রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

অনুপম দাশশর্মা



বৃষ্টিঘেঁষা দরিয়া
অলৌকিক সন্ধ্যের উঠোনে দাঁড়াতেই
কুয়াশা ঘিরে ধরল, দেখি..
শেষ শ্রাবণের আলতো জলবিন্দু হাতে
নিয়ে তুমি চুপ করে আছো
..
তোমার শরীর থেকে ভেসে আসছে
আমার রেখে দেওয়া সুখানুভূতির সুবাস
অথচ পিঠ থেকে আঁচল সরাতে গিয়ে
দেখলাম, সেখানে ছোপ ছোপ বিস্মৃতির মেঘ
...
স্থির চাহনির দিকে উদ্বেগ ফেলে বললাম
আদিম উল্লাসের মুখে হাত চাপা দেওয়াটাই কি
সমাহিত করেছে আমার বৃষ্টিঘেঁষা দরিয়াকে?



এটা ভয়ঙ্কর সত্য
কেউ মনে রাখেনা, রাখেওনি সংসারের
ধুলো পড়া কোণ
চোখ ফোটা সন্তানের মুখ দেখে যে চোখে
লেগেছিল খুশির ঝলক, সেখানে এখন
হতাশার অহঙ্কার
ধূসর পৌঢ়ত্ব সিঁড়ির শেষ ধাপে বসে দেখছে
কত দ্রুত উড়ে যাচ্ছে অপত্য স্নেহের
গুঁড়ো ধুলো।
.
মনে রাখেনি ছোট ছোট হাতের পুষ্পাঞ্জলি
দেওয়া শপথগুলো
মধ্যরাতের মুষলপর্বে ফুটপাথে উন্মত্ত যৌবন
কুশিক্ষিত হয়ে মোটা দাগ কেটে দেয়
প্রবীণ শিক্ষকের অবসরকালীন বুকে।
.
ভুলে গেছে ওরা পাথরের বুক চিরে
জ্বলে ওঠা চকমকির ইতিহাস
বন্যজীবন অসংযমীর পোশাকে আজ
খান্ডবদহন,আর.

ইস্পাতের আঘাতে চৌচির হয়ে যাচ্ছে
পৃথিবীর পিঞ্জর।
.
মনে রাখেনা কেউই ...
শুধু থেকে যায় সমস্ত কথা
অক্ষরে অক্ষরে, ক্ষমাশীল চোখে।




শ্রাবণ আমার
বাদামী রংয়ের মেঘ নেমে এলে রাজপথের
দাবানলে নিজস্ব শ্রাবণ খুঁজি
চেনা ঋতুরা বেয়াদব হয়েছে বহুবছর
বর্ষার নিজস্ব ঘ্রাণ পেতে হয়
চোখ শাসান কোন ঘূর্ণি বদতমিজের কাছে
বিচ্ছিন্ন পৃথিবীতে এক থেকে গেছে
হেমন্তের শিশির
সেখানেও ভিজবার বায়না ধরি
শ্রাবণ আমার দেউলিয়া মনের
সিক্ত প্রবোধ
বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখা জলপাইরঙা
ভরা নদী।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন