দৃষ্টি
(১)
তোমার আড় চোখের দৃষ্টি -
আজও আমার মনের দেওয়াল কুড়ে কুড়ে খায়।
ইচ্ছেরা জমাট বেঁধে মেঘের সাথে ঘুরে বেড়ায়।
ধীরে ধীরে ভারী হয়ে আসে আকাশের বুক।
তবুও বৃষ্টি হয় কই?
ইচ্ছেরা আরও জমাট বাঁধে,
আরও অ-নে-ক-টা জায়গা জুড়ে জমাট বাঁধে,
নির্দিষ্ট দূরত্ব পার করে থমকে যেতে হয় তাকে।
তবুও বৃষ্টি হয় কই?
শুধুই দৃষ্টি ফিরে ফিরে আসে...
(২)
ফুটপাতের ঠিক্ মাঝখানে -
হাঁটু মুড়ে বসে আছে শিশুটি,
হাতে একটা বাটি, কিছু খুচরো পয়সা।
গায়ে জামা নেই, হলুদ প্যান্ট।
সারা শরীর ধুলোয় ভর্তি, চুলটা লাল, চিটচিটে।
দুটো চোখেই দেখতে পায়না, অন্ধ।
ঠিক্ যেমন একটা ফুল যখন
ফুটেই ঝরে যায় মাটিতে,
আর সভ্য সমাজের চোখওলা মানুষগুলো
পায়ে পায়ে মাড়িয়ে যায়, তেমনই ও..
যতজনের পা ছোঁয়ার সুযোগ পাচ্ছে
প্রত্যেককেই অনুরোধ করছে -
"বাবু দু'দিন কিছু খাইনি,
দুটো টাকা দাও না..."
কি অদ্ভুৎ,
ভগবান এই সভ্য সমাজকে চোখ দিয়েছে,
কিন্তু উপযুক্ত দৃষ্টি দেয়নি।
(৩)
দৃষ্টি তোমার শরীর অবধি
মনের ভেতর যায়না,
শরীরটা তো রঙের বাক্স
ছবি আঁকে আয়না।
দৃষ্টি যেদিন দরজা খুলে
রোদ মাখতে শিখবে,
সেদিন তুমি মনের ঘরে
প্রেমের চিঠি লিখবে।
সেই চিঠিটাই পৌঁছে দেবে
লুকিয়ে মনের পিওন,
বুঝবে সেদিন শরীর তুচ্ছ
নিভবে বুকের নিয়ন।
উড়বে সেদিন পাখির পালক
নীলচে আকাশ জুড়ে,
লজ্জা পাবে, মুখ লুকাবে
দৃষ্টি যাবে পুড়ে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন