বই
অক্ষর জ্ঞান কবে হয়েছে মনে নেই।অ এ অজগর, আ এ আম পড়তে পড়তে কবে থেকে যে বই পড়া শুরু করেছি তার সঠিক দিনক্ষন জানি না।তবে এটা মনে আছে ওই বর্ণপরিচয় এর দ্বিতীয় ভাগের গোপাল আর রাখালের নীতি কথার গল্প গুলো খুব প্রিয় ছিলো।হয়ত আমার গল্প পড়া সেখান থেকেই শুরু।খুব ছোটো থেকে কমিক্স বই পড়ার খুব নেশা ছিলো।অরণ্যদেব,ম্যানড্রক, নন্টে ফন্টে,হাদা ভোঁদা এইসব।তারপর তো পড়লাম ছোটোদের রামায়ন, ঠাকুমার ঝুলি,ঠাকুরদার ঝুলি, বেতাল পঞ্চবিংশতি। বোমক্যেশ,ফেলুদা,পান্ডব গোয়েন্দা এগুলো তো মুখস্ত ছিলো।এছাড়া সন্দেশ,চাঁদ মামা,শুকতারা এগুলো তো ছিলোই।
আমাদের পাড়ায় একটি লাইব্রেরী ছিলো।অনেক পুরানো।জায়গাটা ছিলো একটা খালি প্লটের মধ্যে কাঠের দোতলা ঘর,আর সেটাই লাইব্রেরী। সেটা কখনো বিকালে বা রাতে খোলা থাকতো না।কারন গেট থেকে জংগলের মতো গাছপালা। সংকীর্ণ রাস্তা,আর ভাঙা চোরা একটা কাঠের মই এর মতো সিঁড়ি। তার ওপরে আস্ত একটা লাইব্রেরী। সেইখানে কাকিমার জন্য বই আনতে যেতাম,হাতে থাকতো কাগজের চিঁরকুট,তাতে বইয়ের নাম ও লেখকের নাম লেখা থাকতো।এইভাবেই শুরু হয় আমার জ্ঞানত বই পড়া শুরু।
কত যে বকা খেয়েছি এই বই পড়ার নেশার জন্য তার ইয়ত্তা নেই।বইয়ের ফাঁকেফাঁকে পড়া তো ছিলোই, এমন কি বাথরুম এও গুপ্ত জায়গাতে বই লুকিয়ে রাখতাম কমিক্সের।
বাড়ি বদল হওয়ার পর নতুন জায়গাতে এসে লাইব্রেরীর খোজ না পেয়ে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম।খালি মনে হতো দিন কাটবে কি ভাবে!কারো বাড়ি বই দেখলে বুভুক্ষুর মতো তাকিয়ে থাকতাম।কখনো চাইতাম।কেউ দিতো, কেউ দিতো না।তারপর তো স্কুলের থেকে লাইব্রেরীর বই পেতাম।নিজের টা শেষ করে বন্ধুদের গুলোও শেষ করতাম।এছাড়া বিভিন্ন পুরোনো ম্যাগাজিন ও সংগ্রহ করতাম,ছেঁড়া ফাটা সব।আমার তখন বই চাই।মনে পড়ে,বই খাতা বিক্রি করার সময় সেই কাকুর কাছ থেকেও পুরোনো ম্যাগাজিন চেয়ে নিতাম।
নিজের টিউশন এর পয়সাতে প্রথম কিনেছিলাম শরৎ চন্দ্রের 'দত্তা', ৩ টাকা ৫০ পয়সা দাম নিয়েছিলো তখন বইমেলায়।সেই বই কেনার নেশা এখনো আছে।বই হাতে নিয়ে কত যে মানস ভ্রমণ করেছি তার ঠিক নেই।এই বই পড়েই কখনো পাহাড়ে,কখনো সমুদ্রে, কখোনো বা নাম না জানা নতুন যানে চেপে নানান এডভেঞ্চারে সাথী হয়েছি।মহাশ্বেতা দেবী, তসলিমা নাসরিন এর বই পড়ে মন গর্জে ঊঠেছে।আবার রবীন্দ্র নাথের শেষের কবিতার লাবন্য কে চিনে মন পরিণত হয়েছে।জীবনের সাথীরূপে যাকে চেয়ছি তার অবয়ব মনে মনে সৃষ্টি করেছি এই বই পড়েই। কলেজে উঠে পড়েছিলাম আশাপূর্ণা দেবীর প্রথম প্রতিশ্রুতি, সূবর্ণরেখা,বকুল কথা।মনে আছে বেশ কয়েকদিন আবেশে ছিলাম।
পুজোবার্ষিকীর যত বই বের হতো, প্রায় সবই পুজোর আগে পড়া সারা হয়ে যেতো।
রাত জেগে বই পড়ার নেশা আজও আছে।বাসে ট্রেনে দূরে কোথাও গেলে আজও সংগী সেই বই।
এখনো উপহারে কেউ বই দিলে খুব আনন্দ হয়।নতুন বইয়ের যে গন্ধ তা আজও মন কে প্রশান্ত করে।যতই মোবাইল এ গল্প পড়ি, হাতে বই নিয়ে পড়ার মজাই আলাদা।আমার ছেলে মেয়ের মধ্যেও আমি কিছুটা এই বই পড়ার অভ্যাস দেখি।মনে মনে শান্তি পাই এই ভেবে যে তারা নিজেদের পরম বন্ধুকে যেনো এইভাবেই ধরে রাখে।
অক্ষর জ্ঞান কবে হয়েছে মনে নেই।অ এ অজগর, আ এ আম পড়তে পড়তে কবে থেকে যে বই পড়া শুরু করেছি তার সঠিক দিনক্ষন জানি না।তবে এটা মনে আছে ওই বর্ণপরিচয় এর দ্বিতীয় ভাগের গোপাল আর রাখালের নীতি কথার গল্প গুলো খুব প্রিয় ছিলো।হয়ত আমার গল্প পড়া সেখান থেকেই শুরু।খুব ছোটো থেকে কমিক্স বই পড়ার খুব নেশা ছিলো।অরণ্যদেব,ম্যানড্রক, নন্টে ফন্টে,হাদা ভোঁদা এইসব।তারপর তো পড়লাম ছোটোদের রামায়ন, ঠাকুমার ঝুলি,ঠাকুরদার ঝুলি, বেতাল পঞ্চবিংশতি। বোমক্যেশ,ফেলুদা,পান্ডব গোয়েন্দা এগুলো তো মুখস্ত ছিলো।এছাড়া সন্দেশ,চাঁদ মামা,শুকতারা এগুলো তো ছিলোই।
আমাদের পাড়ায় একটি লাইব্রেরী ছিলো।অনেক পুরানো।জায়গাটা ছিলো একটা খালি প্লটের মধ্যে কাঠের দোতলা ঘর,আর সেটাই লাইব্রেরী। সেটা কখনো বিকালে বা রাতে খোলা থাকতো না।কারন গেট থেকে জংগলের মতো গাছপালা। সংকীর্ণ রাস্তা,আর ভাঙা চোরা একটা কাঠের মই এর মতো সিঁড়ি। তার ওপরে আস্ত একটা লাইব্রেরী। সেইখানে কাকিমার জন্য বই আনতে যেতাম,হাতে থাকতো কাগজের চিঁরকুট,তাতে বইয়ের নাম ও লেখকের নাম লেখা থাকতো।এইভাবেই শুরু হয় আমার জ্ঞানত বই পড়া শুরু।
কত যে বকা খেয়েছি এই বই পড়ার নেশার জন্য তার ইয়ত্তা নেই।বইয়ের ফাঁকেফাঁকে পড়া তো ছিলোই, এমন কি বাথরুম এও গুপ্ত জায়গাতে বই লুকিয়ে রাখতাম কমিক্সের।
বাড়ি বদল হওয়ার পর নতুন জায়গাতে এসে লাইব্রেরীর খোজ না পেয়ে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম।খালি মনে হতো দিন কাটবে কি ভাবে!কারো বাড়ি বই দেখলে বুভুক্ষুর মতো তাকিয়ে থাকতাম।কখনো চাইতাম।কেউ দিতো, কেউ দিতো না।তারপর তো স্কুলের থেকে লাইব্রেরীর বই পেতাম।নিজের টা শেষ করে বন্ধুদের গুলোও শেষ করতাম।এছাড়া বিভিন্ন পুরোনো ম্যাগাজিন ও সংগ্রহ করতাম,ছেঁড়া ফাটা সব।আমার তখন বই চাই।মনে পড়ে,বই খাতা বিক্রি করার সময় সেই কাকুর কাছ থেকেও পুরোনো ম্যাগাজিন চেয়ে নিতাম।
নিজের টিউশন এর পয়সাতে প্রথম কিনেছিলাম শরৎ চন্দ্রের 'দত্তা', ৩ টাকা ৫০ পয়সা দাম নিয়েছিলো তখন বইমেলায়।সেই বই কেনার নেশা এখনো আছে।বই হাতে নিয়ে কত যে মানস ভ্রমণ করেছি তার ঠিক নেই।এই বই পড়েই কখনো পাহাড়ে,কখনো সমুদ্রে, কখোনো বা নাম না জানা নতুন যানে চেপে নানান এডভেঞ্চারে সাথী হয়েছি।মহাশ্বেতা দেবী, তসলিমা নাসরিন এর বই পড়ে মন গর্জে ঊঠেছে।আবার রবীন্দ্র নাথের শেষের কবিতার লাবন্য কে চিনে মন পরিণত হয়েছে।জীবনের সাথীরূপে যাকে চেয়ছি তার অবয়ব মনে মনে সৃষ্টি করেছি এই বই পড়েই। কলেজে উঠে পড়েছিলাম আশাপূর্ণা দেবীর প্রথম প্রতিশ্রুতি, সূবর্ণরেখা,বকুল কথা।মনে আছে বেশ কয়েকদিন আবেশে ছিলাম।
পুজোবার্ষিকীর যত বই বের হতো, প্রায় সবই পুজোর আগে পড়া সারা হয়ে যেতো।
রাত জেগে বই পড়ার নেশা আজও আছে।বাসে ট্রেনে দূরে কোথাও গেলে আজও সংগী সেই বই।
এখনো উপহারে কেউ বই দিলে খুব আনন্দ হয়।নতুন বইয়ের যে গন্ধ তা আজও মন কে প্রশান্ত করে।যতই মোবাইল এ গল্প পড়ি, হাতে বই নিয়ে পড়ার মজাই আলাদা।আমার ছেলে মেয়ের মধ্যেও আমি কিছুটা এই বই পড়ার অভ্যাস দেখি।মনে মনে শান্তি পাই এই ভেবে যে তারা নিজেদের পরম বন্ধুকে যেনো এইভাবেই ধরে রাখে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন