রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

কৌশিক সেন

                 



অলিভ পাতার দেশ

এই সখ্যতা তোমায় দেবো বলে সামুদ্রিক প্রজাপতির পাখনায়
ক্রশ এঁকে দিয়েছিলাম একদিন। তিরতিরে কর্মমুখরতায় 
ছড়িয়ে দিয়েছিলাম শান্তি আর ক্ষমার সুবাস। প্রজাপতির দল
যেদিন পাড় হয়ে গেল নিকশিয়ার আকাশ, আমি ভূমধ্যসাগরের
পাড়ে পাড়ে বুনে দিয়েছিলাম ঈশ্বরের বীজ।

তোমার মতো বন্ধু পাবোনা এই ভূমণ্ডলে, জানি। তোমার কাছে 
পৌঁছে দেবো বলে নীলনয়না মৎস্যকন্যার হাতে রেখে এসেছিলাম
অলিভ গাছের নরম প্রশাখা। এই স্বর্গীয় সখ্যতা তোমায় দেবো বলে
এক এক করে সমাধান করে গেছি সিড়িভাঙা গণিত। সদর দরজা
সাজিয়ে রেখেছি বেগুনী অর্কিডে।

দেখবে, তোমাকে ভাই বলে ডাকবো একদিন। তোমার বোন
সারা সকাল উপবাস করে আমারও কপালে এঁকে দেবে
চুয়া-চন্দন তিলক, কোনো এক কার্ত্তিক দ্বিতীয়ার অমৃতযোগে।
এনে দেবে জন্মদিনের উপহার। সেইদিন হলুদ প্রজাপতিরা
ফিরে আসবে আমাদের ঘর আলো করে...

মীনাবাজার

নাভির উর্বরতায় একটা রক্তগোলাপের চারা, 
কয়েকটি মৃত আরকিয়প্টেরিক্স আর 
এল ডোরাডোর স্বপ্ন দেখেছিলাম।  
সওদা করে ফেরবার পথে 
শুনতে পেয়েছিলাম 
ভ্রমরের গুঞ্জন।

এখন গমগম করে 
গভীর খাদের কিনারায়।  
গোলাপি আভা ছড়িয়ে পরে কাচের চুড়ির শব্দে।
কাউকে বলা হয়নি এখনও, এই নিভৃতে
জীবাশ্ম গেঁথে গেঁথে খুঁজে পাই
অনন্ত কামনার মিসিং লিঙ্ক!


সাহিত্য উৎসব

আমরা চা খেতে খেতে আলোচনা করবো, কীভাবে অমুক লেখকের
সাম্প্রতিক উপন্যাস থেকে খসে পরছে দেয়ালের পলেস্তারা,
ভাঙা দালানের কোটরে বাসা বেঁধেছে সুন্দরী চন্দ্রবোড়া
আর কার্নিশ বেয়ে কোন প্রবাহে নেমে আসছে
পাকুড়ের মজবুত শেকড়গুলি।

গরম শিঙাড়ায় কামড় দিয়ে আমরা আলোচনা করবো,
হটকেক কাব্যগ্রন্থ থেকে উঠে আসা উদ্ভিন্নযৌবনা নারিটি
ঠিক কাকে কাকে কল করে রাতের আমন্ত্রন জানিয়েছে।

দরবেশে ঠোট ঠেকিয়ে আলোচনা করে যাবো
মুক্তগদ্যে ধূসর মন্বন্তরের কাহিনী,
ক্ষুধার্ত শকুনের স্থির ধৈর্যের কথা।

তারপর, আঙুল চাটতে চাটতে সেরে নেবো কাকজ্যোৎস্নার বেচাকেনা   
আর গৃহযুদ্ধে নিহত কবিদের জন্য নীরবতা রেখে যাবো
এক পক্ষকাল!




৭টি মন্তব্য:

  1. অলিভ পাতার দেশ এবং সাহিত্য উৎসব, বেশ ভাল লাগলো।

    উত্তরমুছুন
  2. প্রতিটি লেখাই চমৎকার। তবে প্রথমটা একটু বেশিই মনকে ছুঁয়ে গেল।

    উত্তরমুছুন