হানিমুন
শঙ্খসাথি পাল
বিয়ে করবো না, করবো না করে বছর খানেক কাটানোর পর নিজেরই মনে হল-বোকামি হয়ে যাচ্ছে কাজটা ।ভালো চাকরি, ফুটন্ত যৌবন - কেন নষ্ট করছে দিনের পর দিন ।দেবযানী তাকে ছেড়ে গেছে বলে সে কেন নিজের জীবনটাকে এভাবে নষ্ট করবে!! অতঃপর, বন্ধুদের নিয়ে একদিন বিকেলে মামীর বোনঝিকে দেখতে গেল রাকেশ। বলাই বাহুল্য, প্রথম দেখাতেই পাত্রী পছন্দ হয়ে গেল ।দেবযানীর মতো লম্বা কোমর অবধি চুল নেই বনানীর , কিন্তু নিঃসন্দেহে সে দেবযানীর থেকে সুন্দরী।
বিয়ের পর বেশ আনন্দেই দিন কাটছিল রাকেশের ।মা বাবার সাথে দিব্যি মানিয়ে নিয়েছে বনানী ।শাশুড়ি মা - এর থেকে রান্না করতেও শিখে নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।মাঝে মাঝে আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি নিমন্ত্রণ, সিনেমা, শপিং - সুন্দর জীবন ।শীত পড়তেই মনে হল, হানিমুন করতে যাওয়া হয় নি। তাই দু’জনে বেরিয়ে পড়ে আদর্শ বাঙালি দম্পতি হয়ে পুরীর উদ্দেশ্যে ।
জগন্নাথ মন্দির, কোনার্ক, নন্দনকানন, চিলকা - সবই দেখা হয়ে গেছে চারদিনে ।আজ আলসেমি করে সমুদ্র দেখার দিন ।কাল বাড়ি ফেরা ।বনানীকে সি- বিচে রেখে আইসক্রিম কিনে আনতে গিয়েছিল রাকেশ।ফিরে এসে দেখে, বনানী দুই মহিলার সাথে গল্পে মেতে উঠেছে ।এক মুহূর্তে চিনতে পারে নি মাথায় স্কার্ফ জড়ানো রুগ্ন মেয়েটাকে ।কিন্তু দেবযানীর চোখ দু'টো যে আজও আগের মতোই আছে ।
রাকেশ বনানীর কাছে পৌঁছানোর আগেই দেবযানীরা ফেরার রাস্তা ধরেছে ।দেখেই নি হয়ত রাকেশকে।বনানী বলে যাচ্ছে, "ইসস ওই মেয়েটার জানো ক্যানসার হয়েছে, আর বেশি দিন হয়তো বাঁচবে না ।সমুদ্র দেখতে এসেছে "।রাকেশের কানে ভাসছে, দেবযানীর গলা - - "এই আমরা কিন্তু হানিমুনে সমুদ্রে যাবো ।সমুদ্র আমি বড্ড ভালোবাসি..."
ছবি : গুগুল
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন