রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

সম্পাদকীয়





“শীতের হাওয়ার লাগল নাচন আমলকীর এই ডালে ডালে”।প্রকৃতির মধ্যে গ্রীষ্ম থেকে হেমন্ত পর্যন্ত যত মলীনতা থাকে,সবই পূঞ্জীভূত হতে থাকে শীতের শরীরে।শরৎ ও হেমন্তের মাঝে শীত হল বিলাস এবং কর্মময় ঋতু। শীতকে শূদ্রবর্ণের মধ্যে ফেলেছেন রবীন্দ্রনাথ।শীতের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“শরতে তাহা চোখ জুড়াইয়া নবীন বেশে দেখা দেয়, হেমন্ত তাহা মাঠ ভরিয়া প্রবীণ শোভায় পাকে,আর শীতে তাহা ঘর ভরিয়া পরিণতি রূপে সঞ্চিত”।শীতের প্রতিটা ছন্দে ধ্বনিত হয় প্রকৃতির লাস্যময়তা। মনের গহীনে কোথায় যেন লুকিয়ে থাকে সবুজকে কাছে পাওয়ার প্রবল আগ্রহ।
গ্রামবাংলায় উঠোন ভরতি ধান, মাঠভর্তি শাকসব্জির আবাদ, সর্ষে ফুলের হলুদে ক্ষেতে মৌমাছির গান আহ্বান জানায়, “পৌষ তোদের ডাক দিয়েছে, আয় রে চলে, আয় আয়  শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লেপমুড়ি দেওয়া প্রকৃতি ; অপেক্ষারত থাকে নতুন সূর্যের।
বর্তমানে বিদ্যুতায়ন ও স্যালো-মেশিন আসার পর শীতের চেহারা বদলে গেছে।শীতের সৌন্দর্য ও মোহটা এখন মানুষের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।সেই ছোটবেলাকার শীতটা কোথায় যেন কুয়াশার আড়ালে মুখ ঢেকেছে। 
শব্দের নিজস্ব অনুতাপ হারিয়ে 
পর্যটন বিমুখ শীত আসে
 
মনের ইজিচেয়ারে
সামুদ্রিক প্রেম হামাগুড়ি দেয়
কমলালেবুর খোসায়,
 
নলেনগুড়ের চৌকাঠে...

“আমাদের সাথে সেই শীতের কি আর কোনোদিন দেখা হবে না— একদিন একথা বলার জন্য কাউকে খুঁজতে হবে”।রবীন্দ্রনাথ অল্প কথায় বর্ণনা করেছেন শীতের অন্তর্ধান নিয়ে।
তবে আমি একঝাঁক শীতের পরিযায়ী পাখিকে উপস্থিত করতে পেরেছি আপনাদের ভালোবাসার এই ব্লগে। বিখ্যাত কবি, লেখকদের সাথে নতুনরাও আছেন সৃজনে। কবিতা,গল্প,ধারাবাহিক ঠাসা ‍“সৃজন” ব্লগজিনের ‘শীত সংখ্যা’।সম্পাদক হিসাবে কী লিখব,কী লিখব না ভাবতে ভাবতে দু’চার লাইন লিখে ফেললাম। ব্লগজিন খুলতে গিয়ে আমি যে অকুন্ঠ ভালোবাসা,আন্তরিকতা পেয়েছি আপনাদের কাছে তাতে সত্যিই আমি আপ্লুত।আপনাদের ভালোবাসায় এই ব্লগ সার্থক হয়ে উঠুক, তার জন্য আপনাদের সর্বদাই পাশে চাই।আমার “সৃজন” আপনাদের কাছের হয়ে উঠুক।
প্রত্যেকের লেখা পড়ুন,মতামত দিন যা আগামীদিনে “সৃজন”-কে সমৃদ্ধ করবে। ভালোবাসায় থাকুন, সৃজনে থাকুন।


সৃজন

সম্পাদিকা, 
পারমিতা চক্রবর্ত্তী

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন