সোমবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮

অমিতাভ দাস



#অদ্ভুতুরে_গল্প ।।

যখন পড়বি না তখন আগে থেকে ফোনে জানালি না কেন ?এত দূর ,বৃষ্টির ভিতর হেঁটে হেঁটে আসতে হত না । একথা বলায় ছাত্রী বৈতালী বললে ,স্যার আজ আমরা ভূতের গল্প শুনবো ।বাবার কাছে শুনেছি আপনি গল্প লেখেন ।

পদ্মিনী বললে ,জানেন তো স্যার , আমি হরিদ্বারে যখন গেছিলাম দাদু-দিদার সাথে ,ভূত দেখেছি ।

আপাত শান্ত ও ভীতু টাইপের রোহিত ।বললে ,না স্যার বলবেন না ।আমার ভয় করে ।

ঋজু বললে ,হ্যাঁ স্যার ভূতের গল্প শুনলে ও হিসি করে দেবে ।

তাহলে ভূতের গল্পে আর কাজ নেই ।ইতিহাস বইটা বার কর ।

বাইরে মেঘ ডাকছে । ঝোড়ো হাওয়া । বৈতালী জানালাটা বন্ধ করে দিলো ।

এই রে কারেন্ট অফ ।কী হবে এখন স্যার...বললে পদ্মিনী ।

বৈতালী মোমবাতিটা জ্বেলে চৌকির মাঝে রাখলো ।
আমি তো উঠবো উঠবো করছি । আজ তাহলে আমি যাই । পরে আরো বৃষ্টি হতে পারে ,বলে যেই উঠতে যাবো বৈতালীর মা পেঁয়াজি নিয়ে উপস্থিত । বললেন ,আমিও শুনি আপনার ভূতের গল্প । ফলে আমার আর ওঠা হল না । চেয়ারে আবার বসে পড়লাম ।
বৈতালী বললে , স্যার একটা ভয়ংকর ভূতের গল্প শুনতে চাই-- হাড় হিম করা ভূতের গল্প ।

কী গল্প শোনাবো ভাবছি ,এমন সময় দরজায় টোকা পড়ল ।বিদ্যুতের এক ঝলক আলো চোখ ধাঁধিয়ে দিল ।কড়াত্ করে বাজ পড়ল কাছেই কোথাও ।

ছাত্রীর মা দরজা খুলে দিতেই ঘরে কাকভেজা হয়ে ঢুকলেন ছাত্রী তথা বৈতালীর বাবা চম্পক দা ।
আরে অমিত যে ,আজ দেখা হয়ে গেল । এ বৃষ্টি চলবে বুঝলে ।

স্টুডেন্টদের দিকে তাকিয়ে বললেন ,তোরা কী ভূতের গল্প শুনছিস ? দাঁড়া আমিও একটু ফ্রেশ হয়ে আসি ।আমিও শুনব ভূতের গল্প ।

মিনিট পাঁচ-সাত পর চম্পক দা এসে বসলেন । আড্ডাবাজ মানুষ । আমি বেঁচে গেলাম । আমাকে আর বলতে হল না ।তিনিই বললেন ,
বুঝলে অমিত ,তখন কলেজে পড়ি ।সন্ধ্যাবেলা । কারেন্ট ছিল না । বেশ অন্ধকার ।তারপর বর্ষাকাল ।বাড়ি ফিরে কলে এসে হাত-পা ধুচ্ছিলাম । সেসময় আমাদের ছিল ঐ খানে একটা চাপা কল ,বলে তিনি হাত দিয়ে দেখালেন ।

গোলগোল চোখ করে বললেন ,দেখি কিছুটা দূরে একটা ছায়ামূর্তি হাতের আঙুল নেড়ে ডাকছে ।ইশারায় ।ডাক শোনা যাচ্ছে না । যেন অনেকক্ষণ ধরে আমায় দেখছে । কেন দেখছে আমায় ? আর এভাবে দাঁড়িয়ে আছে কেন বৃষ্টির রাতে ? কেমন যেন মনে হল ঘরে চলে এলাম ।বৃষ্টির ভিতর কে দাঁড়িয়ে আছে --এইটেই ভাবছি ।আর ডাকছেই বা কেন ?
ভাবতে ভাবতে আবার বাইরে এলাম ।তবে সাথে নিলাম তিন ব্যাটারীর চর্চটা । তবে ভেতরের ভয়টা আছেই । বাইরে এসে দেখি হুম ,তিনি দাঁড়িয়ে আছেন ।হাত নাড়ছেন । সত্যি এবার আমার একটু ভয় লাগল অমিত । কে ডাকতে পারে এখন ?

আলোটা যেই ফেললাম...বলে চুপ করে গেলেন তিনি ।

তারপর ? কাঁপা কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করলে ঋজু ।

আরে ওটা ছিল কচু গাছের পাতা ।আমি আগের দিন কচা দিয়ে পিটিয়েছিলাম ।সেই ছেঁড়া অংশগুলো নড়ছিল হাওয়ায় । দূরের আলো আর ছায়ায় আমি ভাবছি কেউ একজন দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছে আর আমায় ডাকছে । বলে হেসে ফেললেন । প্রথম অবস্থায় মনে হয়েছিল সেটা ভূত। যেমন তোমাদেরও মনে হয়েছিল । কী মনে হয়নি!!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন