বুধবার, ১৪ জুন, ২০১৭

অনিন্দ্য রায়

ছায়াবীথিতলে


অনন্তে শিকারী এক চলেছেন ভল্ল হাতে। মহাকাশ ফেড়ে তিনি ছুটছেন আঁধারের লতাপাতা সরিয়ে, মাড়িয়ে। যদি নরম জন্তু কোনো চোখে পড়ে, যদি ফলায় বিদ্ধ করে কাঁধে নিয়ে বাড়ি ফেরা যায়। আলোর চকিত দ্যুতি দেখলেই অস্ত্র ছুঁড়ে দেন। লাগে না কোথাও। শূন্যতায় ধাক্কা লেগে ফিরে আসে। আবার কুড়িয়ে তা দৌড়ে চলেন তিনি। কোথায় শিকার? চক্ষু সশ্রম, কানও প্রতিভ। সহসা শব্দ আসে, উর্জাপুকুরে কোনো হরিণী তৃষ্ণায় পান করছে বোধহয়।  সেই লক্ষ্যে তিনি তৎক্ষণাৎ ছোঁড়েন আয়ুধ। প্রচন্ড আর্তনাদে খসে যায়  আকাশের ইঁট। এবং সে ফোকরে মুখ ঢুকিয়ে দেখেন, তাঁরই আঘাতে একটি মানুষ ছিন্নভিন্ন হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে সে সব টুকরো আকাশে নক্ষত্র হয়ে চকচক করে আর হৃদয়টি  চাঁদ হয়ে ঝুলে থাকে, অভিসম্পাত দেয়, “পুড়ে খাক হয়ে যাও”। এবং  তিনিও  জ্বলে ওঠেন তখনই। সময়ের অর্ধেক, যা তাঁর মুখোমুখি, এ দহনে আলোকিত হল।  শিকারের খন্ডগুলি উল্টো অর্ধে রয়ে যায়। অভিশাপে  তাদের লাগাল তিনি কখনো পান না

তিনি সূর্য
আমাদের আদিম শিকারী
রশ্মির বল্লম তিনি আমাদের দিকে ছুঁড়ে দেন সারাদিন
গাছের পাতায় লাগে, আমাদের চর্মে লাগে, চক্ষে লাগে
মর্ম চিরে যায়

তাঁর দেহে  জটিলাকুটিলা এসে একত্রে  করেন বাস
   একে অম্লজান আর দু-য়ে হিলিয়াম
      এবং আমরা জানি একে একে তৈরি হয় দুই
          তাপ আর আলোর ক্যানোন  

দশদিকে ছোঁড়েন তিনি তা
   যেন দিন পের করে, গোধূলি পেরিয়ে
      ওইসব নীহারিকা, নক্ষত্রের গায়ে মেরে  
          শিকারের অতৃপ্ত বাসনা এখনো মেটাতে চান

প্রতিশোধে তারাও কার্তুজ ছোঁড়ে

এই যুদ্ধের মাঝে
আমরা, উলুখাগড়ার দল
ভয়ে ভয়ে থাকি  

সবাই তো জানি সত্য কোনখানে
তবু লিখি না কোথাও
অঙ্ক কষি, থিওরি বানাই   

বাচ্চাদের ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির অন্য সব ব্যাখা দিই
যেন তারা লড়াইয়ের ভয় কখনো না পায়



ছবি কৃতজ্ঞতা স্বীকার : অরিণ রায়

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন