পৃষ্ঠাসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১

পিয়াংকী

             





 গরমবাহার কুড়িতমপর্ব



গুড়জ্বাল আর তিলের নাড়ু মুড়ির মোয়া


আজ খুব শীত, উত্তুরে হাওয়ার গতিবেগ ক্রমশ বাড়ছে।  মনে পড়ে যাচ্ছে সেইসব দিনগুলোর কথা যখন এরকম অঘ্রানের রাতে আমার আম্মা একটা শাল মুড়ি দিয়ে বিছানায় বসে মহাভারত মুখস্থ করতে করতে তন্দ্রাঘোরে ,মা সেসময়  উনুনে কাঠ ঢুকিয়ে তিল ভাজত কাঠখোলায়, ফটফট করে শব্দ হত,সুন্দর হালকা গন্ধ ছড়িয়ে পড়ত ঘরময়, মা জ্বাল দিত আখের গুড় তারপর সেই গুড়ে চিট এলে একতার দুইতার মেপে অর্ধেকটা মুড়ির পাক আর বাকি অর্ধেকে সাদাতিল।এরপর দু'টো পাত্র আর সর্ষেরতেলের শিশি বিছানায় রেখে দিয়ে  আম্মাকে বলত,"ওকেই পুরোটা খাইয়ে দেবেন না মা, কিছুটা টুলুর বাড়ি পাঠাব"। 




আম্মা মোয়া আর নাড়ু গড়ে নিয়ে আমার দু'হাত ভরে চারটে দিয়ে বলত,"লুকাইয়া ফ্যাল"। কাঁথার নীচে আমার পাদু’টো গরম করার জন্য শীতের এই সন্ধেগুলোতে আমার আম্মাই রসুনসর্ষেরতেল ফুটিয়ে গরম গরম মাখিয়ে দিত পায়ে হাতে পিঠে বুকে। ঠান্ডা লাগার ধাঁচ বলে যত্ন করতে করতে বলতো," ক্যাডায় কয় রূপসীরে লইয়া যাইব একদিন, আমি দিমুনা যাইতে"।আজ আম্মা নেই। আমার যত্ন উধাও হয়ে গেছে অ্যালোভেরা জেল আর সানস্ক্রিনের মোড়কে। কিন্তু কেন জানি না  গুড়জ্বালটা সুইগিজোমাটোতে আজও অর্ডার করতে পারি না। তারাদের দেশ থেকে আমার  মা আর আম্মা মোয়া - নাড়ু হয়ে ফুটে থাকে রাতের নক্ষত্রে...



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন