" বনমালী তুমি পরজনমে হইয়ো রাধা"
১/
'দাম্পত্য '– একটা পাখির নাম। অথবা কল্পনা। কণা মাত্র খুদকুড়োয় বিগলিত কুসুম! জনমে জনম কেটে যায় এভাবেই রাধার। আমার। অথবা লতিফার। পিষে যায় অযাচিত ভুলের মতো কিছু ফুল! আর ঠিক এইখান থেকেই আমি শুরু করতে চলেছি একটা শীতের গল্প। সৌভাগ্যক্রমে জানিয়ে রাখি, আমি নাটকের লোক নই। তাই চাঁদ ছুঁতে চাওয়ার নষ্ট ভ্রম আমাকে মাতাল করেনি কখনো। অথচ এইই এক ক্ষেত্র, যেখানে সাকিন পর্দার আড়ালে ক্রমশ রহস্যময় হয়ে ওঠে লতিফা। রাসলীলা রঙ ছড়াতে শুরু করে... আর ঘুঙুরে ঘুঙুর বেজে যায় সারা সারা রাত...
গোলাপী আতরে ঘর ভেসে যায় কাতর!
২/
সে আঙিনায় চোখ ফেটে গেলো কতো মাঝি মাল্লার! নৌকা নৌকা বলে কেঁদে গেলো বিহার। মেহগনি বাগিচায় আজ তুমিই সাহেবা, রানী! টুকরো কাচের মতো ঢুকে এলে আমার গল্পের ভিতর। এসে বিঁধে গেলে। তুমি তো সেই অন্তঃপুরের পর্দানশীন জেনানা, নিষিদ্ধ সিনেমা দেখতে দেখতে জাবর কাটতে দাঁতে! আত্মার গভীর লালে একদিন আরাধ্য দেবী ছিলে তুমি তার! সে যদি পদ্মবাহার তুমি ছিলে তার জোছনার দুধ! আজ লাবণ্য হারিয়েছো। তুষ্টবিদ্যা কী নির্মম, শিখেছো নিয়মে। তুমি ক্ষতফুল চেনো লতিফা? সাদা মখমলের চাদরে কুমারীরক্তে ফুটে ওঠা ক্ষতফুল! চেনো? উত্তেজনায় ঘোমটা দেওয়া বিবাহদিন কেমন লুটিয়ে পরে গান্ধর্ব-চেতনার গাঢ় কালো পায়ের তলায়, জেনেছো কখনো? এসব আমার পূর্বজন্মের কথা। সে সময় কপালের মধ্যভাগ জুরে রক্তের দাগ, চেরা সিঁথি– সামলে নিয়েছিল, আমাদের বকুল পৃথিবী। মোক্ষের সন্ধান মেলেনি এখনও। ইহজন্মে তাই দাসখত রাখিনি কোথাও।
মধু গো, পদ্মবনে শঙ্খ লেগেছে। একচ্ছত্র ঠাই কোথাও মেলেনা বিনিমাগনায়। এই আমি হাঁটু মুড়ে বসেছি। হৃদয় খুলে দাও প্রিয়া। ভালোবাসো। ভিতর শূন্য করে আজ আখতারি তুলে নাও গলায়। আমাকে ঠুমরী শোনাও। আমি কাঁদি...
ডবকা জ্যোৎস্নায় চাঁদ ফেটে যাক নদীর ভিতর....
(ক্রমশ...)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন