শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

বিশ্বদীপ দে

কবিতা


সমুদ্রঘর-১
ফরফর করে উড়ে যাচ্ছে
ক্যালেন্ডারের পাতার মতো দমদমগামী মেট্রো
বাড়ি ফিরছে চড়া রোদ্দুর মেখে
ফাঁকা গাড়িতে শববাহকেরা যেভাবে ফেরে জীবনের দিকে

পাখিরা টের পায় আজও অপরাহ্ন এলে ঠিক
মেপে মেপে কীভাবে বৃষ্টি আসে উড়ুক্কু রিকশায়...

তোমার সমুদ্রে আমি নিশ্বাসের ঢেউ গুনি আজও...

সমুদ্রঘর-২
ট্যুরিস্ট স্পটে যেও না
আমি তোমায় বলেছিলাম
এখানে দাঁত, নখ, ছুরি, কাঁচিতে
ছিন্নভিন্ন বালিয়াড়ি
পেরিয়ে যাই এসো, ওই ওদিকে...
যেখানে ঝাপসা ভেজা সূর্যাস্ত একা একা
বসে আছে পাড়ে...
হাতে নতুন কেনা কাব্যগ্রন্থ
তরুণ কবির...

সমুদ্রঘর-৩
খুব বেশি রাতে দিগন্তের দিকে তাকালে মনে হয়, ওইদিকে সমুদ্র আছে। অবশ্য বাড়িঘরের ফাঁক দিয়ে কতটা আর দেখা যায়, বড়জোর ক্লিভেজটুকু...
সেই ইশারার লোভে লালচে আকাশের খোলা শরীর থেকে সমুদ্রের বাতাস ছুটে আসে। মনে হয় এগিয়ে গেলে... মোড় ঘুরলেই... ওই তো...
অবশ্য এটাও তো সত্যি, আমি ভালো করেই জানি সমুদ্র-ফমুদ্র কিস্যু নেই পৃথিবীতে। কিন্তু এই যে নিরালা রাতে, শুয়ে শুয়ে সমুদ্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি মনে মনে, এটুকুই বা কম কী?

সমুদ্রঘর-৪
জুতোয় বালির কণা এখনও রয়ে গেছে।

দু-একটা কড়া মেগা সিরিয়াল আর
বিরক্তিকর বৃষ্টির পাক খেতে থাকা...
এসবের মধ্যে কোথাও নেই সমুদ্রের গন্ধ
শ্যাওলার পিচ্ছিল পথ বেয়ে ফিরে এসেছি বহুকাল

জুতোয় বালির কণা তবু রয়ে গেছে, আজও...


প্রচ্ছদ শিল্পী : সুদীপা কুন্ডু






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন