রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

মিনাক্ষী ঘোষ

                                  


কোল্হাপুর ডায়েরী ৯

হোটেলে ঢুকতে ঢুকতেই মিমি দেখতে পেল লাউঞ্জে তিনটে টেবিলকেই পাশাপাশি জুড়ে দেওয়া হয়েছে। লাঞ্চের প্রস্তুতি। মিমিকে দেখে বোসদা বললেন, লাঞ্চের অর্ডার কিন্তু দিয়ে দিয়েছি।মেনু কিন্তু আমরাই সিলেক্ট করেছি। মিমি সলজ্জ হেসে ঘাড় কাত করলো। -  'না দাদা,অসুবিধের কিচ্ছু নেই!চলবে চলবে। '
এ পাশে তাকিয়ে দেখলো বোস বৌদি
তার পাশের চেয়ারটা ফাঁকা রেখেছেন। মিমিকে ইশারায় ডাকলেন পাশে এসে বসবার জন্য। যেন স্নেহময়ী বড় দিদি
ছোট বোনের জন্য অপেক্ষা করে রয়েছেন! মিত্র বৌদি বললেন, মিমি রূপা তোমার জায়গাটা আগেই সিলেক্ট করে রেখেছে। আমাদের নো চান্স!
এই স্নেহ এই মমতা মিমির প্রবাসজীবনের এক বড় সম্পদ।
লাঞ্চের পরে ঠিক হোলো রোদ একটু পড়ে এলে ফোর্টের বাকি অংশটা ঘুরে দেখা হবে সকলে মিলে।
এর মধ্যে হোটেলের ম্যানেজার এসে একবার ঘুরে গেলেন।
বোসদা বিশ্বাসদা সকলে যে পূর্বপরিচিত এবং সকলের সাথেই যথেষ্ট পরিমাণে হৃদ্যতা রয়েছে কথাবার্তার মাধ্যমে
মিমি  বেশ বুঝতে পারলো।
সকলেই বেশ আড্ডার মুডে রয়েছে। এত অল্প সময়ে সব আলোচনায় যোগ দেওয়া সম্ভব ও নয় অনেক বিষয়বস্তুই যদিও তার এবং সূর্যর কাছে অজানা  তবু খুনসটিগুলো দিব্যি উপভোগ করছিলো সূর্য আর মিমি দুজনেই।
ভটচাজ বৌদি বললেন,
-জানো মিমি' পান্হালা শব্দের অর্থ কি?  পান্হালা শব্দর মানে হোলো নাগেদের বাসস্থান।পান্হালার আসল নাম পান্হাল গড়। এছাড়াও এই ফোর্টটার নাম পান্হালা কারণ এর গঠনটাও  খানিকটা সর্পাকৃতি এর ভেতরে এত সর্পিল গলিঘুঁজি রয়েছে যে পান্হালা নাম সার্থক। বিশ্বাস বৌদিও এতক্ষণ মন দিয়ে শুনছিলেন ওদের কথা। ভটচাজবৌদি
থামতেই উনি পাশ থেকে বলে উঠলেন, আর জানোতো মিমি পান্হালাতে একটা গুহা আছে এটাকে মহর্ষি পরাশরের গুহা বলা হয়। মনে করা হয় ব্যাসদেবের পিতা মহর্ষি পরাশর এখানে বাস করতেন।1730 খ্রীষ্টাব্দে লেখা কোল্হাপুর পুরাণ বা করবীরে  এই পান্হালার উল্লেখ আছে। পুরনো লিপিতে এর নাম পদ্মনাল বা পন্নগালয়। পন্নগ মানে হলো সাপ।  মহর্ষি পরাশর যে গুহায় বাস করতেন সেটা বোধহয় নাগেদের বাসস্থান ও ছিল বোধহয়  মিমি বিস্মিত ও অভিভূত হচ্ছিলো এদের কথায়। সেটা লক্ষ্য করে বিশ্বাসবৌদি বললেন, আসলে কি জানোতো, এই শহরটাকে এত ভালবেসে ফেলেছি যে এর সম্পর্কে যত  পৌরাণিক কাহিনী আছে সেগুলো ও জানবার আগ্রহে যতটা পেরেছি পড়তে চেষ্টা করেছি। আরে আমি ও হিষ্ট্রির ছাত্রী একটু কৌতূহল তো থাকবেই বলো! দু বছর বাংলার বাইরে এসে মিমি কেবল জীবনধারণের তাগিদে দৌড়েই গেছে, মনের খিদের যে পুষ্টি দরকার আজ যেন মনে হলো এখানে এই কোল্হাপুরে এসে তার কিছু আস্বাদ সে গ্রহণ করতে পারবে।
দেখতে দেখতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল। মে মাসের মাঝামাঝি তবু পান্হালার বাতাসে হাল্কা হিমেল হাওয়ার পরশ। প্রায় চারটে নাগাদ মিমিরা আবার যে যার নিজস্ব বাহনে। আশপাশটুকু ঘুরে দেখে আজকের মতো প্রত্যাবর্তন।
সারাদিনের ধকলে সকলেই কমবেশী পরিশ্রান্ত।একদিনে সবটা ঘুরে দেখা সম্ভব ও নয়। পরে আবার নাহয় আসা যাবে কোন একসময়। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে  পশ্চিম দিগন্তে নেমে আসছে রক্তিম সূর্য।দিনান্তের ক্লান্ত রবি পাহাড়ী পথের কিনারে কিনারে ছড়িয়ে দিয়েছে  শেষ রশ্মি আভাটুকু। নিবিড় অরণ্যানীর বুক চিরে আসন্ন সন্ধ্যার পূর্বাভাস।  সেদিকে তাকিয়ে মিমির মন যেন তাকে এই পথের বাঁকে অজানা কোন দিকে যাবার সঙ্কেত ঘোষণা করে বলে গেল'হেথা নয় হেথা নয়, অন্য কোথা অন্য কোনখানে।'
এই কথাই তো টেনে নিয়ে যায় অজানাকে জানার অচেনাকে চেনার হাতছানি দিয়ে। এই তো পরিক্রমা। এ পরিক্রমা সারা জীবনভর।
পাহাড়ী পথ ধীরে ধীরে নেমে আসছে সমতলে।এক অদ্ভুত ভাল লাগার রেশ নিয়ে মিমি ফিরলো তার নতুন বাসস্থানে।
ক্রমশঃ



রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

মিনাক্ষী ঘোষ

         


কোল্হাপুর ডায়েরী ৮
ব্রেকফাষ্ট সারতে সারতে বেলা এগারোটা বেজে গেল। তিনটে টেবিলে যথাক্রমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসেছিল ওরা।
গার্ডেন চেয়ার বেষ্টিত দুটি রেক্ট্যাঙ্গুলার টেবিলে মিষ্টারবৃন্দ ও রমণীকুল অনতিদূরে একটা গোল টেবিলে জেনারেশন গ্যাপ! অর্থাৎ কিনা মিমির সদ্য কৈশোরোত্তীর্ণ পুত্র অভি আর কৈশোর সোপানে প্রথম ধাপে পা রেখে কন্যা ঝিনুক সঙ্গে ওদের নবলব্ধ দাদা বৌদি বোসদার পুত্র ও পুত্রবধু
তিন্নি।ওদের কলকল শুনে মনে হচ্ছে যেন  কতকালের পরিচিতি একে অপরের সাথে। বলা বাহুল্য এই নতুন পাওয়া দাদা বৌদির সাহচর্যে  মিমির ছেলেমেয়ের গলায় ফেলে আসা আত্মীয়তার স্বাদ।
মে মাসের মাঝামাঝিতে সূর্য যদিও এখন প্রায় মধ্যগগনে তবু পান্হালার তাপমাত্রা আশ্চর্যজনকভাবে সুখাবহ।
হিলটপ এই হোটেলটা একেবারে পাহাড়ের গায়ে ঘেঁষে। পাঁচিলের ওপারেই খাড়া নেমে গেছে গভীর খাদ। যদিও সে খাদ মোটেও রুক্ষ বা পাথুরে নয় বরং শ্যামলিমা ধাপে ধাপে নেমে গেছে শেষ সীমানা অবধি।
হোটেল থেকে মাত্র কয়েক পা দূরেই পান্হালা ফোর্টের ভগ্নাবশেষ। হিষ্ট্রি আর আর্কিওলজির প্রতি প্রবল ঔৎসুক্য এক অমোঘ আকর্ষণে মিমিকে টানছিলো ফোর্টের দিকে। কিন্তু সময়ক্ষেত্রে দেখা গেল সেই মূহুর্তে কারোর ই বিশেষ ইচ্ছে নেই আড্ডা ছেড়ে ইতিহাসের পথে হাঁটবার। তার আরো একটা কারণ অবশ্য ই মিমিরা বাদে আর সকলের অজস্রবার পান্হালা ভ্রমণ। দর্শন তাই গৌণ এখানে জমায়েতটাই মুখ্য।
যেহেতু আর সব বৌদিরা বহুদিন ধরে এখানে বসবাসের কল্যাণে দীর্ঘদিনের পূর্বপরিচিত এবং সকলেই প্রায় সমবয়সী। তাদের তুলনায় মিমি বয়সে অপেক্ষাকৃতভাবে অনেকটাই ছোটো। তাই  অন্যান্য বৌদিরা নিজেদের মধ্যে নাম ধরে সম্বোধন করলেও মিমির কাছে সকলেই বৌদি
আখ্যায় সম্বোধিত।
এরমধ্যে বোস বৌদি একটু মৃদুভাষী যদিও ভূমিকাটা খানিকটা স্নেহশীলা অভিভাবিকার মতো। সবরকম রসিকতাই উপভোগ করছেন বিনা বাক্যক্ষেপে ঠোঁটের কোণায় স্মিত হাসিটি ঝুলিয়ে রেখে। মিত্র বৌদিও কম কথা বলেন তবে ওঁর মধ্যে বেশ ছেলেমানুষী ভাবটুকু লক্ষ্য করলো মিমি। বিশ্বাস বৌদি ও ভটচাজবৌদি দুজনেই খূব প্রাণোচ্ছল। এর মধ্যে বিশ্বাসবৌদি কোথ্থেকে  অবতারণা করলেন ভূতের কারসাজি।এই হিলটপ হোটেলে নাকি রাতবিরেতে তেনারা দৃষ্টিগোচর হন মাঝেমধ্যেই। বোঝো কান্ড! তেনারা এখানে থাকুন চাই না ই থাকুন এই ভরদুপুরে নিশ্চয় তারা ঢ্যালা মারতে বেরিয়ে আসবেননা! মিমির বলে এখন পায়ের তলায় সর্ষে নাচছে ফোর্টের অন্দরমহলের জন্য। অস্ফুটে সেকথা একবার উচ্চারণ করাতে ভটচাজবৌদি যদিও বা একটু দয়াপরবশ হলেন বোস বৌদি দিলেন অমনি তাকে বকুনি! দুজনে যদিও
নেমসেক তবু পরস্পরকে নাম ধরেই সম্বোধন করেন তারা।
- থামোতো রূপা তুমি মোটেও এখন যাবেনা। এই শরীর নিয়ে আর সিঁড়ি ভাঙতে হবেনা তোমার!
কথাপ্রসঙ্গে মিমি জানলো অদম্য প্রাণশক্তি বিশিষ্ট এই মহিলাটির দু দু বার অ‍্যাজিওপ্ল্যাষ্টি হয়ে গেছে।হয়েছে হাঁটুর প্যাটেলা ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন ও। ওনার কৌতুকপ্রিয় মুখভঙ্গি আর বডি ল্যাঙ্গোয়েজ দেখলে সে কথা বোঝে কার সাধ্যি!
দূর  থেকে গভীর অভিনিবেশ সহকারে বোসদার ছেলে আর ছেলের বৌ লক্ষ্য করছিলো এদিককার কথোপকথন। মিমির প্রায় হতাশ মুখের ভঙ্গিমা আঁচ করতে পেরে পুপু বললো,
- চলো আন্টি আমরা যাই তোমার সাথে। ওরা একটু বিশ্রাম নিক।'
মিমিকে নিয়ে ওরা চারজন পায়ে পায়ে এগোলো ফোর্টের দিকে। পুরোটাই প্রায় ভগ্নস্তূপ। ফোর্টের পাশ ঘেঁষে পরিখা কাটা যদিও এখন আর জল নেই তাতে। ভিতরে সিঁড়ি দিয়ে কয়েকধাপ নামলে  একটি গভীর কূপ।পুপু বললো এর নাম আন্ধার বাভড়ি।এই কূপটি একটি গুপ্ত কূপ। পান্হালা দুর্গের মূল জলের উৎস এইটাই। শত্রুপক্ষ  যাতে প্রবেশের পর পানীয় জলে বিষ মেশাতে না পারে তাই এই গোপনীয়তা। এর উপরে ত্রিতলবেষ্টিত ঘূর্ণ্যমান সোপানশ্রেণী ধাপে ধাপে নেমে গেছে কূপটির সন্নিকটে।এই কূপের নীচেও নাকি অজস্র গুপ্ত সুড়ঙ্গ রয়েছে যা পাহাড়ের অপরপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছে। এমন আরো অসংখ্য গূুপ্ত সুড়ঙ্গ রয়েছে ফোর্টের ভেতরে শত্রু আক্রমণ করলে যাতে নিরাপদে দুর্গের বাইরে বেরিয়ে যাওয়া যায়।
এ ফোর্টে প্রবেশের বেশ কয়েকটি দরওয়াজা রয়েছে তার মধ্যে মুখ্য দরওয়াজাটি হোলো চার দরওয়াজা। এছাড়াও র য়েছে  তিন দরওয়াজা ও বাঘ দরওয়াজা যদিও সব ই এখন প্রায় ভগ্নস্তূপে পরিণত।
এর উপরে একটি ছোট টিলার মতন। সিঁড়িগুলো খুব খাড়া খাড়া। মিমি আস্তে আস্তে উঠছিলো। মিমিকে ওভাবে কষ্ট করে উঠতে দেখে তাড়াতাড়ি এগিয়ে এলো তিন্নি। ততক্ষণে মিমির ছেলেমেয়ে পুপুর সাথে টিলার মাথায় উঠে গেছে। তিন্নি আর মিমি এসে দাঁড়ালো টিলার পাঁচিলের গা ঘেঁষে। অনভ্যাসের কারণে মিমি স্বভাবত ই একটু ক্লান্ত। সেটা বুঝতে পেরে তিন্নি বললো, চলো আন্টি
সামনের পাথরটার ওপর একটু বসি। ওখান থেকে নীচে
দেখা যাচ্ছে পাহাড়ের গায়ে গায়ে সর্পিল পথশ্রেণী। তার ই একটি ঢুকে গেছে অনতিদূরে একটি গুহাভ্যন্তরে।হয়তো
এই পথেই একদা যাতায়াত করতো অশ্বারোহী মারাঠা সৈন্য দল। পার্বত্য পথের সুচতুর ও কৌশলী যোদ্ধৃবৃন্দ। মিমি যেন মনশ্চক্ষে দেখতে পেল সারি সারি মারাঠা ঘোড়সওয়ার হাতে তাদের উন্মূুক্ত ক্ষুরধার  অসি আর কন্ঠে হর হর মহাদেও শ্লোগান।
চমক ভাঙলো তিন্নির কথায়। -'জানো আন্টি, এই যে
ভটচাজ আন্টিকে দেখছো এর সবটাই নিজের যন্ত্রণাকে
লুকিয়ে রাখার প্রচেষ্টা। নাগো আমি ওনার শরীরের কথা বলছিনা। ওনার বুকের ভেতর যে গভীর ক্ষত লুকিয়ে রয়েছে উচ্ছলতার প্রলেপে তাকে ঢেকে দেন মাত্র।।
এর আগের দিন আলাপ পরিচয়ের সময় মিমি শুনেছিলো ওনার একটিই ছেলে। দুর্দান্ত রেজাল্ট করেছিলো বোর্ডের পরীক্ষায়। ইঞ্জিনিয়ারির্  কম্প্লিট করে এখন প্যারিসে ম্যানেজমেন্ট পড়তে গিয়েছে। আজ জানলো ওর বড় ছেলের কথা। সে ও নাকি খুব ব্রিলিয়ান্ট ছিল। কোল্হাপুর ইনষ্টিটিউট অব টেকনোলজিতে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াকালীন ওর দুরারোগ্য লিউকেমিয়া ধরা পড়ে। সবরকম যথাসাধ্য ট্রিটমেন্ট ও প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কোর্স শেষ হবার আগেই ও সকলকে ছেড়ে চলে যায় মহাকালের উদ্দেশে।বৌদি সন্তান হারানোর মাতৃহৃদয়ের ব্যথা কখনো প্রকাশ করেননা প্রকাশ্যে। তবু কখনো কোন অসতর্কমূহর্তে সেই বিয়োগব্যথা প্রকাশ হ য়ে পড়ে। যাকে তিনি মনে করেন সেতো হারায়নি। চোখের সামনে দেখা না গেলেও তার অস্তিত্ব তিনি তার মমতা দিয়ে উপলব্ধি করেন সবসময়।
এই ভগ্নস্তূপ কত বিয়োগব্যথার সাক্ষী। কত মায়ের স্ত্রীয়ের ভগিনীর অশ্রু লুকিয়ে রয়েছে এর পাথরের খাঁজে খাঁজে। তার সাথে আরেক মায়ের মর্মযন্ত্রণা মিশে গেল  এই খর মধ্যাহ্নের প্রাক্কালে।
শুনতে শুনতে কখন চোখের কোণায় জমা হয়েছিলো দুফোঁটা অশ্রুবিন্দু। হাতের চেটোয় মুছে নিতে নিতে মিমি দেখলো পুপুরা নেমে আসছে টিলার ওপর থেকে।
ক্রমশঃ



সম্পাদকীয়

               


চলে গেলেন সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর।বয়স হয়েছিল ৯২ ।১৯৮৯ সালে ভারত সরকার তাঁকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার  ভূষিত করে। এ ছাডাও তাঁর ঝুলিতে অনেক পুরস্কার ছিল৷ তিনি নিজেই ছিলেন আমাদের কাছে পুরস্কার৷ ছোটবেলায় বাড়িতে কে  .এল . সায়গালের গান  ছাড়া অন্য  কারোর গান শোনার অনুমতি ছিল না বাড়িতে৷ জীবনে প্রথম রেডিও কেনার সামর্থ্য যখন হল, তখন তাঁর বয়স মাত্র আঠারো। কিন্তু রেডিওটা কেনার পর নব ঘুরাতেই প্রথম যে খবরটি তাঁকে শুনতে হয় তা হচ্ছে, কে এল. সায়গল আর বেঁচে নেই। সঙ্গে সঙ্গেই রেডিওটা ফেরত দিয়ে দেন ৷ 
সুরের সাম্রাজ্যে একছত্র রাজত্ব করেছিলেন দীর্ঘ দিন৷
সুর সাম্রাজ্যের সুর-সম্রাজ্ঞী ২০২২ খ্রিস্টাব্দের ৮-ই জানুয়ারি কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মুম্বাইয়ের ব্রীচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভরতি হন। করোনা মুক্তও হয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী শারীরিক অসুস্থতায় অবস্থার অবনতি হয়। ৬-ই ফেব্রুয়ারি সকালে হাসপাতালে শেষ নিশ্বাঃস ত্যাগ করেন।