রবিবার, ২০ জুন, ২০২১

সমিধ গঙ্গোপাধ্যায়

                                                        


বর্ষাবন্দিশ ১
------------------

----------------------------

'ভালবাসি' বলা ততটা সহজ নয়
নিষাদস্বভাবী অন্যায়প্রতিভাকে
বিষাদে যদিও মেঘ সারানোর ভয়
ঠোঁটের আদলে স্বস্তি দিও না তাকে

'ভালবাসি' আহা বোলোনা বালাইষাট
কাকভেজা গান শোনাবে, মানুষ কই?
রেডিওস্টেশনে ছাতা তৈরির হাট
অসুখ বাধিয়ে ভোলাচ্ছে থইথই

'ভালবাসি' বলা সনাতন পদ্ধতি
ডাকের সাজেই মুগ্ধতা, এনকোর
মন যদি হয় ব্যাটারিচালিত ক্ষতি
মুষলধারাটি যেতে না-দেবার ভোর

'ভালবাসি' তা'ও নতুন শব্দ চাই
ওটুকু রক্ত অনেকেই দিতে পারে
আনসিনে কত গ্রামার ভেজানো ছাই
বৃষ্টি তবুও কবিতায় খুঁজে মারে

'ভালবাসি' বলা ততটা কঠিন নয়
বারিশবিহনে কার কবে ঘুম আসে?
মেঘদূত যদি শহুরে তুলনা হয়
কলকাতা জুড়ে থাকব তোমার পাশে...



বর্ষাবন্দিশ ২
------------------

চোখের বোতাম
খুলে ফেলা নাম
পদ্যে রেখেছি সিন্দুক

ফসল দীঘল
কৃষি পরিমল
গদ্যের মত নিন্দুক

চেনা ঝোপঝাড়
শিশিরের ঘাড়
মুড়িয়ে ছুড়েছি বন্দুক

ছোট্ট গোড়ালি
প্রিয় চোরাবালি
বাদলা পোকার বন্ধু

মিল বুঝেশুনে
বেচে দেব গুনে
হুইসেল, রাতপাখিদের

পাঁজর কপাট
সময়ের ছাঁট
হাতের পাতায় রাখি ফের

ছন্দে বাঁধাই
চোখপোড়া ছাই
ভালও লেগেছে মন্দের

জ্যোছনার ঘাস
বৃষ্টিসমাস
রতিপরিহিত মন দে

শ্রাবণ তোমারই
আধভেজা বাড়ি
ছায়াভীরু সেই কাব্য

যদি বর্ষায়
পাই তার সায়
আবার তোমাকে ভাববো...


বর্ষাবন্দিশ ৩
-------------------

লোকায়ত অছিলায় নবারুণ তোমাদের স্নানে
গোলাপ পাহারা আনে ঝকঝকে মুদারার মত
অভক্ষ্য শিরানীল ব্যথা লেখে, তারানির্মাণে
সকরুণ শত্রুতা পাঁজরবাগানে অবনত

নিরবধি চঞ্চলা প্রতিমার কাঠামোপ্রলাপী
শয্যা সকাশে ঢালে এক লরি জ্যোছনার ফেউ
মৃগনাভি-অসময়ে সোঁদা সলজ্জ সংলাপী
রগুড়ে দেয়ালা ভাবে, মাথুর নামাবে কেউ কেউ...


২টি মন্তব্য:

  1. এমন পোয়েটিক ল্যাংগুয়েজ,এমন স্পনটেনিয়াস নান্দনিক লেখা বহুদিন পর পড়লাম। তোমার কাছে প্রত‍্যাশা অনেক সমিধ।

    উত্তরমুছুন