের হয়ে ওঠে। বিশেষ করে যদি হতাশা আসে। চাওয়া আর পাওয়ার মাঝখানে থাকে যদি অনেক ব্যবধান , মনো সামাজিক জগতে তখন প্রবল আলোড়ন ওঠে। সমস্ত কিছুতেই অবসাদ। প্রাপ্য ছিল অথচ পাওয়া হল না... নিরন্তর এই চিন্তা মস্তিষ্কের বায়োলজিক্যাল ক্লকের কাজ ব্যাহত করে। এই সময় লম্বা শ্বাস খুব কাজে লাগে। লম্বা করে শ্বাস নিয়ে ধরে রাখতে হয়। সেই সঙ্গে নিরন্তর  নিজেকে বোঝাতে হবে। জীবনের চাইতে মূল্যবান আর কিছুই নেই। 

: অসম্ভব প্রতিশ্রুতি কাউকে দেওয়া যাবে না। সকলকে খুশি রাখতে গিয়ে নিজের দিকে সবথেকে কম সময় দেয় মানুষ। দিনের শেষে বাড়তে থাকে উদ্বেগ। সব কিছু তালগোল পাকিয়ে যায়। রোজকার অত্যধিক ভাবনা চিন্তা থেকে ভুলে যাওয়ার সিনড্রোম তৈরি হয়। সুতরাং, সকালে উঠেই নিজেকে শুনিয়ে দিন, বাঁচতে হবে নিজের জন্য। 

: ইনফরমেশন ওভার লোড __স্মৃতি ভ্রংশের একটা কারণ।

অনেক কিছু একসঙ্গে মনে রাখতে গিয়ে কিছুই  মনে থাকছে না। এ ক্ষেত্রে ফোনে নয়, কাগজে  টুকে রাখুন কাজ গুলি। আঙুল  আর পেন্সিলের যুগল বন্দী মস্তিষ্কের কোষ উজ্জীবিত করে। 

: অ্যালঝাইমার বিপদ ঘণ্টা বেজে উঠতে পারে যে কোনো বয়স থেকে। অযথা  হোয়াটস অ্যাপ দেখা বন্ধ করতে হবে। গ্রুপ চ্যাট দরকারি না হলে একেবারেই না। মনসংযোগ নষ্ট করে, এমন কাজ না করায় মঙ্গল। যে কোনো একটা বাদ্য যন্ত্র বাজান। না হলে, হারমোনিয়ামের রিড চেপে রাখুন। 

: স্মার্ট ফোন দিনের অনেকগুলি ঘণ্টা কেড়ে নিয়ে এলোমেলো করে দেয় রুটিন। প্রয়োজন না হলে দরকার নেই। তার চেয়ে গান চালিয়ে নেচে নিতে পারেন একটু। 


     অশনি সংকেত হল কাল বৈশাখী নেমে আসার সূচনা। নিজের দিকে তাকান। শরীরের উপরের অংশে বস্ত্র আছে। নিচের দিকে? হয় বইকি। ভুলে যেতে যেতে এই পর্যায় পৌঁছে যায় মানুষ। 

   পরিশেষে বলি, ২৪ ঘণ্টা কাজে লাগাতে হবে। রাতে শুতে যাবার আগেও, এমন একটা বই পড়ে শুয়ে পড়ুন, যা চিন্তা সুন্দর করতে সাহায্য করবে। 

 ভুলে যাওয়া রোগ মহামারীর আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। একে অপরকে সাহায্য করুন। দেখা হলে প্রশ্ন করুন, দুদিন আগে কি কি রান্না হয়েছিল? নানা রকম খেলা চলত আগে। সেই খেলা গুলো নিয়ে আসুন। এই খেলা একটা থেরাপি। আড্ডা য় গসিপ না করে এই সমস্ত খেলা খেলুন। 

  ভুলে যাওয়া নয়/ মনে রেখে এগিয়ে চলি। 

হাতে হাত রেখে / এক সাথে পথ চলি।

***********

 দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:

: পরিবারে অ্যালঝাইমার থাকলে এখন থেকেই সাবধান হতে হবে। কারণ, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাদের মধ্যে প্রবণতা ফুটে উঠবে। সেটা গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। 

: ব্রেন অ্যাকটিভ রাখুন। মস্তিষ্ককে সবসময় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি রাখুন। মাইন্ড কুলনেস থেরাপি অথবা টক থেরাপি কাজ দেয় খুব  বেশি। 


     সতর্ক থাকতে হবে/ নিজেকে রক্ষা করতে হবে।।