শনিবার, ৩০ জুন, ২০১৮

উজান উপাধ্যায়

আলপিন



হঠাৎই ঈশ্বরীকে দেখলাম

বালি ভর্তি পড়ে থাকা ফালতু রোয়াকে 

আর্থারাইটিস কি‍ংবা দূরারোগ্য জ্বরে

বি এম ডব্লিউ গাড়ি কড়া ব্রেক কষে 
ঘেঁষটে ঘেঁষটে আচমকা থেমে গেলে

পিথাগোরাসের উপপাদ্যে উচ্চতা অতিভুজে হেলে যায় 

কবি বিত্তবান হলে ঈশ্বরী তো ভিখারিনি হবে
আশ্চর্য হবার তো কিছু নেই

বরং অবাক চোখে পোড়া সিগারেট নেড়েচেড়ে 
ঈশ্বরী আলপিন খুঁজে যায় নিবিষ্ট ইশারায়...



◆◆◆◆◆◆

বহ্নিশিখা



মেয়েটি হন্তদন্ত হয়ে মেট্রো ছেড়ে অটো , অটো ছেড়ে টোটো ...বাড়ি থেকে বাজার ....খুঁজে যাচ্ছে সস্তা ফুলদানি , টাটকা মটরশুঁটি , চিনিস্বাদের হিমসাগর , ছেলের মৌসম্বী লেবু , মায়ের 
অম্লো ডিপিন , বি .পি . -র ট্যাবলেট ...

হাঁসফাঁস করছে ফুসফুস , দম লেগে যাচ্ছে  হিসেব মেলাতে।
অথচ সহজে যেটা পড়ে ছিলো হাতের নাগালে ...চোখের কোণায় ...সেই তীব্র আশ্লিষ্টশানু প্রেমের অক্ষরগুলো বারবার ঝুরঝুর করে পরে যাচ্ছে পাড়ার গলির মজা ড্রেনে ....

থমকে দাঁড়িয়ে মেয়ে ওড়নার ঘামগন্ধে
প্রায় শেষতম প্রশ্বাস টুকু প্রতারক কবিটির জন্যে রাখা ঘৃণার থুতুতে টেনে আনে ....ওয়াক ওয়াক শব্দ শীৎকারে প্রতিবেশী চাতাল উঠোন থতমত খায় ...

ল্যাম্পপোস্ট হতভম্ব হয়ে  কোমরের ভাঁজে চূড়ান্ত উষ্ণতা ছুঁয়ে রাস্তাটির বুকে মাথা রাখে ....

মেয়েটি চিনতে পারে ওকে ...
ছুটে ছুটে পাগলের মতো জড়ো করে গুঁড়ো গুঁড়ো ছিন্নভিন্ন হৃৎপিণ্ডে মুচরিয়ে থাকা শীর্ণ কবিতা টাকে।


◆◆◆◆◆●

হায়



শতাব্দী পার হতে যায় , আমার মেয়েটা খেলতে যায়না মাঠে  ..
পায়ের পাতায় সবুজ ঘাসের প্রতিধ্বনি
লুপ্ত হয়ে গেছে ....

অথচ একদিন ক্লোরোফিল চাষ হতো সবুজ হৃদয়ে ...

হায় ....

মেয়েটা আমার সন্ধ্যার কালোঘাসে
কান্না কুড়ায়...

খেলতে যাবার জন্য এখন সাদা কালো হাতি ...ঘোড়া ...গজ ...
প্রতিধ্বনি মরে যাওয়া কত যে সহজ ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন