আরাত্রিকা
(১)
সেই যে পদ্মপাতায় জল ধরেছি,
অনেক বছর আগে,
এখনো জল নীলকমল আর লালকমলে জাগে,
সেই যে চুলে মেঘ ধরেছি, চোখে বজ্রপাত,
এখনো জাগে নীলকমল আর লালকমলে রাত,
সেই আলোতে বসন পরে ভোর হয়েছে কবে,
সব বাসনা মাটির ওপর ভোরের শিশির হবে।।
(২)
কোথায় তোমার বাড়ি
ও মেয়ে কোথায় তোমার বাড়ি??
-যেখান থেকে আসার সময়
বাবার গোত্র, পদবিটা হল ছাড়াছাড়ি।।
কোথায় তোমার বাড়ি,
ও মেয়ে কোথায় তোমার বাড়ি??
--যেখানে খাট, বিছানা পাতা, হাড়িকুড়ি উনোন উঠোন,
সাথে হৃদয় ছেঁচা পুরুষ রতন, স্বপ্ন কুটে
মশলাপাতির গন্ধ রকমারি,
ইচ্ছেমতো বস্ত্রহরণ, ইচ্ছেমতো শাড়ি।।
কোথায় তোমার বাড়ি,
ও মেয়ে কোথায় তোমার বাড়ি??
-- ঘর বানাতে দর বুঝেছি নিজের এখন,
তাই ভেলায় চড়ে দরের খেলায়
একাই সাঁতার কাঁটি,
শিকড়বিহীন জমিন দারীর
সার বুঝেছি খাঁটি।।
(৩)
সাগরপিয়াসী সেই নারী
সাগর ডিঙিয়ে চলে
যেন ঊর্মির কান্ডারী,
চোখে তার সূদুর দিগন্তরেখা,
বালিদের সাথে বসে ঝাউপাতা জড়ো করে একা,
ঝিনুকের মতো যত লবণ অধ্যায়,
মুক্তার দৃঢ়তা তার বুকে দিয়ে যায়।।
(৪)
প্রথম কদম ফুলটি ছিল গাছের কাছের ডালে,
মন দিয়েছে মুখ্যু মেয়ে কিশোরী খেয়ালে,
কৈ সে ডাকে, কৈ ডাকে না,কৈ পাড়ে সে, কৈ পাড়ে না,
লোহার বাসরঘর,
মনসা গোঁজে খোঁপার কাঁটায় সাপের সাদিক বর, শাপজড়ানো বাপপেয়ারে
সহজ লখীন্দর,
বর নাকি সে অভিসম্পাত, শয্যা পুড়ে ছাই, সগগো কাঁপান নাচ দেখবেন
যমের সোদোর ভাই,
সোদোর নাকি অধর মাটি, সোনার কাঠি, রূপার কাঠি
ঘুম ধরেছে, খুব যেন সে, চোখ জুড়ানো, পাখ মেলা সে, স্বপ্ন কাঁচা খায়,
বেউলো সতী আত্মরতি স্বমৈথুনে বায়,
খায় সে জীবন, মনের মতন পলান্ন ভোগ চড়ে,
বর্ষা লেগে কদম স্তবক কাদায় ঝরে পড়ে,
প্রেম সে অবুঝ, হা কুচকুচ, কার সে চাবুক, কার বন্দুক,
বেউলো ক্যানে ভাসে, কলার মান্দাসে,
সাপের চুমুক, বিষকম্বুক, শালের পাতে ছলকানো দুধ,
লোহার বাসর, ঝাঁঝট কাঁসর, বিদ্রোহী আয়ুধ।।
চিত্রঋণ- ঈষা চৌধুরী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন