রবিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২১

তিস্তা

                      




বনমালী তুমি পরজনমে হইয়ো রাধা...



৬/
বেঁচে থাকাও এক দক্ষতা লতিফা। আমি আগাছার কাছে শিখেছি, প্রতিবার ছেঁটে ফেলবার পরেও কতটা জেদে আরো বৃহৎ জায়গা জুড়ে  ভরিয়ে ফেলতে পারা যায় নিজেকে!


কী কারণে বিলুপ্ত হয়ে গেছিলো আমার চোখের পাতা, আজ আর কিছুতেই মনে করতে পারি না। পুরনো একটা কাঠের দরজার পিছনে ফেলে এসেছি আমার গতজন্ম। এমব্রয়ডারি করা কুশন, পেল্লাই এক জানলা আমার শোয়ার ঘরের, আরমকেদারা, কিছু সাবেকি আসবাব এবাং জল রঙে আঁকা একটা ফ্যামিলি অ্যালবাম। কাউকেই চিনতে পারি না। শুধু দাউ দাউ একটা শিখা মনে পড়ে। একটা বিস্মৃত ছায়া এবং একটা শৈশব!

পেঁচার চোখের মতো অন্ধকার প্রিয়তা নিয়ে আমি পৃথিবীতে ফিরে এসেছি আবার। একে অপরের উদ্বিগ্ন এবং অধৈর্য হাতের তালুর ওপর জ্বলন্ত মোমের ড্রপলেট ফেলছি গোটা গোটা রাত!  এ এক অদ্ভুত উন্মাদনা! তুমুল প্রশান্তি! যৌনতার বিপরীতে আর এক অপার যৌনতা! রাতকে তো আটকে রাখা যায় না! জাদুকরী ছায়ার মতো সে জেগে ওঠে। তুমি অপরিহার্য হয়ে ওঠো আমার ভিতর এবং তোমার ভিতরে আমি। অথচ কী আশ্চর্য দেখো, আমরা মিথ্যে বলি। প্রতারণা করি। বিভ্রান্ত করি একে অপরকে। কারণ আমরা আড়াল খুঁজি। কারণ আমরা জানি– " আমি"-টুকু ছাড়া আমাদের কাছে আসলে আর কিছুই অপরিহার্য নয়।

বিশ্বাসঘাতকতা মানে কী, জানো লতিফা? বিশ্বাসঘাতকতা হলো– প্রতিশ্রুতিময় শান্ত একটা হত্যাকাণ্ড। ব্রতের বন্ধ চোখে বোহেমিয়ান অন্ধ নদী! আজকাল চাঁদ সহ্য করতে পারছি না কিছুতেই।

অপরিমেয়তা ভেঙে যাচ্ছে ক্রমে...


( ক্রমশ)


২টি মন্তব্য: