ব্যবধান
রুমা অধিকারী
রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে করুনা উদ্ভ্রান্ত হয়ে হেঁটে চলেছে। পাশ দিয়ে একটা বাস সোঁ শব্দে বেরিয়েগেল। আর একটু হলেই তার হাতে লেগে যেত কিন্তু করুনার সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। সেআগের মতই চিন্তান্বিত হয়ে চলতে লাগল। গড়িয়াহাটের মোড়ে এসে কি যেন ভেবে সে কিছুক্ষনদাঁড়িয়ে থেকে একটা বাসে উঠে জানলার ধারে সিট পেয়ে বসে পড়ল। আজ খুব গরম পড়েছে।রাস্তার দুধারেগাছের পাতা নুয়ে রয়েছে। আষাঢ় মাসের দুপুরেঘর্মাক্তযাত্রীদের নোনাঝাঁঝ বৃষ্টিরনিশ্চয়তা দেয়।ভাত-ঘুম দুপুরে বাসে তখন কেউ ঝিমোচ্ছে, কেউ বা মোবাইল নিয়ে নাড়াচাড়াকরছে। করুনা একবার চেয়ে দেখলে আর তখনি মোবাইলে চাট করা লোকটাকে দেখে তার মনেপড়ে গেল সৃঞ্জয়ের সাথে তার প্রথম আলাপের দিনটা।
সেদিন ছিল এক বর্ষার দিন । একটা একঘেয়ে বৃষ্টির দিনে সে ঘরের কাজ সেরে ল্যাপ্টপ খুলে বসেপড়েছিল। কয়েকদিন আগে এক বন্ধুর রিকোয়েস্টে আলাপ.ইন এ একটা প্রোফাইল বানিয়েছিল সেইসাইটে যেতেই ঝুরি ঝুরি মেসেজ আর ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দেখতে পেল একটা একটা করে মেসেজপড়তে লাগল আর ভাল লাগলে রিপ্লাই করল। কিন্তু একটা মেসেজ তাকে একটু অন্যরকম লাগল।সেমেসেজটা ভাল করে পড়ল তাতে একটা নাম দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে তাকে চেনা কিনা বা সেআমাদের ফ্যামেলির কেউ হয় কিনা। করুনা রিপ্লাই করে সেদিন ল্যাপটপ বন্ধ করে দিয়েছিল। পরেরদিন যখন আবার ওই সাইটে যায় সে সৃঞ্জয়ের রিপ্লাই দেখতে পেল। তাতে লেখা ছিল তার পরিচিতব্যাক্তির বাড়িও উত্তরপাড়ায় । তার সঙ্গে করুনাকে ধন্যবাদ জানানো ছিল। করুনাও একটা রিপ্লাইকরেদিয়েছিল সেদিন । এরপর কয়েকটাদিন সৃঞ্জয়ের কোনো মেসেজ আসে নি। এই কদিনে সৃঞ্জয়েরমেসেজ পড়ে করুনার তাকে একটু অন্যরকম লেগেছিল। অন্য সবার থেকে একটু আলাদা লেগেছিলতাই সৃঞ্জয়ের ওপর তার একটু উৎসাহ লাগল সে রোজ সৃঞ্জয়ের মেসেজের জন্য অপেক্ষায় থাকতো।একদিন সে আলাপ.ইন এ যেতেই সৃঞ্জয়ের ম্যাসেজ দেখতে পেল।তখন তাকে এক অদ্ভুত আনন্দ এসেগ্রাস করে ফেলল। এভাবে আর কিছুদিনের মধ্যেই তাদের আলাপ জমে গেল। রোজ সকাল হলেইপ্রত্যাশার ঝুড়ি ভরে উঠতো আর দিন শেষ হলে তার উষ্ণতার রেশ সারা মনে ছড়িয়ে যেতে থাকল।আবার কখনও হতাশা তাকে ঘিরে ধরতো। প্রিতম ওর স্বামী হলেও কোনদিন তাকে বিন্দুমাত্রবোঝার চেষ্টা করে নি শুধু খুব ভালবাসতো বলে তার সব রূঢ় ব্যবহার সহ্য করে যেত। আজ পর্যন্তপ্রিতমকে ছেড়ে বেরিয়ে আসার কথা ভাবে নি। তার ভালবাসা তার শিক্ষাতাকে বেরিয়ে যেতে দেয়নি আর অন্যদিকে অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বনির্ভর নয় বলে মুখ বুজে সব কিছু সয়ে যেতে হয়েছেতাকে। যদিও এই স্বর্নিভরতা একরকম সংসারের জন্যই এককালে আত্মত্যাগ করেছিল করুনা।কিন্তুসৃঞ্জয়ের সঙ্গে আলাপ হওয়ার পর থেকে তার মধ্যে এক পরিবর্তন এসছে। যে দুর্বল জায়গা ওর মধ্যেবাস করত সেখানে সৃঞ্জয়ের কথাবার্তা মলম লাগাতো। একদিন তারা লুকিয়ে দেখা করে অবশ্যতখনও দুজনের মনের ভাব একে অন্যের কাছে প্রকাশ পায় নি। তারা এরকমভাবে বেশ কয়েকবারদেখা করে নিজেদেরকে একে অপরের কাছে মেলে ধরলেও করুনা তার নিজের সম্মানের গণ্ডিঠিকরেখে চলত। কোনদিন সৃঞ্জয়ও সেই গণ্ডি পেরোতে চায় নি কিছুটা করুনার প্রতি সম্মান রাখতেগিয়ে। এই কদিন করুনারবেশ আনন্দে কেটে গেছিল। সেই বিয়ের পর থেকে প্রিতমের সঙ্গে লড়াইকরতে করতে যে ক্লান্তভাব এসছিল সৃঞ্জয় আসার পর সেই ক্লান্তি অনেকটাই কেটে যেতে লাগলো।জীবনটাকে ভালবাসতে লাগলো সে। তার দিনগুলো সৃঞ্জয়কে ভেবেই কেটে যেতে লাগলো আবারপ্রিতমের থেকে দূরে যেতেও ইচ্ছে করত না। সে তার ভালবাসার মানুষ।
কিছুদিন যেতে না যেতেই সৃঞ্জয়ের ব্যবহারে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করলো করুনা। যে গণ্ডি এতদিনমেনে চলতো দুজনে সেটা সৃঞ্জয় যেন টপকাতে চাইছে। একদিন সৃঞ্জয় তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল।করুনার কেমন যেন মনে হল সৃঞ্জয় শুধু ওই গণ্ডি পেরোনোর জন্যই বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। করুনাসেসবে বিন্দুমাত্র সাড়া না দিয়ে কথা বলত। এরকমভাবে একটা বছর দুজনের সম্পর্ক স্থায়ী হয়েযায়। গতকাল ফোন করে সৃঞ্জয় আজ গড়িয়াহাটের মোড়ে দেখা করতে বলে। সেইমত আজ করুনাগড়িয়াহাটের মোড়ে দাঁড়িয়েছিল। সৃঞ্জয় এলে কাছের রেস্টুরেন্টেঢুকে বসে পড়ে দুজনে। দুটো চাউমিনঅর্ডার করে দিল সৃঞ্জয়। কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর সৃঞ্জয় কথা শুরু করল। করুনা চুপ করে সৃঞ্জয়েরকথা শুনছিল। এইভাবে এক ঘন্টা পার হল। ততক্ষণে চাউমিন অনেকটা খাওয়া হয়ে গেছে। সৃঞ্জয়এবার বেশ জোর করতে লাগল যে দুইএকদিনের মধ্যে করুনা যেন ঘর থেকে বেরিয়ে আসে আরদুজনে কালিঘাটে গিয়ে বিয়ে করবে। কিন্তু করুনার সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। করুনা কখনই চাই তোনা সৃঞ্জয় আইনসিদ্ধ বিয়ে না করে মন্দিরে বিয়ে হোক। আর প্রিতমকে ভালবাসে তাই ছেড়ে যাবারকথা ভাবলে করুনা দুর্বল হয়ে পড়ে। করুনা তাই মন্তব্য না করে ওর অসম্মতি জানিয়ে দিল। কিন্তুসৃঞ্জয় আজ যেন একরকম জেদ ধরে বসে রইল। করুনার খুব প্রিতমের কথা মনে হতে লাগল। সেতড়িঘড়ি করে উঠে পড়ল আর রেস্টুরেন্টের দরজা ঠেলে বেরিয়ে এল। সৃঞ্জয় করুনাকে অনেকডাকাডাকি করলেও করুনা সেদিকে বিন্দুমাত্র আগ্রহ না দেখিয়ে বেরিয়ে গেল।
বাসটা বাবুঘাটের দিকে মোড় ঘুরবে এমন সময় করুনা আকাশের দিকে চেয়ে দেখল আকাশটাবেশ কালো করে এসেছে। আজ আকাশটাও না জানি কেমন করে করুনার মন বুঝতে পেরে মুখগোমড়া করে রয়েছে। করুনার মুখ কেমন যেন থমথমে হয়ে রয়েছে। সে সবাইকে কতই নাভালোবাসে কিন্তু তার ভালবাসার মর্যাদা দিতে আজ পর্যন্ত কেউ পারল না। একটা নিশ্বাস যেনঅনেকদিন ধরে আটকে ছিল এখন দীর্ঘনিশ্বাসের সাথে পুরানো অনুভুতিগুলোকে ঝেড়ে এক ধাক্কায়বের করে দিল। আর কোন অনুভূতি তার মনের কোনে জায়গা করে নিতে দেবে না সে। যেমন আছেবাকি জীবনটাও প্রিতমের সাথে পৃথক দুই ভিন্ন স্বাদের মানুষ হয়েই বাঁচবে। সে সিট ছেড়ে উঠেপড়লো পাশে সিটের ভদ্রলোক একবার জানলার দিক থেকে মুখ ঘুড়িয়ে তার দিকে চেয়ে দেখলে হয়তসেও আকাশের সাথে করুনাকে মেলাতে যাচ্ছিল কিন্তু করুনা বাস থেকে নেমে পড়লো। আর ঠিকতখন মোবাইলের রিংটোন টা বেজে উঠল । করুনা ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে দেখল সৃঞ্জয়েরফোন। কিন্তু তার কোন ধরবার তাড়া রইল না।হাতের মুঠোর মধ্যেই বেজে গেল- “আমারে যদিজাগালে আজি...”।
ছবি : গুগুল
রুমা অধিকারী
রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে করুনা উদ্ভ্রান্ত হয়ে হেঁটে চলেছে। পাশ দিয়ে একটা বাস সোঁ শব্দে বেরিয়েগেল। আর একটু হলেই তার হাতে লেগে যেত কিন্তু করুনার সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। সেআগের মতই চিন্তান্বিত হয়ে চলতে লাগল। গড়িয়াহাটের মোড়ে এসে কি যেন ভেবে সে কিছুক্ষনদাঁড়িয়ে থেকে একটা বাসে উঠে জানলার ধারে সিট পেয়ে বসে পড়ল। আজ খুব গরম পড়েছে।রাস্তার দুধারেগাছের পাতা নুয়ে রয়েছে। আষাঢ় মাসের দুপুরেঘর্মাক্তযাত্রীদের নোনাঝাঁঝ বৃষ্টিরনিশ্চয়তা দেয়।ভাত-ঘুম দুপুরে বাসে তখন কেউ ঝিমোচ্ছে, কেউ বা মোবাইল নিয়ে নাড়াচাড়াকরছে। করুনা একবার চেয়ে দেখলে আর তখনি মোবাইলে চাট করা লোকটাকে দেখে তার মনেপড়ে গেল সৃঞ্জয়ের সাথে তার প্রথম আলাপের দিনটা।
সেদিন ছিল এক বর্ষার দিন । একটা একঘেয়ে বৃষ্টির দিনে সে ঘরের কাজ সেরে ল্যাপ্টপ খুলে বসেপড়েছিল। কয়েকদিন আগে এক বন্ধুর রিকোয়েস্টে আলাপ.ইন এ একটা প্রোফাইল বানিয়েছিল সেইসাইটে যেতেই ঝুরি ঝুরি মেসেজ আর ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দেখতে পেল একটা একটা করে মেসেজপড়তে লাগল আর ভাল লাগলে রিপ্লাই করল। কিন্তু একটা মেসেজ তাকে একটু অন্যরকম লাগল।সেমেসেজটা ভাল করে পড়ল তাতে একটা নাম দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে তাকে চেনা কিনা বা সেআমাদের ফ্যামেলির কেউ হয় কিনা। করুনা রিপ্লাই করে সেদিন ল্যাপটপ বন্ধ করে দিয়েছিল। পরেরদিন যখন আবার ওই সাইটে যায় সে সৃঞ্জয়ের রিপ্লাই দেখতে পেল। তাতে লেখা ছিল তার পরিচিতব্যাক্তির বাড়িও উত্তরপাড়ায় । তার সঙ্গে করুনাকে ধন্যবাদ জানানো ছিল। করুনাও একটা রিপ্লাইকরেদিয়েছিল সেদিন । এরপর কয়েকটাদিন সৃঞ্জয়ের কোনো মেসেজ আসে নি। এই কদিনে সৃঞ্জয়েরমেসেজ পড়ে করুনার তাকে একটু অন্যরকম লেগেছিল। অন্য সবার থেকে একটু আলাদা লেগেছিলতাই সৃঞ্জয়ের ওপর তার একটু উৎসাহ লাগল সে রোজ সৃঞ্জয়ের মেসেজের জন্য অপেক্ষায় থাকতো।একদিন সে আলাপ.ইন এ যেতেই সৃঞ্জয়ের ম্যাসেজ দেখতে পেল।তখন তাকে এক অদ্ভুত আনন্দ এসেগ্রাস করে ফেলল। এভাবে আর কিছুদিনের মধ্যেই তাদের আলাপ জমে গেল। রোজ সকাল হলেইপ্রত্যাশার ঝুড়ি ভরে উঠতো আর দিন শেষ হলে তার উষ্ণতার রেশ সারা মনে ছড়িয়ে যেতে থাকল।আবার কখনও হতাশা তাকে ঘিরে ধরতো। প্রিতম ওর স্বামী হলেও কোনদিন তাকে বিন্দুমাত্রবোঝার চেষ্টা করে নি শুধু খুব ভালবাসতো বলে তার সব রূঢ় ব্যবহার সহ্য করে যেত। আজ পর্যন্তপ্রিতমকে ছেড়ে বেরিয়ে আসার কথা ভাবে নি। তার ভালবাসা তার শিক্ষাতাকে বেরিয়ে যেতে দেয়নি আর অন্যদিকে অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বনির্ভর নয় বলে মুখ বুজে সব কিছু সয়ে যেতে হয়েছেতাকে। যদিও এই স্বর্নিভরতা একরকম সংসারের জন্যই এককালে আত্মত্যাগ করেছিল করুনা।কিন্তুসৃঞ্জয়ের সঙ্গে আলাপ হওয়ার পর থেকে তার মধ্যে এক পরিবর্তন এসছে। যে দুর্বল জায়গা ওর মধ্যেবাস করত সেখানে সৃঞ্জয়ের কথাবার্তা মলম লাগাতো। একদিন তারা লুকিয়ে দেখা করে অবশ্যতখনও দুজনের মনের ভাব একে অন্যের কাছে প্রকাশ পায় নি। তারা এরকমভাবে বেশ কয়েকবারদেখা করে নিজেদেরকে একে অপরের কাছে মেলে ধরলেও করুনা তার নিজের সম্মানের গণ্ডিঠিকরেখে চলত। কোনদিন সৃঞ্জয়ও সেই গণ্ডি পেরোতে চায় নি কিছুটা করুনার প্রতি সম্মান রাখতেগিয়ে। এই কদিন করুনারবেশ আনন্দে কেটে গেছিল। সেই বিয়ের পর থেকে প্রিতমের সঙ্গে লড়াইকরতে করতে যে ক্লান্তভাব এসছিল সৃঞ্জয় আসার পর সেই ক্লান্তি অনেকটাই কেটে যেতে লাগলো।জীবনটাকে ভালবাসতে লাগলো সে। তার দিনগুলো সৃঞ্জয়কে ভেবেই কেটে যেতে লাগলো আবারপ্রিতমের থেকে দূরে যেতেও ইচ্ছে করত না। সে তার ভালবাসার মানুষ।
কিছুদিন যেতে না যেতেই সৃঞ্জয়ের ব্যবহারে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করলো করুনা। যে গণ্ডি এতদিনমেনে চলতো দুজনে সেটা সৃঞ্জয় যেন টপকাতে চাইছে। একদিন সৃঞ্জয় তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল।করুনার কেমন যেন মনে হল সৃঞ্জয় শুধু ওই গণ্ডি পেরোনোর জন্যই বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। করুনাসেসবে বিন্দুমাত্র সাড়া না দিয়ে কথা বলত। এরকমভাবে একটা বছর দুজনের সম্পর্ক স্থায়ী হয়েযায়। গতকাল ফোন করে সৃঞ্জয় আজ গড়িয়াহাটের মোড়ে দেখা করতে বলে। সেইমত আজ করুনাগড়িয়াহাটের মোড়ে দাঁড়িয়েছিল। সৃঞ্জয় এলে কাছের রেস্টুরেন্টেঢুকে বসে পড়ে দুজনে। দুটো চাউমিনঅর্ডার করে দিল সৃঞ্জয়। কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর সৃঞ্জয় কথা শুরু করল। করুনা চুপ করে সৃঞ্জয়েরকথা শুনছিল। এইভাবে এক ঘন্টা পার হল। ততক্ষণে চাউমিন অনেকটা খাওয়া হয়ে গেছে। সৃঞ্জয়এবার বেশ জোর করতে লাগল যে দুইএকদিনের মধ্যে করুনা যেন ঘর থেকে বেরিয়ে আসে আরদুজনে কালিঘাটে গিয়ে বিয়ে করবে। কিন্তু করুনার সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। করুনা কখনই চাই তোনা সৃঞ্জয় আইনসিদ্ধ বিয়ে না করে মন্দিরে বিয়ে হোক। আর প্রিতমকে ভালবাসে তাই ছেড়ে যাবারকথা ভাবলে করুনা দুর্বল হয়ে পড়ে। করুনা তাই মন্তব্য না করে ওর অসম্মতি জানিয়ে দিল। কিন্তুসৃঞ্জয় আজ যেন একরকম জেদ ধরে বসে রইল। করুনার খুব প্রিতমের কথা মনে হতে লাগল। সেতড়িঘড়ি করে উঠে পড়ল আর রেস্টুরেন্টের দরজা ঠেলে বেরিয়ে এল। সৃঞ্জয় করুনাকে অনেকডাকাডাকি করলেও করুনা সেদিকে বিন্দুমাত্র আগ্রহ না দেখিয়ে বেরিয়ে গেল।
বাসটা বাবুঘাটের দিকে মোড় ঘুরবে এমন সময় করুনা আকাশের দিকে চেয়ে দেখল আকাশটাবেশ কালো করে এসেছে। আজ আকাশটাও না জানি কেমন করে করুনার মন বুঝতে পেরে মুখগোমড়া করে রয়েছে। করুনার মুখ কেমন যেন থমথমে হয়ে রয়েছে। সে সবাইকে কতই নাভালোবাসে কিন্তু তার ভালবাসার মর্যাদা দিতে আজ পর্যন্ত কেউ পারল না। একটা নিশ্বাস যেনঅনেকদিন ধরে আটকে ছিল এখন দীর্ঘনিশ্বাসের সাথে পুরানো অনুভুতিগুলোকে ঝেড়ে এক ধাক্কায়বের করে দিল। আর কোন অনুভূতি তার মনের কোনে জায়গা করে নিতে দেবে না সে। যেমন আছেবাকি জীবনটাও প্রিতমের সাথে পৃথক দুই ভিন্ন স্বাদের মানুষ হয়েই বাঁচবে। সে সিট ছেড়ে উঠেপড়লো পাশে সিটের ভদ্রলোক একবার জানলার দিক থেকে মুখ ঘুড়িয়ে তার দিকে চেয়ে দেখলে হয়তসেও আকাশের সাথে করুনাকে মেলাতে যাচ্ছিল কিন্তু করুনা বাস থেকে নেমে পড়লো। আর ঠিকতখন মোবাইলের রিংটোন টা বেজে উঠল । করুনা ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে দেখল সৃঞ্জয়েরফোন। কিন্তু তার কোন ধরবার তাড়া রইল না।হাতের মুঠোর মধ্যেই বেজে গেল- “আমারে যদিজাগালে আজি...”।
ছবি : গুগুল
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন