সোমবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮

মৃত্তিকা মুখার্জী চট্টোপাধ্যায়

শপিংমল থেকে......
মৃত্তিকা মুখার্জী চট্টোপাধ্যায়

##
পিৎজা হাটে সদ্য কাজপাওয়া মেয়েটি 
এর আগে এতো আলো দেখেনি কখনও
শহরতলির কলাবাগান আর খাল পেরোনো
এককামরার ঘরে এখনও অবিরাম
সেলাই মেশিন চালাচ্ছেন তার মা......
'চাকুরিরতা' মেয়ে তাঁকে এখনও পর্যন্ত
একটুকরো পিৎজার পৃথিবী দেখাতে পারেনি।

##
নিজেকে ছাড়া কাউকে নিয়ে ভাবার
সময় নেই ছেলেটির,
এমনই ভাবতো সবাই......
বাজাজ স্প্লেন্ডারের তুফানী ঢেউয়ে
বেশ ক'টা বসন্ত কাটিয়ে,বাইশের কোঠায়
আজ সে বিদেশী পারফিউমের সেলসম্যান,
ঝাঁ চকচকে এক শপিং মলে-
হঠাৎ কোন গন্ধে এখন তার মনকেমন করে ওঠে,
মনে পড়ে ছোট বোনটার জন্য
অনেকদিন হলো হাতে করে কিছু
নিয়ে যাওয়া হয়নি

##
আড়চোখে দেখে নিচ্ছি পাশের সুবেশিনীকে,
ব্র্যান্ড, প্রাইস বোঝার অদম্য কৌতুহলে
বাড়াবাড়িই করে ফেলছি একটু......
আসলে অফশোল্ডার জামার আড়ালে 
উঁকি দেওয়া মাখন মাখন ত্বক বা 
ঠোঁটের র‍্যাভিশিং রেড এর কাছাকাছি যেতে
আর কতোগুলো ওভারটাইম লাগবে,
ঈষৎ ঈর্ষা ঈর্ষা চাওনিতে
সেটাই বোঝার চেষ্টায় আছি
: হে প্রেম, হে নৈঃশব্দ
মৃত্তিকা মুখার্জী চট্টোপাধ্যায়

সন্ধের মুখে গলা সাধে মেয়েটি,
ছাদের আলসে বেয়ে 
কাটা ঘুড়ি নেমে এসে আটকে থাকে
বারান্দার জুঁই গাছে,
সরগমের বাঁকে বাঁকে জড়িয়ে যায়
'হিরো' সাইকেলের চাকা
ঝাঁপতালে কাহারবায় রক্তদাগ সাক্ষী রেখে
অনন্তকাল আটকে থাকে দিশাহারা ঘুড়িটি-

ছেলেটি লিকার চায়ে
দু টাকার বিস্কুট ভেজায়.....
সেই সঙ্গে ধীরে ধীরে
তানপুরা, বিস্কুট আর গোধূলির সূর্য
ডুবে যায় অতল অন্ধকারের বুকে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন