রবিবার, ২৬ জুলাই, ২০২০

তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায়


এই সংখ্যার কবি তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায়I জন্ম- ১/০৯/১৯৯৬। ২০১৯  প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হয়েছেন। ২০১৫ থেকে সক্রিয়ভাবে লেখালিখির সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের নানা ছোটোপত্রিকায় লেখালেখি করেন। ২০১৮ তে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর প্রথম বই 'ঘুম দাও ঈশ্বর', পেয়েছেন 'সোনাঝুরি কবি সম্মান-২০১৯'।তার ১০টি কবিতা পড়া যাক।

১) সুখের আগে নাইবা 'অ' লিখলাম
------  
কবি ফিরে এসে লিখলেন,
বুকে এখন পয়েনসেটিয়া গাছের নিবিড় চলাচল!  
এদিন ওদিক দোলাচ্ছে মাথা!
ওখান থেকে কয়েকটি পাতা রেখে যাব ডায়েরিতে
 কারণ
উপহারকে কখনো শেষ বলতে নেই...

অথচ চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, 
তাঁর হৃৎপিন্ডে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে।         

২) অমোঘ
----- 
স্বপ্নে,
আমাকে বিদায় বলে
অতঃপর, তারাটি মিলিয়ে গেল!
 সাবধানে হেঁটে গিয়ে জানলাম,
সে আমার কপালের টিপ ছিল এককালে।

কোনো চুম্বনবিহীন সঙ্গমের পর,
তাকে রেখে এসেছিলাম প্রেমিকের স্নানঘরের আয়নায়। 


৩)  আংশিক
------ 
নদীতে পাথর ছুঁড়ে দেখেছি,
সে কখনো চিৎকার করেনি!
 শব্দ করে বুঝিয়েছে,
  স্নিগ্ধ হাসি!    
একেকদিন ভাল বিক্রির পর
যে হাসি দেখা যায়
ক্লান্ত ফেরিওয়ালার ঠোঁটে।   

৪) সেমিকোলন 
---- 
সন্ধের দিকে পা বাড়ালে 
সকাল অভিমান করে না!
কিন্তু
তোমার দিকে পা বাড়াতেই এক নারী
সহসা এগিয়ে এল কাছে...
মুখে তার অজস্র দাগ!   
যেন বালিকা জীবনের ভেতর
 ধরে রেখেছে বার্ধক্য কুসুম!

পরিচয় জিজ্ঞাসা করতেই আকাশবাণী হল,
এই আমার ছায়া,
জন্ম থেকে সঙ্গে সঙ্গে আছে।    


৫) ভিক্ষা শেষ হলে
----
আমার গর্ভ শূন্য করে
 যে সন্তানটিকে নিয়ে গেলে
সে একদিন দস্যু হবে!
 তরবারি দিয়ে অসহ্য অক্ষর ছিঁড়ে
 সন্তান আমার,
তোমাদের চোখের মণির মধ্যে চেপে ধরবে হাঁটু! 

অন্ধ তোমরা,
 হাত তুলে বিলাপ করতে করতে বলবে -
'পারে,
 নিশ্চিত, 
একটি কবিতা করতালি ছেড়ে 
মঞ্চের পিছন দিকে অন্ধকার আলোয় 
বিমর্ষ মানুষের বুকে গেঁথে যেতে পারে।'





(সিরিজ)

সর্পদংশনে 
----- 

(১) 
বিষ উগড়ে দিচ্ছে মুখ। 
সে মুখে চুম্বন কতখানি অপেক্ষার বিষয়
তা  নিয়ে কাটাছেঁড়া করছে ছটফটে তরুণ।
তরুণের ঠোঁট 
এর আগে আরও বেশি বিষ পানে খ্যাত... 

(২) 
নারীর স্তনের মত আকাশে
ধবধবে বক উড়ে যায়।
শ্যাওলা ধরা দেওয়ালের পাশে 
আস্তে আস্তে ক্ষীণ হয়ে যাওয়া মিলনদৃশ্য 
বুঝে নিচ্ছেন পরিচালক,
যিনি কিনা সাহিত্যে কাঁচা!  



(৩)
লিপি আঁকড়ে থাকে সাপ
সাপের গতি বাড়ে ফেনিল সমুদ্রে।
সমুদ্রে ঝিনুক কুড়াতে গিয়ে তাই
হারিয়ে গিয়েছিল মেয়েটি
মা...  

(৪)
ঘড়ায় মোহর ভরা আছে।
ঘরে আছে কৃষকের লাঙল। 
লাঙলের ফলা থেকে জন্ম নেবে কর্ষিত সীতা এবং মানসকন্যারা।
অথচ মনের কোনো লিঙ্গ নেই,
নেই যোনিমুখ। 

(৫)   
সর্পকাব্য পড়, 
ফিরে পাবে হারানো প্রেমিক।
প্রেমিক ভুলিয়ে দেবে দুঃখ,তাপ,জরা। 
কান্নায় মিশে যাবে একা একা খেলার দুপুর।

সর্পকাব্য পড় সন্তর্পণে!
দংশন স্থানে রেখে দেখ আঙুল!
ইতিহাস জানে সাপে আর অগ্নি গহ্বরে
কতখানি ভাব,ভালবাসা!       


তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায়
যোগাযোগ -৯০৬৪৭৫৯৯২৭  


৭টি মন্তব্য:

  1. বেশ ভালো লাগলো তিতাস। সবগুলোই। শুভেচ্ছা নিও।

    উত্তরমুছুন
  2. এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।

    উত্তরমুছুন
  3. এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।

    উত্তরমুছুন
  4. পাঠ শেষে কোথাও মুগ্ধতা রেখে গেল কবিতিগুলি

    উত্তরমুছুন