কাসাহারা ও রবীন্দ্রনাথ
৫
ছায়া ছোটো করে টেবিলের সামনে মরিচদানিতে ঢুকিয়ে নিয়ে যাওয়া ছাড়া এখানকার ওয়েটারেরা আর কিছু করে না। এখানকার মেনুকার্ডের বাইরে বৃষ্টি পড়ছে। মাশরুম দেওয়া চাউমিনে বৃষ্টি। কাসাহারার বাইরে কোথাও কোনো আবহাওয়া দপ্তর নেই। এখানে শুধুই কালো কালো ভেড়ার মতো দেখতে শুয়োরেরা টেবিলের তলায় ঘুরঘুর করে। ছায়া ছোটো হয়ে গেলে এখানে খেতে আসা মেয়েদের প্লেটে তা সাজিয়ে দেওয়া হয়। এখানে একটিও চেনাজানা টমেটো নেই। অচেনা টমেটোরা এখানে ইতালিয়ান ভাষায় কথা বলে। টেবিলটিতে ওয়েটারদের হাতের ছায়াটুকু পড়ে আছে, তাদের ঘরে বিছানায় এলানো শরীর ঘিরে কোনো মেয়ে নেই। অথচ এখানে রবীন্দ্রনাথ দেখেছেন, প্রতিটি মেয়ের স্কার্টের ভেতর একটি করে সাদা পায়রা কখনও লাল হয়ে যায়... এখানে লাল রঙে ছবি আঁকা হয় না যদিও। এখানে মরিচদানি থেকে বৃষ্টি পড়ে না কোনো। শুধুই টেবিলের তলায় শুয়োরেরা একটার পর একটা ডিশ... এখানে কাসাহারায় বাইরে একটির পর আরেকটি মেয়ে অপেক্ষা করছে।
৬
রোদ্দুর কাসাহারাতে পড়ে। সেখানে রাখা মাচার ওপর মাছের ছায়া কি করে পড়ে কেউ জানে না। এখানে মাছরাঙাদের নিয়ে কথা বলতে আসা ছেলেমেয়েরা একে অপরের বুকের কাছে বসে, খাবি খায়। মাছগুলো রোদ্দুরে ভেজে আর ভাবে জলপাইহাটি থেকে এখানে আসার সময় ভিজতে ভিজতে একদিন তারাও ছেলেমেয়েগুলোর মতো বুকের কাছে বসতে পারবে, তাদের সতেজ আর নিস্তেজ স্তনের কথা জানতে পারবে, যদিও মাছরাঙারা কখনও বোতলে ঢুকতে চায় না। তারা রবীন্দ্রকবিতা পড়েনি। তবে জানে, বাবু পারিষদ সাথে ছিপ ফেলেন পুকুরমাঝে। ফাৎনায় মেয়েরা ওঠে, অনেক ঘুমের নীচে তাদের বাড়ি থেকে উঠে এসে রোদ্দুরে আলুথালু দাঁড়ায়। জলপাইহাটি রোদ্দুরে ভেসে যাচ্ছে। কবিগুরু পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছেন, কাসাহারা ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে মাছেদের ছায়া আর অ্যাকোরিয়ামের ধারণা। তারা নিজেদের মতো করে জলপাইহাটির জালে জড়িয়ে পড়ছে। জাল মোহ, সেখানে রোদ্দুর পড়ে না। সেখানে স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় মাছগুলো মাছরাঙার সাথে কথা বলে, কাসাহারার টেবিলে
৭
অবিরত চলে যাচ্ছে কথোপকথন। সেখানে আলো জ্বলছে না, কাসাহারা পেরিয়ে সবুজ মাঠটির দিকে এগোলে দেখা যায় ক'টি মহিলার স্তনবৃন্তগুলি জোনাকির মতো জ্বলে উঠছে। এঁরা হতে পারেন রামকিঙ্করের সাঁওতাল রমণী বা উৎপল কুমারের নিরক্ষর বেশ্যা। এঁদের নিয়ে রবীন্দ্রনাথের লেখাজোখা আছে কি না তা নিয়ে কাসাহারায় কোনো আলোচনা সভা হয়নি। সেখানকার কফিকাপগুলো এসব মেয়েদের স্পর্শ হয়তো বা পেয়ে থাকবে। এখানে বৃষ্টির সময় অবিরত হয়ে যাচ্ছে কথোপকথন। সবুজ মাঠটির দিকে রবীন্দ্রনাথের কবিতাগুলো ভিজছে। শেষের কবিতায় লাবণ্য যেভাবে কথা বলেছিল, সেই স্তনবৃন্তগুলো সেমতোই উন্মুখ। ফলে, কাসাহারায় কবিতা গোর দেবার কথা রবীন্দ্রনাথ ভাবেননি। হয়তো উৎপল কুমার বা রামকিঙ্কর এখানে আলো নেভানোর কথা ভেবেছিলেন। এই নিয়ে কাসাহারায় কথোপকথন জারি থাকছে ছেলে ও মেয়েগুলোর মধ্যে।
৫
ছায়া ছোটো করে টেবিলের সামনে মরিচদানিতে ঢুকিয়ে নিয়ে যাওয়া ছাড়া এখানকার ওয়েটারেরা আর কিছু করে না। এখানকার মেনুকার্ডের বাইরে বৃষ্টি পড়ছে। মাশরুম দেওয়া চাউমিনে বৃষ্টি। কাসাহারার বাইরে কোথাও কোনো আবহাওয়া দপ্তর নেই। এখানে শুধুই কালো কালো ভেড়ার মতো দেখতে শুয়োরেরা টেবিলের তলায় ঘুরঘুর করে। ছায়া ছোটো হয়ে গেলে এখানে খেতে আসা মেয়েদের প্লেটে তা সাজিয়ে দেওয়া হয়। এখানে একটিও চেনাজানা টমেটো নেই। অচেনা টমেটোরা এখানে ইতালিয়ান ভাষায় কথা বলে। টেবিলটিতে ওয়েটারদের হাতের ছায়াটুকু পড়ে আছে, তাদের ঘরে বিছানায় এলানো শরীর ঘিরে কোনো মেয়ে নেই। অথচ এখানে রবীন্দ্রনাথ দেখেছেন, প্রতিটি মেয়ের স্কার্টের ভেতর একটি করে সাদা পায়রা কখনও লাল হয়ে যায়... এখানে লাল রঙে ছবি আঁকা হয় না যদিও। এখানে মরিচদানি থেকে বৃষ্টি পড়ে না কোনো। শুধুই টেবিলের তলায় শুয়োরেরা একটার পর একটা ডিশ... এখানে কাসাহারায় বাইরে একটির পর আরেকটি মেয়ে অপেক্ষা করছে।
৬
রোদ্দুর কাসাহারাতে পড়ে। সেখানে রাখা মাচার ওপর মাছের ছায়া কি করে পড়ে কেউ জানে না। এখানে মাছরাঙাদের নিয়ে কথা বলতে আসা ছেলেমেয়েরা একে অপরের বুকের কাছে বসে, খাবি খায়। মাছগুলো রোদ্দুরে ভেজে আর ভাবে জলপাইহাটি থেকে এখানে আসার সময় ভিজতে ভিজতে একদিন তারাও ছেলেমেয়েগুলোর মতো বুকের কাছে বসতে পারবে, তাদের সতেজ আর নিস্তেজ স্তনের কথা জানতে পারবে, যদিও মাছরাঙারা কখনও বোতলে ঢুকতে চায় না। তারা রবীন্দ্রকবিতা পড়েনি। তবে জানে, বাবু পারিষদ সাথে ছিপ ফেলেন পুকুরমাঝে। ফাৎনায় মেয়েরা ওঠে, অনেক ঘুমের নীচে তাদের বাড়ি থেকে উঠে এসে রোদ্দুরে আলুথালু দাঁড়ায়। জলপাইহাটি রোদ্দুরে ভেসে যাচ্ছে। কবিগুরু পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছেন, কাসাহারা ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে মাছেদের ছায়া আর অ্যাকোরিয়ামের ধারণা। তারা নিজেদের মতো করে জলপাইহাটির জালে জড়িয়ে পড়ছে। জাল মোহ, সেখানে রোদ্দুর পড়ে না। সেখানে স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় মাছগুলো মাছরাঙার সাথে কথা বলে, কাসাহারার টেবিলে
৭
অবিরত চলে যাচ্ছে কথোপকথন। সেখানে আলো জ্বলছে না, কাসাহারা পেরিয়ে সবুজ মাঠটির দিকে এগোলে দেখা যায় ক'টি মহিলার স্তনবৃন্তগুলি জোনাকির মতো জ্বলে উঠছে। এঁরা হতে পারেন রামকিঙ্করের সাঁওতাল রমণী বা উৎপল কুমারের নিরক্ষর বেশ্যা। এঁদের নিয়ে রবীন্দ্রনাথের লেখাজোখা আছে কি না তা নিয়ে কাসাহারায় কোনো আলোচনা সভা হয়নি। সেখানকার কফিকাপগুলো এসব মেয়েদের স্পর্শ হয়তো বা পেয়ে থাকবে। এখানে বৃষ্টির সময় অবিরত হয়ে যাচ্ছে কথোপকথন। সবুজ মাঠটির দিকে রবীন্দ্রনাথের কবিতাগুলো ভিজছে। শেষের কবিতায় লাবণ্য যেভাবে কথা বলেছিল, সেই স্তনবৃন্তগুলো সেমতোই উন্মুখ। ফলে, কাসাহারায় কবিতা গোর দেবার কথা রবীন্দ্রনাথ ভাবেননি। হয়তো উৎপল কুমার বা রামকিঙ্কর এখানে আলো নেভানোর কথা ভেবেছিলেন। এই নিয়ে কাসাহারায় কথোপকথন জারি থাকছে ছেলে ও মেয়েগুলোর মধ্যে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন