রবিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২০

অঙ্কুশ ভৌমিক

                                         



এই সংখ্যার কবি অঙ্কুশ ভৌমিক ।বয়স - উনিশ৷বসবাস: শ্রীরামপুর, হুগলী। অবসরে বই পড়তে, গান করতে, ছবি আঁকতে ভালোবাসে। শখে কবিতা লেখা।


 অরণ্য



(১)

প্রথমবার শিউলি ফুল কুড়িয়ে

                           হাতে নিলাম।

আকাশগুলো ফুরিয়ে গেল

শেষ হলো সমস্ত অকাজের সময়


দূর থেকে দেখলাম,

শহর পেরিয়ে

অরণ্য কাছে এসে পড়েছে


আর, ঘাড়ের উপর 

নিশ্বাস ফেলছে

দুটো সাদা বক


(২)

আকাশের অনেকটা উপর থেকে

একটা ছোট্ট সিকি

ধানক্ষেতের সবচেয়ে উঁচু শিষটাকে

                                আঘাত করল


কিছুক্ষণ সবটা চুপচাপ

তারপর বাঁধনছাড়া উচ্ছাস

পরপর নিমজ্জিত হল,

ঘাস, ফুল, পাতা...

অবশেষে অরণ্য


আমার আর কিছুই বলার থাকল না

দু'মুঠো আদর ছাড়া


(৩)

ঘাসের উপর, যেখানে

আমার হলুদ পায়ের ছাপ পড়েছে

তার থেকে খানিকটা দূরে

একটা শিউলি ফুলের গাছ। সাদা।


আমি অন্য ঘাসগুলো মারাতে চাইছি না।

কিন্তু কেন?


(৪)

পরশু রাতে বাজ পড়ে-

যে গাছটা ন্যাড়া হয়ে গেছে

তার মাথায় একটা চিল সবসময় পাহারা দেয়


যতবার শিকারি আসে,

চিৎকার করে জানান দেয় সে।

শুধু ফাঁকা আওয়াজ হয় বন্দুকের


আমি আরো বেশি করে ভালোবেসে ফেলি



(৫)

বেশ কিছুদিন পর

গড়গড় করে গাড়ি এলো;

পেট্রোলের গন্ধে 

কিছুক্ষণের জন্য অচৈতন্য...


তারপর, সামনে শুধুই বালি


টেবিলে বসে ডায়েরি খুলে দেখলাম

পাতাগুলোয় শ্যাওলা। ঘন। সবুজ।


ধানক্ষেত

অঙ্কুশ ভৌমিক


(১)

কালোজলের দীঘিটা পেরোতে পারলেই

                    অনেকটা সবুজ দেখা যায়

কবিতার ঝুলি ফুরোলে

তারপর, ধানক্ষেত আসে


সবুজ শিষের উপর

চোখ বোলাই।

বড্ড সুখ হয়


পাশ থেকে তাড়া আসে,

জল আসবে। ছায়ায় চল


(২)

একটা মেঘের কতখানি সাহস

নদী ছাড়িয়ে এপারে এসে গেল

একা!


আমিও হুঙ্কার করলাম,

পূবদিকের হওয়া আমার পাশে দাঁড়ালো।

শিষগুলো ঘাড় এলিয়ে একবার আমার দিকে

                                    একবার মেঘের


তারপর, আমার পরাজয়

              আমার শান্তি


(৩)

সেদিন জ্বর এসেছিল

তাই, জানালাই সম্বল


একটু ঠাট্টা তামাশা হলো

একটু পাগলামো

একটু বকাবকি


তারপর যা হয়,

থার্মোমিটার, জলপট্টি, প্যারাসিটামল

জ্বর কমল

রোদও


(৪)

রাস্তার ধারে থুতু ফেলে

এগোলাম সবুজের জন্য


চোখ ধাঁধিয়ে গেল নিমেষে

শান্ত, সোনালী আলো

ভয় পেলাম


মাঠের মাঝে

মৃত্যুর রঙ সোনালী


(৫)

মৃত্যু আমি দেখিনি,

দেখেছি

মৃত্যুর শেষটা


সর্পিল আলপথের উপর

বড্ড রোদ লাগছে এখন

পূবদিকের হওয়াটাও বেমামান


পাশ থেকে তাড়া আসে

বড্ড গরম। ছায়ায় চল

২টি মন্তব্য: