রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২২

শ্যামলী আচার্য

                



মৃত্যু অথবা  ( পর্ব ৪)



কিরণমালা ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ধাতস্থ হতে একটু সময় লাগে দীপুর। 

“উফ! পুরো সিনেমা!” 
“ভুল করছিস দীপু,” রাণার দুটো ভুরু সেই যে কুঁচকে আছে, সে বলে, “তুই শুনিসনি, ট্রুথ ইজ স্ট্রঙ্গার অ্যাণ্ড ডেফিনিটলি স্ট্রেঞ্জার দ্যান ফিকশন... সত্য ঘটনা গল্পকেও হার মানায়... কিন্তু বড় দ্রুত কাজ করতে হবে, আর তার চেয়েও মারাত্মক, কিংশুক রায়ের বাড়িতে না ঢুকলে ইরাবতীর থাকা-খাওয়া-বসার জায়গাগুলো দেখা মুশকিল।” 
রবিবারের সকালে বাংলা-ইংরেজি অনেকগুলো কাগজ উড়ছিল সোফার ওপর। রাণা একমুহূর্ত তাকায় সেদিকে। 
“পেয়েছি” বলেই মোবাইলে নম্বর খুঁজে ডায়াল করতে থাকে রাণা।   
“হ্যাঁ হ্যাঁ, আমি ‘কালকণ্ঠ’ থেকে বলছি, ইরাবতী সান্যালের ওপর একটা কভার স্টোরি হচ্ছে আমাদের। অ্যাকচুয়ালি ওনার পুরনো ইন্টারভিউ আছে আমাদের কাছে, স্মৃতিচারণে বহু বিদগ্ধ মানুষ কথাও বলেছেন, কিন্তু আমাদের একটা অনলাইন পোর্টালে আমরা ভিডিও ক্লিপ আপলোড করি। সেখানে আমরা ওনার বসার ঘর, মানে স্পেশালি ওনার লেখার জায়গা, বইপত্র একটু ভিডিও করে দেখাতে চাইছি। যদি পারমিশন দেন... আজই দুপুরের দিকে... না না, একদমই বেশি লোকের ব্যাপার নেই, আমি একাই যাব, বড়জোর একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট, ওই একজন ক্যামেরায় থাকলে আলো-টালোগুলো একটু দেখে নিতে হয় আর-কি... না না, আপত্তি থাকলে আমি একাই আসছি... আমাদের কাজটা শেষ করতে হবে চটপট, বুঝতেই পারছেন...। আমাদেরও তাড়া আছে...।”  
ফোন রেখে জোরে একটা শ্বাস ছাড়ে রাণা। 
“ইয়েস! ডান।” 
দীপু তাকায়, “খেয়ে বেরোবি তো?”
“অবশ্যই। আর তুইও যাচ্ছিস। জানি রবিবার দুপুরে ল্যাদ খাওয়া ছাড়া তোর কোনও কাজ থাকে না। শুধু বড় ক্যামেরাটা বের করে গলায় ঝোলা। আর হ্যাঁ... পুলিস বন্ধুটির সঙ্গে কথা বলে নিই একটু।”  
অরিন্দমকে ফোনে যোগাযোগ করতে বেশ সময় লাগল। তার মধ্যেই দু’জনে সাংবাদিক হিসেবে কিংশুক রায়ের বাড়িতে ঢোকার জন্য রেডি। ঠিক হল, ইরাবতীর বাড়ির ছবি তুলে সোজা যাবে অরিন্দমের কাছে। সে ততক্ষণে লোকাল থানায় কথা বলে রাখবে। কোনওভাবে রাণার ইনভেস্টিগেশন নিয়ে শুরুতেই জানাজানি হয়ে গেলে পুরো কেস যাবে ভেস্তিয়ে। 
বাড়ি নয়। প্রাসাদ বলাই ভালো। বিশাল গেটে চারজন সিকিওরিটি। নাম-ঠিকানা লিখে পরিচয়পত্র দেখিয়ে, ফোনের কল রেকর্ডে অ্যাপয়েন্টমেন্ট সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তবেই ভেতরে ঢোকা গেল। বিরাট লন এবং সাজানো বাগান পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই একজন কাঁচাপাকা চুলের ভদ্রলোক এগিয়ে এলেন। 
“আপনারাই ছবি তুলতে এসেছেন? নমস্কার। ভেতরে আসুন। আমি অনমিত্র সান্যাল।”
“আপনি কি এই বাড়িতেই... মানে আপনি কি কিংশুকবাবুর আত্মীয়?” 
“আজ্ঞে হ্যাঁ। ইরাবতী ছিলেন আমার দিদি। আমিও এই বাড়িতে থাকি। বৌ-ছেলে-মেয়ে বারাসতে। ওদেরকে দেখেশুনে আসতে হয়। আসলে কিংশুকবাবুর ব্যবসার খুব সামান্য অংশের দায়িত্ব আমার ওপরে, আর দিদির দেখাশোনা মূলত আমিই করতাম।”  
“দেখাশোনা মানে?” বাইরের সুসজ্জিত ঘর ছাড়িয়ে ততক্ষণে দোতলার সিঁড়ির দিকে পা বাড়িয়েছেন তিনজন, রাণা প্রশ্ন করতে করতেই ঘাড় ঘুরিয়ে নজর করছে চারিদিক। কিরণমালাকে জানায়নি ওরা আসছে। সে কি এই বাড়িতেই রয়েছে আপাতত?   
“দিদির একমাত্র মেয়ে বিদেশে থাকে, দিদির একার পক্ষে নিজের লেখালেখি সামলে সংসারের চারদিক লক্ষ্য রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। অনেক ছোটবেলা থেকেই দিদি খাটাখাটনি করছে। একটা সময় কলকাতার বাইরে বহরমপুরে বহুদিন একা থেকে চাকরি করেছে। সংসার টেনেছে। সেইসময় অসুস্থও হয়ে পড়েছে ও...”
“কী অসুখ?” 
অনমিত্র এক মুহূর্ত থমকে গিয়ে বলে, “সে তো ঠিক মনে নেই। আমি অতশত... আসলে আমি তখন কারখানায় কাজ পেয়েছি। যেতেও পারিনি। একাই থাকত দিদি বহরমপুরে। খুব ভুগেছে।” 
“তাহলে সেই সময় ইরাবতীকে দেখাশোনা করতেন কে?”  
 “কল্যাণ রায়। এই কোম্পানির হর্তাকর্তা সব উনিই ছিলেন। আর ডাক্তার বিশ্বেশ্বর রায়চৌধুরী। উনি এই কোম্পানির মালিকের বন্ধু ছিলেন। ওই সময় কোম্পানি অনেক দায়িত্ব নিয়েছিল দিদির...”   

রানা ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকে চারপাশ। 
“আমার কারখানা বন্ধ হয়ে যাবার পরে কিংশুকবাবুর সঙ্গে এসে কথা বলি কাজের ব্যাপারে... এটা দিদির স্টাডি রুম। এখানেই অধিকাংশ সময় থাকতেন। পাশে বেডরুম। অ্যাটাচড বাথ। বহুদিন এমন হয়েছে লিখতে লিখতে ওখানেই গিয়ে শুয়েছেন। শেষের দিকে বছরখানেক ওটাই রুটিন হয়ে গিয়েছিল। যেদিন দিদি চলে যান, ওই বাথরুমেই তো... সকালের আগে কেউ কিচ্ছু টের পাইনি আমরা...”।   
“আচ্ছা, কিংশুকবাবুর সঙ্গে একটু কথা বলা যায়?” 
“সেটা দেখছি। ওনার পিএ-র সঙ্গে কথা বলতে হবে। আজ হবে না।” 
“উনি যেদিন মারা যান, তার দিনকয়েকের মধ্যে ওনার সঙ্গে কেউ দেখা করতে এসেছিলেন?”
“কেন বলুন তো?” চোখ সরু করে জিগ্যেস করে অনমিত্র।
“না, আসলে সাহিত্যিকের ডকুমেন্টেশন, যদি কোনও প্রকাশক, লেখক এসে থাকেন...”
“সেরকম কেউ আসেননি। দিদি বাড়িতে কাউকে ডাকত না।” 
অনমিত্রর কথা শুনতে শুনতে দোতলার ঘোরানো সিঁড়ি দিয়ে উঠে ডানদিকে যে বিরাট ঘরটির দরজায় দাঁড়াল ওরা, সেই ঘরটির মেঝে থেকে সিলিং পর্যন্ত বইয়ের র‍্যাক। পুরনোদিনের লোহার শিক দেওয়া জানলা, মেঝে থেকেই জানলা শুরু। জানলার কাঠের কপাটে খড়খড়ি। তাঁতের পাড়বসানো উজ্জ্বল হলুদ রঙের পর্দায় আলো ঠিকরে পড়ছে। পর্দার বাইরে অসংখ্য সবুজ পাতার আবছায়া। বাগানের বড় গাছেদের মমতামাখানো ঘর। বই, আলো-বাতাস আর তাজা প্রকৃতি... লেখার জন্য আদর্শ। একটা জানালার দিকে মেহগনি কাঠের পড়ার টেবিল। সেখানে কম্পিউটার। আর রয়েছে একটি বড় ছবি। এই ঘর যাঁর তিনি এখন সেই ছবির ফ্রেমে বন্দি। রাণার ইশারায় দীপু ক্যামেরা অন করে এগিয়ে যায় পড়ার টেবিলের দিকে।  
“এই এত বড় লাইব্রেরি কি ইরাবতী দেবীর?” 
“না। এই লাইব্রেরি দিদির খুড়শ্বশুর কল্যাণ রায়ের। ওই যে, ওনার ছবি।” অনমিত্র দেখায় একটি বইয়ের র‍্যাকের পাশে একজন বছর চল্লিশের পুরুষ। সপ্রতিভ, তীক্ষ্ণ চেহারা। পাশের র‍্যাকে আরও কিছু ছবি। একটি ইরাবতী আর কিংশুকের অল্পবয়সের। সম্ভবত নতুন বিয়ের পরে তোলা। আরেকটিতে চারজন দাঁড়ানো। কল্যাণ কিংশুক আর ইরাবতী ছাড়া তৃতীয় ব্যক্তিটি সম্পর্কে রাণা জিজ্ঞাসা করে অনমিত্রকে।
“উনি ডাক্তারবাবু। বিশ্বেশ্বরবাবু। কল্যাণবাবুর বাল্যবন্ধু। এই লাইব্রেরি আর বেডরুম সব কল্যাণ রায়ের।”   
“কল্যাণবাবু বিয়ে করেননি?”
“না। ওনার হাতেই এই কোম্পানি শুরু। বাপ-মা মরা ভাইপোকে নিজের ছেলের মতো মানুষ করেন। তিনিই দিদির সঙ্গে নিজের ভাইপোর বিয়ে দেন।” 
“এই ঘরে ফ্ল্যাশ দরকার হবে না।” দুজনেই পরিচিত কণ্ঠ শুনে ফিরে তাকায় পিছনদিকে। 
দরজায় কিরণমালা দাঁড়ানো। সে একের পর এক আলো জ্বালিয়ে দিয়েছে ঘরে। অনমিত্র একটু যেন বিরক্ত। “তুমি আবার আসতে গেলে কেন? ওঁরা ছবি তুলবেন, চলে যাবেন...”  
“ওঁরা আমার খুব পরিচিত। দোতলার ঘর থেকে ওঁদের আসতে দেখলাম... তা-ই।”  
রাণার চোখ ততক্ষণে খুঁটিয়ে দেখতে শুরু করেছে চারপাশের যাবতীয় জিনিস। ভীষণ পরিপাটি, ঝকঝকে পরিষ্কার। যেন সব গুছিয়ে রেখে কেউ বেরিয়েছেন ঘর থেকে, আবার এসে বসবেন জানলার পাশের চেয়ারে। 
“ইরাবতী দেবী ডায়েরি লিখতেন? বা, এমনি হাতের লেখা কিছু পাওয়া যাবে? মানে, বুঝতেই পারছেন, একজন লেখকের হ্যাণ্ডরাইটিঙের ওপর দিয়ে ক্যামেরা প্যান করে গেলে... সেটার আলাদা ইমপ্যাক্ট...” 
অনমিত্র একটু অপ্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
“মায়ের ডায়েরি ছিল ছিল না। কিন্তু একটা বড় খাতা ছিল। বাঁধানো। রুলটানা কাগজ আর ওপরে কালচে নীল রঙের শক্ত বাঁধাই। সোনার জলে নাম লেখা ছিল ‘ইরাবতী’, আমি ছেলেবেলায় দেখেছি। মা বলছে, ওটা নাকি মায়ের ঠাকুমা মা’কে দিয়েছিলেন। আমি শুনেছি, তিনিও লেখালেখি করতেন। মা ওই খাতায় মায়ের ছোটবেলার কথা লিখতেন। আমাকে পড়ে শুনিয়েছেন।”    
কিরণমালার কথায় রাণা উত্তেজিত হয়ে ওঠে, “আরেব্বাস! এটা আমার স্টোরিতে বাড়তি অ্যাট্রাকশান। খুব ভালো হত যদি সেই বাঁধানো খাতা ক্যামেরায় রাখা যেত...”   
কিরণমালা অনমিত্রের দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলে, “মামা, আমার মনে হয়, ওঁদের এই সব জিনিস তুমি দেখাতে পারবে... তুমিই সব দেখে রাখতে...” 
অনমিত্র ঝাঁজিয়ে ওঠে, “সারাদিন তোমাদের বাড়ির ফাইফরমাশ খাটতে খাটতে... লেখাপড়ার অত খুঁটিনাটি জিনিসের খোঁজ আমি রাখিনি...”।  
“তাহলে মায়ের ডেস্কের চাবিটা দাও। ওটা খুলে খাতাটা পাওয়া যেতে পারে।”  
“ডেস্ক!” আকাশ থেকে পড়ে অনমিত্র, “ডেস্কের আবার তালা দেওয়া থাকত নাকি? আমি এসব জানতামই না... তবে দিদি একবার কোন চাবি হারিয়েছে বলছিল... আমি মিস্তিরি ডাকলাম... সেটাই?” 
“সে আবার কি! মা অত বড় টেবিলটায় বসে লিখত, পড়ত, দাদুর ওই টেবিলটা তো মায়ের প্রাণ!” বলতে বলতেই বিরাট জানালার সামনে মেহগনি টেবিলের সামনে চলে যায় কিরণমালা। ডেস্কই বটে। এবং তাতে তালা দেওয়া। নতুন ঝকঝকে তালাটা দেখেই কিরণমালা চেঁচিয়ে ওঠে, “এই তালাটা কবে এল? মায়ের তো এই তালা ছিল না।”   
অনমিত্র বিরক্তমুখে এগিয়ে আসে। কিরণমালা হঠাৎ বলে, “ইস! ওঁরা কতক্ষণ এসেছেন, একটু জলও দেওয়া হয়নি। মামা, প্লিজ একটু চা-কফির ব্যবস্থা করো। তোমাকে বলা হয়নি, এই ক্যামেরা গলায় ভদ্রলোক আমার কলেজের জুনিয়র। আমি দূর থেকে দেখেই চিনতে পেরেছি।” 
কিরণমালার গলায় কর্তৃত্ব আর অনুরোধ মিশিয়ে এমন একটা স্বর ছিল, অনমিত্র দোনামোনা করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। ‘কলেজের জুনিয়র’ কথাটা ওনার বিশ্বাস হয়েছে বলে মনে হল না। 
অনমিত্র বেরিয়ে যেতেই ছুটে গিয়ে ঘরের দরজাটা ভেজিয়ে দেয় কিরণমালা। ডেকে দেখায় দুজনকে, “এই ডেস্কটা দেখ তোমরা, এই তালা ভাঙা হয়েছে, আমি শিওর।” 
মেহগনি কাঠের গাঢ় কালচে রঙে স্পষ্ট আঁচড়ের দাগ। ধারালো ধাতব বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। পুরনো নয়, একেবারে টাটকা নতুন দাগ।  
“চাবিটা হয়ত সত্যিই হারিয়ে গিয়েছিল।” 
রাণার প্রশ্নে কিরণমালা বলে ওঠে, “এই তালার কোনওদিনই চাবি ছিল না। আমি ইচ্ছে করেই চাবির কথা তুললাম... এখানে একটা কম্বিনেশন লক ছিল, তার সিক্রেট নম্বর জানত মা, আর ... আর জানতাম আমি।” 
“কিন্তু কী ছিল এই ডেস্কে? আপনি জানেন?” 
“না, কিন্তু আমি আন্দাজ করতে পারি। এই ডেস্কে আমার ঠাকুর্দার একটা উইল ছিল। সেই উইল আমি নিজে দেখিনি, গল্প শুনেছি। ঠাকুর্দা আর ঠাকুমার হাতে লেখা খাতা ছিল। ওগুলো মায়ের প্রাণের চেয়েও প্রিয়। কল্যাণ রায়, মানে আমার বাবার কাকার একটা ডায়েরি ছিল। আর... আমার মায়ের উইলও ছিল। মা উইল করেছিলেন, আমাকে বলে গেছেন। আর আমি যদ্দূর জানি মায়ের কিছু গয়নাও এখানেই থাকত। বিয়েতে পাওয়া কিছু আশ্চর্য গয়না মা কেন জানি না ব্যাংকের লকারে না রেখে এখানেই রাখতেন...” কথা শেষ না করেই দরজার দিকে তাকায় কিরণমালা, “আমি পরশু দেশে এসেছি। এই ঘরে যতবার আমি ঢুকেছি, ততবার কেউ না কেউ কোনও না কোনও ছুতোয় আমার সঙ্গে আসছে, কিছুতেই এখানে আমাকে একা থাকতে দিচ্ছে না ওরা।” 
“ওরা কারা?” 
“আমার মামা, যাকে দেখলেন, আর নতুন একজন কাজের লোক এসেছে, আমার বিয়ের পর রাখা হয়েছে, সে এসে কেবল এটাসেটা জিগ্যেস করছে... আর... আর একজন কিংশুক রায়ের নতুন পিএ। তিনবেলা আসছে, যাচ্ছে, পাহারাদারি করছে। আমাকে দেখেই কেঁদে ভাসাচ্ছে, যেন মায়ের মৃত্যুতে ও অনাথ হয়ে গেল...”  
“আপনি চটপট এদের ফোন নম্বর পাঠাবেন আমায়। আর এদের সম্বন্ধে যা জানেন...”   
বলতে বলতেই ভেজানো দরজা খোলার শব্দ হয় আর দীপু চেঁচিয়ে বলে, “উঁহুহু কিরণদি, ওই পোজে দাঁড়িও না, অ্যাঙ্গেলটা ঠিক লাগছে না...” কিরণমালা ডেস্কের সামনে দাঁড়িয়ে ইরাবতী সান্যালের ছবিটা দু’হাত দিয়ে তুলে নেয় বুকের কাছে, “এবার?” 
রাণা আড়চোখে দেখে চায়ের সরঞ্জাম সাজিয়ে অনমিত্র ঢুকছে ঘরে। পিছনে একজন বয়স্ক লোক, তার হাতে খাবার বোঝাই ট্রে।       
কিরণমালা বলে ওঠে, “দীপু, তোমাদের ছবি তোলা কতক্ষণে শেষ হবে? আমি একবার যাদবপুরে যাব। আমার এক জুনিয়র বন্ধু অর্ণব একটা টী-বুটিক খুলেছে। চা অ্যাণ্ড টা। যেতে বলেছে একবার। আজকেই ঘুরে আসি...” কথা বলতে বলতেই খাবার সাজানো হয় প্লেটে আর কিরণমালা বলে, “মায়ের মৃতদেহ কোথায় পড়েছিল দেখবে না তোমরা?”     
  .......................................................................................................................................

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন