খেলাঘর "
গরীব বাবার বড় আদুরি রাজকুমারি
ছোট ছোট হাতে সাজাত পুতুলের সংসার,
গামছা দিয়ে শাড়ি পরা ছোট মেয়েটি কতব্যস্ত-
মাটির হাঁড়ি , কড়া দিয়ে মিছি মিছি খেলাঘর নিয়ে।
ভ্যানচালক বাপ আর পাঁচ বাড়ির কাজ করা মা,
ভালোবাসা আদরের কমতি নেই পরিবারে।
হঠাৎ কালবৈশাখি ঝড়ে ওলট পালট সব,
মা মরল মরণ রোগে, বাপও গেল শেষে।
কিশোরী তখন যুবতী, শরীর জুড়ে মাদকতা,
মিষ্টি, লালিত্য মাখা, শরীরের বিভঙ্গে যৌবনের ডাক।
পাড়ার দাদাগুলোও কেমন পাল্টে গেল সব,
সবার চোখ জুড়ে তখন লোলুপ দৃষ্টি।।
দিনের আলোয় তবু স্বস্তি , রাতের আঁধার বিভীষিকায়,
দরজার বাইরের শিয়াল কুকুরের ডাকে ত্রস্ত মেয়েটি।
পেটের জ্বালা নিবারণে যেতে হয় বাবু বাড়িতে,
আদরে বেড়ে ওঠা মেয়েটি সহ্য করে শত গঞ্জনা।
যে নরম হাতে মা মেহেন্দি পরাত ভালবেসে
সেদুটো আজ ফোস্কা হাজাতে ভরা।।
হঠাৎ করে বয়স বেড়ে যায় একাকিত্বের ধাক্কায়,
বাবু বাড়ির মেজছেলেটার কুনজরও বুঝতে পারে।
কত শুভাকাঙ্খির আনাগোনা তার বাড়িতে,
ওই যে ওপাড়ার রেখামাসি স্বপ্ন আনল বাড়ি বয়ে ,
ভাল পাত্র, পন ছাড়াই ঘরে তুলবে তাকে।
সংসার হবে নাকি তার ঠিক যেমনটি চায় সে।
আশায় বুক বেঁধে সাড়া দিল অশানির ডাকে,
এগলি ,,ওগলি কত রোশনাই পাড়া জুড়ে ।
চোখ ধাঁধান আলোর বাহার, কানে আসছে গান
চড়া মেকাপে উপাস্থিত এই মেয়েগুলো কারা?
এত সাজ সজ্জা, আলো, গান তার জন্য?
হাজার প্রশ্নের ভীড়ে কখন মেয়েটি হল বিক্রি
টেরও পেল না উঠতি যৌবনের এই যুবতি।।
এখন প্রতিরাতে তার বাসর সাজে, খেলাঘর হয়,
জীবন সঙ্গী নেই কেউ, তবে শয্যা সঙ্গী রোজই নতুন।।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন