টেকেন ফর গ্র্যান্টেড
___________________
ঠিক বিকেল পাঁচটায় অ্যাকাডেমির সামনে চলে এল ব্রত...আজ নাট্যচিন্তার শো আছে । সাড়ে ছটায় শো । সুরঞ্জনা নিশ্চয়ই এখনই এসে গ্রীনরুমে ঢুকে পড়বে । আলাপ হওয়ার পর থেকে ওর প্রতিটি শোই দেখতে এসেছে ব্রত , সে তার অফিসে যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন । ফেসবুকেও প্রতিদিন চ্যাটবক্সে গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা দিয়ে একটা প্রত্যাশা জন্মেছিল মনে , তাই সরাসরি প্রেমের প্রস্তাবটা দিয়েই ফেলেছিল । প্রত্যুত্তরে বন্ধুত্বের সংজ্ঞা নিয়ে সাতশো একান্ন শব্দের একটা জ্ঞানবহুল মেসেজ দিয়ে তাকে ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে ব্লক করেছিল সুরঞ্জনা ।
ক্যাবটা আজ প্রায় সবকটা সিগন্যালে আটকাতে আটকাতে অবশেষে পাঁচটা ঊনত্রিশে অ্যাকাডেমিতে পৌঁছালো । গ্রীনরুমে ঢুকেই ডিরেক্টর মানসদার বকুনি খেতে হবে আজও । ওঁর দোষ নেই ...নাটকের প্রধান চরিত্রই যদি সময়মতো উপস্থিত না হয় তাহলে টেনশন তো হবেই । এর মধ্যেই চারবার কল এসে গেছে সুরঞ্জনার ফোনে , ক্যাব থেকে নেমে হনহন করে হাঁটতে শুরু করল সুরঞ্জনা।
গেটের সামনে আবার এসে দাঁড়িয়েছে ব্রত মিত্র নামের সেই ছেলেটা , বিরক্তিতে সুরঞ্জনার মুখটা কুঁচকে গেল । হাতে আবার চকোলেট আর গিফটের প্যাকেট ! সাহস তো কম নয় ! ফেসবুকে ব্লক করে দিয়েছে ...তবু ! দেবে না কি রামধোলাই ! সময় নেই অবশ্য । বন্ধু শর্মিলী আসবে আজ , সকালে ফোন করে বলছিল । ঝাড়ের দায়িত্বটা ওকেই দেওয়া যাক ...শর্মিলীর নম্বরটা ডায়াল করার আগেই সুরঞ্জনা দেখতে পেল বাঁ দিক থেকে শর্মিলী এগিয়ে যাচ্ছে ব্রতর দিকে , "সরি , দেরি হয়ে গেল গো ...অনেকক্ষন এসেছ ? "
গিফট আর চকোলেট ওর হাতে দিয়ে , হাত ধরে রাস্তা ক্রস করে মোহরকুঞ্জের দিকে যেতে যেতে ব্রত বলল , "তুমি একেবারে পারফেক্ট টাইমে এসেছ শর্মিলী ..."
বুকের ভিতর একটা কাঁটা খচখচ করছে ...অপমানের নাকি বিশ্বাসঘাতকতার ! ধীর পায়ে গেটের ভিতর মোরামের রাস্তা ধরে হাঁটতে লাগল সুরঞ্জনা...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন