এই সংখ্যার কবি রিনি গঙ্গোপধ্যায়। পেশায় অধ্যাপক সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ৷আসুন পড়া যাক কবিতা।
অননুমোদিত - কবিতা
অনুমোদনের পরোয়া করে
না যে দ্রোহকাল
আমি কখনো ছিলাম না
সেখানে
আমি চিরকেলে বাধ্য,
সতর্ক, সাবধানী
তাই সম্পর্কের
সৎকারকরিনি আমি
গ্রহণ করিনিমৃতদেহ
শুধু প্রতি রাতে
নিয়ম করে সঞ্চয় করেছি বিষ।
২
ব্যাকুলতার ধ্বনি
বাজে মন্দিরে
নিঃস্ব প্রেম আসলে
ঈশ্বরের মতো
তাই বারবার ফিরতে
হয়ভালোবেসে
এ জীবন বৈষ্ণব পদাবলী
নয় জেনেছি বহুমূল্যে
তাই বুঝি ভালোবাসার
চিৎকারে লজ্জা মাখা থাকে
মুহূর্ত স্মরণে থাকে
ফিরে যাওয়ার আর্জি
একটিমাত্র ছাতার
তলায়আধভিজে শরীরের গন্ধ ক্লান্ত করে ভীষণ
ইজাজত চায় কবরের
মাটি
যোগিনীর সতীত্বের
শ্লাঘা অপার
আমি তাই বিসর্জন
দিলাম যোগিনীপনা এবং সতীত্ব।
৩
আজকাল আঘাত পেতে
পরিসর বানাই
কড়াপড়ে
যাওয়া আঙুলে রাখি অপেক্ষা
সঙ্গের পুরুষটিকে
উত্যক্ত করি
বলি ভাদ্র মাসের
কুকুর
প্রবল যৌনতার মুখে
নুন পড়ার মতো সে ছিটকে ওঠে
কিন্তু ছেড়েযায় না,
প্রাণান্তকামড়বসায়
রক্ত চুঁইয়েপড়ে
পাথরে পাথরে নিঃশব্দে
নরম পলির স্তর কেমন
করে পাথর হলো জানতে চেও না
শুধু জেনো রক্তধারায়
ভেসে যায় আমার ব্যাকুল শোক।
৪
রক্ত জমাট বেঁধে
হাসপাতালের চাতালে ছড়িয়ে থাকে জন্মদাতা
শেষ কথা বলার রাতেও
যিনি খানিকটা ঘৃণা উগরেদিয়েছিলেন আমার হাতে
ঘুটিসাজিয়ে বসে আমি
অপেক্ষা করি দান দেওয়ার
এবারেনিশ্চিৎ
জিতেরপ্রত্যয় থাকে অবিরাম চলাচলে
এ চলাচল তাঁর পরিচিত
তাই এই শেষবার তিনি
নিজেকে তুলে নেন
আমার জন্য সাজিয়ে
রাখেন হাড়ের মালা
মৃত পিতার শেষ সম্বল
বহন করে আমার
আমৃত্যুপরাজয়ের চিহ্ন।
৫
আর কিছু ভাবিনি আমি
শুধু বইয়েদিয়েছি
আমার পৈশাচিক উল্লাস
আমারই মৃতদেহঘিরে।
৬
শীতল থাপ্পড়উড়ে আসে
হৃদয়ক্ষতে
এ ক্ষতের মার্জ্জনা
নেই
দুর্বলতাবড়ো নিদারুণ
অপরাধ।
৭
তুমি নাই বা জানলে
তবু থাকবে আমার প্রেম
প্রতিহিংসা ভরা
খাতায়।
৮
কোনো স্মৃতির কাছে
কখনো ভিক্ষে চাইব না
ভুল করেও গেয়ে উঠবো
না কোনো বিরহ-গান
যন্ত্রণার মধ্যে যে
অসহায়চিৎকার ছিল, তার জন্য আমি লজ্জিত
আর যাই হোক, পায়ে
ধরে যে প্রেম পাওয়াযায় না,
দু-দশকে তা সম্যক
জেনেছি।
৯
মৃতের সামনে বসে
অভ্যেস করি নির্লিপ্তি
শরীর জুড়ে থাকে
রামধনু
বৈরাগ্য দিয়েঢাকি।
১০
প্রেম তো বটেই
এই কবিতাগুচ্ছেরপায়ে
প্রতিহিংসাও বিসর্জন
দিলাম আমি।
রিনি গঙ্গোপাধ্যায়
অধ্যাপক, সেন্ট
জেভিয়ার্স কলেজ
ঠিকানা-
রিনি গঙ্গোপাধ্যায়
অননুমোদিত - কবিতা
১
অনুমোদনের পরোয়া করে
না যে দ্রোহকাল
আমি কখনো ছিলাম না
সেখানে
আমি চিরকেলে বাধ্য,
সতর্ক, সাবধানী
তাই সম্পর্কের
সৎকারকরিনি আমি
গ্রহণ করিনিমৃতদেহ
শুধু প্রতি রাতে
নিয়ম করে সঞ্চয় করেছি বিষ।
২
ব্যাকুলতার ধ্বনি
বাজে মন্দিরে
নিঃস্ব প্রেম আসলে
ঈশ্বরের মতো
তাই বারবার ফিরতে
হয়ভালোবেসে
এ জীবন বৈষ্ণব পদাবলী
নয় জেনেছি বহুমূল্যে
তাই বুঝি ভালোবাসার
চিৎকারে লজ্জা মাখা থাকে
মুহূর্ত স্মরণে থাকে
ফিরে যাওয়ার আর্জি
একটিমাত্র ছাতার
তলায়আধভিজে শরীরের গন্ধ ক্লান্ত করে ভীষণ
ইজাজত চায় কবরের
মাটি
যোগিনীর সতীত্বের
শ্লাঘা অপার
আমি তাই বিসর্জন
দিলাম যোগিনীপনা এবং সতীত্ব।
৩
আজকাল আঘাত পেতে
পরিসর বানাই
কড়াপড়ে
যাওয়া আঙুলে রাখি অপেক্ষা
সঙ্গের পুরুষটিকে
উত্যক্ত করি
বলি ভাদ্র মাসের
কুকুর
প্রবল যৌনতার মুখে
নুন পড়ার মতো সে ছিটকে ওঠে
কিন্তু ছেড়েযায় না,
প্রাণান্তকামড়বসায়
রক্ত চুঁইয়েপড়ে
পাথরে পাথরে নিঃশব্দে
নরম পলির স্তর কেমন
করে পাথর হলো জানতে চেও না
শুধু জেনো রক্তধারায়
ভেসে যায় আমার ব্যাকুল শোক।
৪
রক্ত জমাট বেঁধে
হাসপাতালের চাতালে ছড়িয়ে থাকে জন্মদাতা
শেষ কথা বলার রাতেও
যিনি খানিকটা ঘৃণা উগরেদিয়েছিলেন আমার হাতে
ঘুটিসাজিয়ে বসে আমি
অপেক্ষা করি দান দেওয়ার
এবারেনিশ্চিৎ
জিতেরপ্রত্যয় থাকে অবিরাম চলাচলে
এ চলাচল তাঁর পরিচিত
তাই এই শেষবার তিনি
নিজেকে তুলে নেন
আমার জন্য সাজিয়ে
রাখেন হাড়ের মালা
মৃত পিতার শেষ সম্বল
বহন করে আমার
আমৃত্যুপরাজয়ের চিহ্ন।
৫
আর কিছু ভাবিনি আমি
শুধু বইয়েদিয়েছি
আমার পৈশাচিক উল্লাস
আমারই মৃতদেহঘিরে।
৬
শীতল থাপ্পড়উড়ে আসে
হৃদয়ক্ষতে
এ ক্ষতের মার্জ্জনা
নেই
দুর্বলতাবড়ো নিদারুণ
অপরাধ।
৭
তুমি নাই বা জানলে
তবু থাকবে আমার প্রেম
প্রতিহিংসা ভরা
খাতায়।
৮
কোনো স্মৃতির কাছে
কখনো ভিক্ষে চাইব না
ভুল করেও গেয়ে উঠবো
না কোনো বিরহ-গান
যন্ত্রণার মধ্যে যে
অসহায়চিৎকার ছিল, তার জন্য আমি লজ্জিত
আর যাই হোক, পায়ে
ধরে যে প্রেম পাওয়াযায় না,
দু-দশকে তা সম্যক
জেনেছি।
৯
মৃতের সামনে বসে
অভ্যেস করি নির্লিপ্তি
শরীর জুড়ে থাকে
রামধনু
বৈরাগ্য দিয়েঢাকি।
১০
প্রেম তো বটেই
এই কবিতাগুচ্ছেরপায়ে
প্রতিহিংসাও বিসর্জন
দিলাম আমি।
অনবদ্য!
উত্তরমুছুন