মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

চয়ন ভৌমিক

ঘূর্ণিঝড় ও আগুনকথা

চয়ন ভৌমিক
 

পোটেমকিনের যুদ্ধজাহাজ থেকে নেমে এল বসন্তসেনার দল। তাদের রুশি ঘোড়াদের নাক দিয়ে তখন বেরিয়ে আসছে রক্তপোড়া গরম নিশ্বাস। শরীরে তাদের তুন্দ্রা পশমের স্থুল আচ্ছাদন। ওই তো ওদের মালিকেরা বরফ সমুদ্রের উপর দিয়ে স্লেজ ছুটিয়ে চলেছে তাদের প্রিয় নারীদের স্তনাগ্রে। ঘামের গন্ধে মিশে যাচ্ছে তৃষ্ণার নিবারণ যন্ত্রণা। দেখো দেখো দূরে পড়ে আছে স্বৈরাচারী নায়কদের ছিন্নভিন্ন লাশ। ওরা যখন উল্লাসে পাঁউরুটি খাচ্ছে রুমাল উড়িয়ে, ঠিক সেই মুহুর্তেই ভার্খোয়ানস্কের ফার বনে বাতাস বইল শন্‌শন্‌ ক্রায়োজেনিক আঁচে। আর সে চটুল, জরা-মিশ্রিত ছোঁয়াচে তির-কামান এক বল্গাহরিণ শিকারীর ধনুক থেকে নিক্ষিপ্ত হল অজানা লক্ষ্যে। ভল্গা, গোবি, আরো কত জল, স্থল, পাহাড়, জঙ্গল তুচ্ছ করে সেই তির বিদ্ধ করলো এক ত্রিভঙ্গমুরারি দেশের মৃত্তিকাকে। সে দেশের নুয়ে পড়া কাঁধগুলোকে করে দিল ঋজু ও সটান। যারা নতমস্তকে সঙ্গম করে এসেছে এযাবৎ, তারাই বিজয়ধ্বজা কাঁধে নিয়ে নিল সহসা উন্নত কশেরুকায়। মেসোপটেমিয়ার অস্ত্র তাদের যুদ্ধসজ্জা হল, সিন্ধুসভ্যতার কবিতা হল আবাদি। সিপাহীদের দো-নলা বন্দুকের টোটা গঙ্গা-অববাহিকা বরাবর আবার তৈরী করল এক দামাল হাওয়া। সে হাওয়া এরপর ঘুরে যাবে অন্য কোনোদিকে। লোনা, সোঁদা গন্ধ নিয়ে ভেসে যাবে আরো দূরবর্তী কোনো সাভনায়। যেখানকার শুকনো ঘাসে আগুন লেগে গেছে। যেখানে বনময়ূরীর পেখমে, রামধনু-রঙা বৃষ্টির জিয়ন-স্পর্শ চাইছে দগ্ধ-ঠোঁট।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন