মধ্যবয়স/ সাফল্যের সুনামি আগ্রাসন।
আলোচিত বিষয় হল, মধ্যবয়স। মানব জীবনের সবচেয়ে জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়।
যুগ এখন অন্যরকমের। সাফল্য আগেও চাইত মানুষ কিন্তু এখন খিদে বেড়ে গেছে তীব্রভাবে। এই চাওয়া সর্বস্ব মানুষের মধ্যে যেটার অভাব সবচেয়ে বেশি, সেটা হল সুকুমার বৃত্তির। ছোট ছোট কোমল ভাব বিনষ্ট হচ্ছে। সাফল্য এলো তো আরো চাই।
লাগাতার এমন দৌড়ে হাঁফিয়ে যায় জীবন। জীবনের মালিক সেটা বোঝে না। সে কষে ধরে থাকে লাগাম চালায় চাবুক। একদিন হঠাৎ ফুরিয়ে আসে এনার্জি। তখন গ্রাস করে একাকীত্ব।
****
ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য অর্থ শেষ কথা নয়। সফলতা শেষ কথা নয়। দেখতে হবে, কাজের পিছনে যতটুকু সময় দিচ্ছি নিজের জন্যে ততখানি দিচ্ছি কি না?
অনেকেই ভাবেন, কাজটাই তার জীবন। কাজ করতে পারলে তিনি ভালো থাকবেন। খুব ভালো কথা। কিন্তু, হিসেব অনুযায়ী যদি না হয়? কোনো কারণে চলে যায় কাজের ক্ষমতা? তখন ? অবসাদের কালো মেঘ ঘিরে ধরবে আপনাকে।
*******
কাজ করুন। সাফল্যের স্বাদ নিন। সেই সঙ্গে বন্ধু বা বান্ধবীর সঙ্গে সম্পূর্ন অন্য স্বাদের কথা বলুন। মনে রাখতে হবে, হঠাৎ করে কেউ মানসিক রোগী হয় না। দুশ্চিন্তা ধীরে ধীরে জন্ম দেয় মানসিক অবসাদের। যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের উপর কু প্রভাব ফেলে। মধ্যবয়সে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বেশি। কারণ শরীর এই সময় দুর্বল হয়ে পড়তে থাকে। ব্যক্তিগত স্তরে সম্পর্ক নিয়ে চলে টানাপোড়েন। এইজন্য মনে রাখতে হবে, সাফল্য যেন সুনামি না হয়। প্রাণঘাতি না হয়।
মনে রাখতে হবে, সাফল্য বা ব্যর্থতা কোনোটাই জীবনের চাইতে মূল্যবান নয়। আবেগকে গুরুত্ব দিন। গল্প করুন। সিনেমা যান। মস্তিষ্কের রাসায়নিক পদার্থের ব্যালান্স এমন হোক যেন ব্যর্থতা এলে সহজে নিতে পারেন। খ্যাতি আজ আছে কাল নেই। কিন্তু আনন্দ? চিরস্থায়ী হোক।
নিয়মিত নিজেকে লক্ষ্য করুন। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে নেতিবাচক সিগন্যাল এলে সরে আসুন। নিজের ঘরের লোক হলে, সমস্যা একটু জটিল হয় তখন সাইকো থেরাপিস্টের সঙ্গে কথা বলুন। মনের জোর বাড়িয়ে তুলুন। ওষুধ কাজ করে রাসায়নিক পদার্থ বা নিউরোট্রান্সমিটারের ওপর। কাউন্সিলিং কাজ করে জ্ঞানীয় বিকাশ , আচরণ ও মনের গড়নের ওপর।
*******
মনোযোগ দিয়ে কাজ করলে সফলতা আসবে। তার সঙ্গে মন উন্নত করতে বাধা কোথায়? উন্নত শক্তিশালী ঝকঝক মন সাহায্য করে ভালো কাজ করতে।
সুন্দর থাকুন। মন সুস্থ রাখুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন