নিজস্ব উঠোন বিষয়ক ১
……………………
মেঘরঙের বারান্দায় বসে আত্মহননের কথামালা লিখি। ঠিক তখনই, মনখারাপের আলোছায়ায় কেউ কেউ পদচিহ্ন এঁকে রাখে। সেই চিহ্ন ধরে হেঁটে যেতে ইচ্ছে করে বহুদূর। কিন্তু সমর্পণের ইশারা থাকে না কোথাও। তাই আর যাওয়া হয়ে ওঠে না, হায় !
.
"নিষিদ্ধ অঞ্চল বলে কিছু নেই" উচ্চারণ করে হেসে উঠেছিল যে কিশোর, আজ তার ঠোঁটে ঝুলছে বিনীত জিজ্ঞাসা।
.
ডুবসাতাঁরের মতো গোপন কৌশলের বিপরীতে, তিরতিরে স্রোতে ভেসে যায় নদীসভ্যতার ইতিকথা। সময়ের হাতে হাতে রিলে রেসের ব্যাটন বদলায়। তবু যে পৌরুষ নিয়ে এত অহং, তার শিরদাঁড়ায় কীসের বাঁকাস্রোত ? হে আমার ঈশ্বরপ্রতিম মানুষ, আমি বারবার ভুলে যাই, দড়িটানাটানিতে সবসময়ই কোনো-না-কোনো পরোয়ানা লেখা থাকে !
নিজস্ব উঠোন বিষয়ক ২
অন্দরমহলে বিষাদের ছায়া পড়ে। কোথাও একতারায় রিনরিন শব্দে খেলা করে হাওয়া। পিতৃত্বের দাগ ক্রমশ আবছা হয়ে আসে। জেগে ওঠে আবহাওয়া দপ্তরের ঘোষণা, "আজ আর বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।" অথচ বৃষ্টি এসেই পড়ে, ভিজে মাটিতে ঝরে ঝরে পড়ে তার নরম বিলাস। বিষাদ তখন দু-হাতে মুখ ঢেকে পরিত্যক্ত অক্ষরের কথা ভাবে।
.
বৈধ আর অবৈধের মায়াহরিণের কাছে গচ্ছিত রাখি আমার আজন্মবিলাস। পিতার মৃত্যুস্মৃতি বিষাদ-মলাটে এসে জড়ো হয়। বৃষ্টির অবিরাম ধারায় প্রাইমারি স্কুলের উঠোন জেগে ওঠে। সেখানে কাগজের নৌকো ভেসে যায়। প্রয়াত পিতার মুখ, স্কুলের উঠোন, কাগজের নৌকো … সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকে শৃঙ্খলাবদ্ধ সৈনিকের মতো। মুঠো মুঠো তুলোবীজ ছড়িয়ে দেয় সেইসব ছায়াচিত্রে। আমি পরম বিস্ময়ে উড়ে যাওয়া শিমূল তুলোর দিকে হাত বাড়াই ; ধরতে পারি না কিছুতেই।
.
সেই থেকে ছুটেই চলেছি, আবহাওয়া দপ্তরের ঘোষণার বিপ্রতীপে …
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন