রবিবার, ২১ মার্চ, ২০২১

সাত্যকি

                                                          



এই সপ্তাহের কবি  সাত্যকি৷

প্রথম কবিতা প্রকাশ ২০১৮ সালে, শব্দহরিণ পত্রিকায়।প্রকাশিত হয়েছে বেশ কয়েকটি পত্রিকায়I পরবর্তীতে কবিকথা , কাগজের ঠোঙা , বিবস্বান , কাল্ধবনি , ষোলোআনা , নৌকা , সাগ্নিক , আকর, দক্ষিণের জানালা, পরবাস, পদক্ষেপ প্রভৃতি। পেশাগতভাবে কবিতা না লিখলেও, ধারাবাহিকভাবে চলছে  কবিতা লেখা।

প্রথম গল্প প্রকাশিত হয় মুখর পত্রিকায় ২০১৯।এছাড়া, কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে গল্প ও অণুগল্প।

 


একটা দিনের খবর

 

শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের বাইরে হাত রাখলে গরম অনুভূত হয়

রোজ কথাদের মাঝ থেকে শব্দকে আলাদা করতে করতে ফিকে

হয়ে গেছে নাম শীত হারিয়ে বসে আছি রৌদ্র দগ্ধ উঠোনে বাকি

যা সব রেলের লাইনের মত সমান্তরাল তবুও এখানে ভেসে আসে

নিয়ম তাড়িতের মত শব্দ ভিজিয়ে দিয়ে যায় রৌদ্র দগ্ধ শরীর

জুড়ে মেঘ কুয়াশার অবাধ অস্তিত্ব যাপন... 


একান্তে যা বলা গেল

 

অনেক সংজ্ঞা ও উদাহরণ নিয়ে আমরা ঘুরে বেড়াই

কে জানে কোনটা কখন দরকারে লেগে যাবে

তাই ব্যাগে ঠেসে ঠেসে ভরে নেওয়া

আমার আমির প্রতি কর্তব্যের কথা মনে পড়ে

প্রত্যেকের সমানে যথাযথ তুলে ধরা

খানিকটা বাড়িয়ে হলে বেশ

 

এসবেরই মধ্যে ধরো,

             আমি যদি সব নিয়ে বিস্মৃত প্রায় হই

কেমন হবে

 

সেদিনও কী এভাবেই জাপটে ধরে রাখবে আমার হাত

সেদিনও দেখব তোমার চোখের নীল কক্ষপথে আমার ছায়া... 

                                                   

পাশে এসে দাঁড়ায়

 

সমস্ত আবেগ উৎকণ্ঠা কল্পনা অনুমান 

সাদা পৃষ্ঠার গায়ে ঢেলে ফেলার পর

বাকি থাকে অনুদান

 

উপার্জন হীন

গুড়ো মশলা দুপুরগুলো পাশে এসে দাঁড়ায় 


বদলে যায়

একটা ট্রেন এসে থামছে আর

হুড়মুড় করে লোক নামছে

ঠেলাঠেলি করে লোক উঠছেও

ট্রেন থামার আগের চিত্রপট বদলে যাচ্ছে

চিত্রপট এভাবেই বদলে যায় প্রতিনিয়ত



উপর্যুপরি

 

উপর্যুপরি আমিও ভর্তুকি দিয়ে যাই

প্রত্যেক দুপুরের মাছের ঝোল

বদলে পাই

 

গ্রানাইট হীন কাঠ পেন্সিল

খয়েরি খবরের কাগজ

বোতাম ছেঁড়া জামা

আর অজস্র শব্দ সমুদ্র

 

যারা চড়চড়িয়ে হেঁটে যাচ্ছে তালুর রেখা ধরে...


স্বপ্ন পোঁতা থাকে

 

 

দরমার চার দেওয়াল থেকে ঝর্না তলায় স্নান

এক বিরাট পথ বেয়ে চলা

ক্রমাগত অনুভূতির বেষ্টনের আবহে আটক হওয়া

 

আমি দেখে দেখে ফিরে যাই

আমার টালির কামরায়

 

তবুও তো কারো কারো ছ্যাঁকা লাগে

সবার ভিতরে একটা ঝর্না তলার স্বপ্ন পোঁতা থাকে...


ভ্রম

 

রবীন্দ্র সদন যাব বলে যখন এলিয়ট পার্কের কাছে দাঁড়িয়ে আছি

লাল লাইটে একদিকের যান চলাচল স্তব্ধ

তখন দ্বিধাবিভক্ত আমি কোন পথ ধরে যাব

ভাবতে ভাবতে এক পথের রাশ আলগা হয়ে আরেক পথ আগলে ধরেছে

 

এ-পথ ও-পথ করতে করতে যখন একটা পথ নির্বাচন করলাম

দেখলাম রবীন্দ্র সদন ছাড়িয়ে বেশ খানিকটা চলে এসেছি ভবানী পুরের দিকে... 


ভালোবাসার স্মৃতি...

 

 

কয়েকটা আসবাব মেলানো মেশানো জীবন দুটি ভালোবাসার মুখ ক্রুশ কাঁটায় বুনছে শীত পোশাক একাকী চলে যাওয়ার আগের স্টেশনে একাকীত্ব উপভোগ করা আনন্দ হুল্লোড় অপরিচিত মানুষের ভিড় থেকে নিরিবিলিতে সমস্ত বাধ্যবাধকতা ছেড়ে এখানে শেষ দিনগুলোকে কাছে পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা সন্তানের মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া এমনভাবেই কয়েকটা শীত পার হবে বসন্ত দিন আসবে হেমন্তের পাতা ঝরা ঘষঘষানি শব্দের ভিতর বিকেলগুলোকে শুধু দেখে যাওয়া স্মৃতির খেলাঘরে উলটপালট হাওয়া আর থেকে যাবে ভালোবাসার স্মৃতি...


অধিকন্তু একটা মৃত্যুর পর

 

লাশ কাটা ঘরে পড়ে আছে

দেহের মাঝে শুয়ে আছে একটা 

শুকনো নিম ফলের মত মন

যা কারো নজরে পড়বে না

মাথার চুল হাতের নখ গায়ের লোম

কোথাও  জমবে না কুয়াশার ছাপ

আজ আর ঝেঁপে বৃষ্টি হবে না!



একটা দিনের খবর

 

শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের বাইরে হাত রাখলে গরম অনুভূত হয়

রোজ কথাদের মাঝ থেকে শব্দকে আলাদা করতে করতে ফিকে

হয়ে গেছে নাম শীত হারিয়ে বসে আছি রৌদ্র দগ্ধ উঠোনে বাকি

যা সব রেলের লাইনের মত সমান্তরাল তবুও এখানে ভেসে আসে

নিয়ম তাড়িতের মত শব্দ ভিজিয়ে দিয়ে যায় রৌদ্র দগ্ধ শরীর

জুড়ে মেঘ কুয়াশার অবাধ অস্তিত্ব যাপন... 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন