#নাম- সংঘাতে মিলনে- দ্বন্দ্ব
স্বপ্নের ঘোরটা কাটতেই আমিনা বিবি শুনতে পেলেন দরজায় জোরে জোরে কড়া নাড়ার আওয়াজ। ধড়মড় করে উঠে গিয়ে দরজা খুললেন। একজন অচেনা যুবক দাঁড়িয়ে বাইরে, পরণে দামী স্যুট, জুতো; ফ্রেঞ্চকাট দাড়ি, চোখে দামী রিমলেস চশমা। বড়ো একটা ট্রলি ব্যাগ আর কাঁধে একটা সাইড ব্যাগ। আমিনা খুব অবাক হয়ে গেলেন! কে এই বড়লোক ছেলেটি? ওদিকে ঘর থেকে শোনা গেল পুরুষ কন্ঠ, “ এত্ত সকালে কেডা আইলো বড়বিবি?” আমিনা উত্তর না দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “ আফনে কে বাবা? আফনারে তো চিনলাম না!”
যুবকটি জিনিসপত্র নামিয়ে এক লাফে আমিনার কাছে এসে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো ‘মা’ বলে। আমিনা স্তম্ভিত! কাঁদবে না আনন্দ করবে বুঝতেই পারছে না। তার থেকেও বড় প্রশ্ন এ কী সত্যিই সে? বছর কুড়ি আগে বাবার সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া আমিনা বিবি আর রহমান মোল্লার একমাত্র সন্তান শাকিব?
মধ্যাহ্নভোজনের পর মা-বাবা বসে শাকিবের কথা শুনছিলেন কীভাবে সে এখান থেকে পালিয়ে অনেক সংগ্রামের পর আজ দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হতে পেরেছে। সবার চোখেই আনন্দাশ্রু। রহমান মোল্লা শাকিবের হাত ধরে বলছেন, “মোল্লার ছাওয়াল মোল্লাই হয় না। মোল্লার ছাওয়াল কলেজেও পড়াইতে পারে। মাপ কইর্যা দে বাপ! আমাগো ফালাইয়া আর যাস না।”
আমিনা বিবি ভাবছিলেন, বাবা-ছেলের দ্বন্দ্বে এতদিন তিনি কেঁদেছেন আজ এই দ্বন্দে তিনি জীবনের সবচেয়ে বড় উপহারটা পেলেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন