ছায়াবীথিতলে
কৃষ্ণ তো স্বয়ং বাঁকা
আলোকেও বাঁকিয়ে দিয়েছে, অভিকর্ষ, ব্রহ্মা সেই
আমাকে
তোমার প্রতি বস্তুগত করে
সরল থাকি না, মুণ্ড ঘুরে আসে পায়ে
বুঝি, সকলই বর্তুল
গড়ানোর
প্রতিভাই প্রকৃতি চেয়েছে
তবু একটি তূণের মতো জ্যা থেকে বেরিয়ে আসে
আমারই অযুত খণ্ড
তাদের ছিঁড়েছি আর ছিন্নপ্রক্রিয়ায় আনন্দ ছিটকে আসে
আমাকে তোমার প্রতি পর্যটক করে
ঘুরি, পথে শ্যাওলায় পিছলে যাই
গুল্মে আটকে পড়ে
প্রিয় বন্ধুগণ
তাদের চিৎকার এসে আমাকে ধাক্কা দেয়
পড়ি এক অনন্ত কুয়োয়
দেখি, তার সর্বস্ব কৃষ্ণের বর্ণ
একটি আলোকরশ্মি
রজ্জুর মতো ধরে উঠি কোনোমতে
চারিপাশে সমুদ্র সুরার
নেশা
হয়
আমার
চৈতন্য থেকে তুলে দেয় ছাল
বুঝি, নগ্নতা ভিন্ন আর স্বাধীনতা নেই
যতক্ষণ আছে ভর তিনি টেনে রেখেছেন প্রাণ
দুইটি তন্তুকে পেঁচিয়ে দুজন সর্পের মতো
পেঁচিয়ে কাঠামো করেছেন
দিয়েছেন
বিষ-বিদ্যা-দংশন ও কাম
তিনি, বিদ্যুতের ছিপ
তিনি, তরঙ্গশকট
আমাকে
তোমার প্রতি যাত্রী বানালেন
অথচ নিজেই চাকা হতে চেয়েছি
সেই কত কত কাল
কাল, সেও বেঁকে যায়, ব্রহ্মা এরকম
তাঁকে আড়াল করতে টুপি পরেছি মাথায়
যদি তোমার সঙ্গে দেখা হয় খুলে ফেলব
হে আমার হারানো আধুলি
ফাটিয়ে ফেলব,প্রিয়, পর্দা ও পরম
তারপর ডুব, ডুব, ডুব
দেখি, জলের গভীরে
একটি কুঠুরি আছে আলো জ্বেলে
ওখানে শয্যাটি
আমার পতনের জন্য নির্মিত হয়েছে
যেন আমি না ঘুমোলে
জাগে না সন্তান
কোনো নদী,উপত্যকা, কোনো বনাঞ্চল
পর্বত, সাগর, হ্রদ, পানি, শিলা, বালু
কোনো
শাল, বট, জাম, ডুমুরের গাছ
\তৃণ, ফার্ন, মস কোনো, হাতি, বাঘ, ভালু
মৎস,
শামুক, কেঁচো, কোনো জেলিমাছ
এত
এত জন্ম, এই ছায়াবীথিতল
এই
চক্রভবনের
গায়ে
যে বৃক্ষটি আঁকা
সহস্র পাতার ফাঁকে ফুল হয়ে দেখা দিলে তুমি
স্পর্শ করি, ওষ্ঠে নিই, কেশর নাড়াই
সজোরে বিধস্ত হয় বীজতন্ত্রগৃহ
ফোঁটাদের গুণিতক করি ভালবেসে
এবং নির্গুণ করি তোমাকে, কামনা
কে তবে আমাকে টানে
সুষুম্না কে ধনুক বানাল
কে তবে প্রজন্মদড়ি
ছিন্ন করে মাখিয়েছে কালো
কে আমায় বেঁধে
রাখে সংবেদে
অভিকর্ষ, হে প্রিয় বিনোদ
জন্মের যা কিছু শোধবোধ
যা কিছু বস্ত্রের বিপনন
খুলে নিলে পড়ে রয় মন
তাও বাঁকে, তাও বেঁকে যায়
এই বিশ্ব গোলের সংজ্ঞায়
পাক খাচ্ছে, পাকের ব্যঞ্জন
চন্দ্রতারা রান্নার বাসন
আলো তাকে মাজে, অন্ধকার
এঁটো মোছে, কখনো আহার
করতে
গিয়ে দেখি তোমাকেই
ছবি কৃতজ্ঞতা স্বীকার : অরিণ রায়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন