আরোগ্যের হলুদ বিকেল
নিউ গড়িয়া স্টেশন এলেই সোনাঝুরির কথা মনে পড়বে। মনে পড়বে উদাসী ফড়িং-এর কথা। একটা গ্রীষ্মবিকেলে স্টেশন থেকে রাস্তায় নেমে আসি। দাঁড়িয়ে থাকা বাস, অটো, রিকশার ভিড় এড়িয়ে নিঃশব্দে হেঁটে চলি একটু দূরের কফিশপের দিকে। পাশেই নিবিড় উষ্ণতা নিয়ে ডাক দেয় ঈষৎ ব্রীড়াবনত এক দীঘি। তুমিও অপেক্ষারত। কফিশপের নরম সোফায় বসে হোয়াটসঅ্যাপে টুং টুং করে উষ্ণতা ছড়িয়ে দিচ্ছ। ছড়িয়ে দিচ্ছ দরবারী কানাড়ার সুর। ওদিকে দীঘিটির বুকে সোনাঝুরির ছায়া, সন্ধের মৃদু বাতাসে তার রঙ আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে, খিলখিলিয়ে উঠছে তীব্র ইশারায়। বাতাস টেনে আনে সুপুরি গাছের দুলুনি। টেনে আনে জ্যোৎস্নারঙ কীর্তনের সুর। শুনতে পাচ্ছি হিম হিম বাঁশিটির গীতিময়তা, দেখছি দীঘিটির টলটলে চোখ, চোখের কাজল। ক্রমশ বিপন্নতা ঘিরে ধরে। খুব ইচ্ছে করছে তোমার টুংটুং ডাক উপেক্ষা করি। তোমার দিকে চলে যাওয়া ধুলোপথ এড়িয়ে চলে যাই দীঘিটির দিকে, অপেক্ষার হলুদ সোনাঝুরিটির দিকে। কেন যে পারি না তা, সোনাঝুরি বোঝে।
সম্মোহন // স্নেহাংশু বিকাশ দাস
প্রতিটি সিঁড়ি আসলে নিয়ে চলে
নিষিদ্ধ জানালার দিকে।
কেতাদুরস্ত জানালা, অনায়াস যাতায়াতে
টানটান নীল আকাশ, ডানা,
নমনীয়তার আড়ালে সাজানো গোছানো
শরীরের অনন্ত কুয়াশা।
সিঁড়ির সমান্তরালে নিবিড় বসে থাকে.
হলদেটে বিষাদের ছায়াদেহ,
একটু একটু করে খুলে ফেলে জলপ্রপাত –
আধিভৌতিক পৃথিবীর সুতানুটি গ্রাম।
ছবি - সমরেন্দ্র মন্ডল
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন