শনিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৮

বনবীথি পাত্র


#প্রতিশোধ

.
গতরাতেও হারানকাকা এসেছিল মায়ের কাছে। মাকে খুব বকাবকি করছিল। মায়ের কান্নার আওয়াজ আসছিল ঘরের ভেতর থেকে। হারানকাকা যেদিন আসে, সেদিন রাজুর ঘরে ঢোকা মানা। ঝুপড়ির বাইরে পলিথিন দিয়ে ঘেরা জায়গাটাতে মা ওর বিছানা পেতে দেয়। প্রথম প্রথম ভয় করতো, আর করে না। ভোরবেলাই পেটটা মোচড় দিয়ে ওঠে রাজুর। ঘরের দোর তখনও বন্ধ ভেতর থেকে। বালতি থেকে গলাকাটা বোতলে জলটা ভরতে গিয়েই বালতির পাশে জিনিসটা কুড়িয়ে পায়। এটা হারানকাকার মোবাইল, কতবার দেখেছে হারানকাকাকে এটায় কথা বলতে। কালকে হোটেল থেকে কতসব খাবার এনেছিল হারানকাকা, পেটের মধ্যে সব যেন গুড়গুড় করছে। আর দাঁড়াতে পারেনা রাজু, ছুট লাগায়। আজকাল মাঠে গেলে অফিসের বাবুরা বাঁশি বাজিয়ে তাড়া করে। অগত্যা ভরসা এই রেললাইন।
ধুস্ আলোও জ্বলছে না মোবাইলটাতে। হঠাৎ রাজুর মনে পড়ে গতরাতে ঘর থেকে ভেসে আসে মা আর হারানকাকার কথাগুলো। হারানকাকা বলছিল, মোবাইলের সব ছবি সবাইকে দেখিয়ে দেবে। মা কাঁদছিল আর বলছিল, ছবিগুলো সবাইকে দেখালে মাকে আত্মহত্যা করতে হবে। বস্তির পুঁটিপিসি আত্মহত্যা করেছিল, আর কখনো ফিরে আসেনি পুঁটিপিসি। আত্মহত্যা করলে মানুষ মরে যায়। মা মরে গেলে রাজুর ভীষণ কষ্ট হবে। মাকে কিছুতেই মরতে দেবে না রাজু। মোবাইলেই ছবিগুলো আছে বলছিল হারানকাকা। মোবাইলটা কানে নিয়ে টিভির মতো স্টাইল মনের সুখে গালাগাল দেয় হারানকাকাকে। হারানকাকা নাই বা শুনল, মনের রাগটা কিছুটা যেন কমল রাজুর। এবার মোবাইলটাকেই শেষ করে দেবে । এই মোবাইল আর কোনদিন খুঁজে পাবে না হারানকাকা.......




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন