পৃষ্ঠাসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ২৬ জুন, ২০২১

পিয়াংকী

                                             


    





 #গরমবাহার ( প্রথম পর্ব 


সৃজন ব্লগে রান্নাসংক্রান্ত এই  ধারাবাহিকের পোশাকী নাম গরম বাহার।বেশ কিছু রান্না গরম গরম পরিবেশন করলে তার স্বাদ বেড়ে যায় ৷"সৃজন" ম্যাগাজিনের রান্না বিভাগে আপনাদের সকলকে স্বাগত। প্রতি রবিবার এই বিভাগে থাকবে স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের নামে পিয়াংকীর দখলদারি পরিভ্রমণ । যেখানে হিরো হিরোইন আর ভিলেন সব চরিত্রই হয়ে উঠবে রাঁধুনির হাতাখুন্তিগামলাবাটি।


'রাঁধ না'...প্রিয়জন তথা প্রিয়রাঁধুনির উদ্দ্যেশ্যে এই শব্দবন্ধ ব্যবহার করেননি এমন মানুষ হাতে গুনেও হয়ত বের করা যাবে না।অথচ  এই শব্দ দুটির মাঝে একটি যোগ চিহ্ন বসিয়ে দিন।দেখবেন তারা লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে  একে অপরের গায়ে ঢলে পড়ে বানিয়ে ফেলবে জম্পেশ একটি রান্না।


আজ্ঞে হ্যাঁ। এতক্ষণ ইনিয়ে বিনিয়ে বিনুনি পাকিয়ে আমি রান্না নামের শিল্পটির কথাই বোঝাতে চেয়েছি।সেইইইই মেয়েবেলা থেকেই রান্নাবাটি দিয়ে শুরু হওয়া পদযাত্রা কখন যে আপনার প্রোফাইলের বায়ো-তে আপনাকে আর্টিস্ট তকমায় জ্বলজ্বল করিয়ে দেবে, আপনি নিজেও জানতে পারবেন না।

আজ 'গরম বাহার' একটা এমনই রান্নার কথা বলব, যেটা পূর্ববঙ্গীয় সাথে পুষ্টিবর্ধকও।


পদের নাম ঃ ফরিদপুরি লাবণ্য 


রান্নার পেছনের গল্পঃ  


খুব সহজ একটা রান্না।ছবি  দেখে হয়ত সবাই বুঝতে পারছেন এটি একটি পাঁচমিশালী তরকারি, হ্যাঁ আমিও তাই জানতাম। কিন্তু বিয়ে হয়ে আসার পর একবার আমার মারাত্মক জ্বর হল, প্রায় চব্বিশ দিন ধরে,বুকে কফ বসে শুকিয়ে ইনফেকশন হয়ে গিয়েছিল, সেই সময় ওষুধের সাথে টোটকা হিসেবে মা(শাশুড়িমা) আমায় এই রান্নাটা করে খাওয়াতেন।


রান্নার জিনঃ


 এটি পূর্ব বাংলার বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুর অঞ্চলের রান্না।শক্তিবর্দ্ধক হবার সাথে সাথে নিম্নমূল্যকও। 


পদ্ধতিঃ 

কাটোয়ার ডাঁটা  কুমরো  বেগুন  ঝিঙে  চিচিঙ্গা  পটল  আলু  কাঁকরোল ( সাথে আপনার মনমতো আরও কিছু সবজীও যুক্ত করতে পারেন।) এটুকু সবাই জানি। কিন্তু আসল বিষয় থমকে থাকে মশলাতে।


 শুকনো কড়াইতে গোটা ধনে, গোলমরিচ, আদা, জোয়ান, একটাদুটো  লবঙ্গ, কিছুটা মৌরি, কয়েকটা গোটা তেজপাতা আর সামান্য রাঁধুনি একসাথে ড্রাই রোস্ট করে নিয়ে তাতে সামান্য মধু আর গরম জল দিয়ে গুলে রেখে দিতে হবে রান্না শুরুর সময়,

তারপর কড়াইয়ে খুবই সামান্য তেল।  তাতে মেথি ফোরণ দিয়ে গন্ধ বেরোলে সেটা তুলে ফেলে দিয়ে সেই তেলে অল্প পাঁচফোরণ আর সামান্য কিছুটা মুগডাল ভেজে (মুগডাল কিন্তু অল্প ভাজা হবে)ধোয়া সবজি ছাড়ার পদ্ধতি।  তারপর ঢাকা।সব্জি থেকে জল বেরোবে সেই  জলেই মজবে সব, (ঠিক যেন করোনার লকডাউন উঠে গেছে, কোনো বিধিনিষেধ নেই, সব্বাই মাস্ক ছাড়া ঘুরছে।)প্রায় হয়ে এলে ওই গোলা পেস্ট দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ঢাকা। কাদা কাদা হয়ে এলে নামানো। ভরপুর দেশীয় প্রোটিন সমেত ডালের পুষ্টি মিশ্রিত। 


ওই যে স্পেশাল মশলার মিলিত মিশ্রিত গুণাগুণ তাতেই শরীর স্ট্রং ।উপযুক্ত পরিমাণে প্রোটিন কার্বহাইড্রেট বিভিন্ন খনিজপদার্থ র সংমিশ্রণ । 


উপকারী কাজকম্মঃ


পুরনো কফের জন্য খুব ভালো। ভীষণ ভালো ইমিউন সিস্টেমের জন্য। এমনকি অনেকদিনের  সুগারের পেশেন্ট যাদের স্বাদকোরক গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের মুখেও এই রান্নাটা খুব ভালো লাগে(আমার বাবাকে দিয়ে প্রমাণ পেয়েছি)।



...আজ এই পর্যন্ত 


এর পরের পর্বে থাকবে এমনই খুব সহজ সারল্যে ভরা একটি পদ এবং তার পেছনের গল্প।

আপাতত এটুকুই।


চলুক রান্নাঘর, আসুক খুসবু...


(ক্রমশঃ)

২টি মন্তব্য:

  1. রান্নার রেসিপি অনেক জায়গাতেই পড়েছি। কিন্তু পিয়াংকী এখানেও অভিনবত্বের ছোঁয়া এনেছে। এইযে নেপথ্য কথন, এটির জন‍্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে এই বিভাগ। আবার রবিবারের অপেক্ষায়।।

    উত্তরমুছুন
  2. খুবই ভালো লাগলো ۔۔পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম

    উত্তরমুছুন