বৃহস্পতিবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৯

শম্পা রায় বোস

হ্যাপি অ্যানিভার্সারি
---------------------------


না। মেয়েটি হ্যাপি অ্যানিভার্সারি জানে না।/

কিন্তু গো- বাথানে, গোবরের ছড়া দিতে জানে। /জাবনা কাটতেও জানে,,,,,, /

এমন কি গায়ে মুখে হাত বুলিয়ে, /ঐ অবলা গুলো র চোখের ভাষাও পড়তে জানে।/

কিন্তু মেয়েটি হ্যাপি অ্যানিভার্সারি জানে না।/

মেয়েটি সারাদিন বাগানে পাতা ফুল তোলে,
সন্ধ্যায় ঘরে এসে বাচ্চাদের জন্য খাবার বানায়,
হাড়িয়া খেয়ে
মরদের বুকে মাথা রেখে পূর্ণিমার চাঁদ দেখে,
ঝকঝকে সাদা পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে চাঁদটা কেমন টুপ করে উঠে পড়ে।

কিন্তু না। এই মেয়েটি ও হ্যাপি অ্যানিভার্সারি জানে না।

আষাঢ়ের কোন সন্ধ্যায়, ভাঙা বাক্সে রাখা বিয়ের ঐ লাল শাড়িটা,,,
সকলের আড়ালে, লুকিয়ে বার করে, /হাত বোলায়, চোখ বন্ধ করে গন্ধ শোঁকে।
বিয়ের রাতের সেই গন্ধটা খোঁজে।
বুকে চেপে ধরে মনে করতে চায় সেই দিনটার কথা,,,,,

কিন্তু সেও হ্যাপি অ্যানিভার্সারি জানে না,,,,,,,,

নেশায় আচ্ছন্ন,, মাতাল স্বামীর গুম করে পিঠে কিল খেয়ে,
দাঁত চেপে দম বন্ধ করা বুকের যন্ত্রণা সহ্য করে,,,,
এক বুক অভিমানে,হাসি মুখে, /মুখের সামনে ভাতের থালা ধরা ,,,
সেই মেয়েটি ও জানে না হ্যাপি অ্যানিভার্সারি র কথা,,,,,

হাড় জিরজিরে দাঁত মুখ খিঁচিয়ে থাকা অভাবের সংসারে,
এক ঘরভর্তি কিলবিল করা, উপোসী গুলোর জন্য,
 ভাত রাঁধতে রাঁধতে, দূরের কোনও বাঁশির শব্দে ধড়ফড়িয়ে ওঠে।
উঠোনে পড়া থাকা পলাশ ফুল খোঁপায় গুঁজে, 
/পারা বের করা আয়নায় মুখ দেখে।
দাঙ্গায় নিখোঁজ স্বামীর মুখটা মনে করে।
সেই মেয়েটিও কিন্তু হ্যাপি অ্যানিভার্সারি জানে না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন