মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

শুভ আঢ্য



আমেরিকান কবি Sheldon Allan "Shel" Silverstein –এর জন্ম, সেপ্টেম্বর ২৫, ১৯৩০- তিনি একাধারে যেমন কবি, তেমন গায়ক, গীতিকার, কার্টুনিস্ট এমনকি চিত্রনাট্যকারও ছোটোদের লেখাতেও সিদ্ধহস্ত Uncle Shelby নামেও কিছু কিছু কাজ করেছেন ছোটোদের জন্য তাঁর বই ৩০টিরও বেশী ভাষায় অনূদিত হয়েছে, এবং বহুল বিক্রীত তিনি দু'দুবার গ্র্যামি পেয়েছেন এবং এক বার গোল্ডেন গ্লোব এওয়ার্ড অস্কারের জন্যও মনোনয়ন পেয়েছেন ১০ই মে ১৯৯৯ সালে তিনি মারা যান 



যেখানে পাশাপাশি হাঁটা যায় না / শুভ আঢ্য

কিছু এমন জায়গা, যেখানে পাশাপাশি হাঁটা যায় না 
রাস্তা শুরু হয় যখন,
এবং ঘাসগুলো, সাদা আর নরম বেড়ে ওঠে 
আর বেড়ে ওঠে টকটকে লাল সূর্যও 
আর রাতপাখী বিশ্রাম নেয় ওড়া থামিয়ে
তেমন এক ঠাণ্ডা গন্ধবহ হাওয়ায়

চলো আমরা এই জায়গা ছেড়ে যাই যেখানে 
আহত করে কালো ধোঁয়া এবং 
অন্ধকার রাস্তা পাক খায় হাওয়ায়
যে সমস্ত নরকগর্তে অ্যাসফল্ট ফুল জেগে ওঠে
সেখানে ধীরে হাঁটাই নিয়ম,
এবং লক্ষ্য রাখো চকের মতো সাদা তীরেরা যাচ্ছে সেদিকেই
যেখানে পাশাপাশি হাঁটা যাচ্ছে না আর

চলো সেখানেই যাই আমরা যেখানে ধীরে হাঁটা যায়
সেখানেও যাই যেখানে চকের মতো সাদা তীরেরা থাকে আর 
ছোটোদের জন্য দাগায়, ছোটোদের জন্য তারা জানায়
সেখানে হাঁটা যায় না পাশাপাশি


অগোছাল ঘর / শুভ আঢ্য

এমন ঘরের জন্য লজ্জা পাওয়া উচিৎ
যেখানে তার অন্তর্বাস বাল্বের ওপরে ঝুলছে আর 
যে চেয়ারে রাখার জায়গা নেই কোনো 
সেখানেই ঝুলছে তার বর্ষাতিও,
স্বভাবতই চেয়ারটি নোংরা স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে পড়েছে
জানলার ধারে তার নোটবুক,
সোয়েটার মেঝেতে, স্কার্ফ এবং একটা স্কি টেলিভিশনের পাশে,
অযত্নে ঝুলছে তার প্যান্ট দরজায়
বইগুলো তার বাথরুমে জমছে স্তুপাকার,
তার গেঞ্জি বড়ঘরেই পড়ে আছে
ঘুমোচ্ছে এড (টিকটিকি) তার বিছানায়, 
আর দেওয়ালে ঝুলছে তার দুর্গন্ধী মোজাগুলো
লজ্জা পাওয়াই উচিৎ এমন ঘরের জন্য!
কার ঘর? ডোলাল্ড, রবার্ট না উইলি... !! 
তুমি বলছ এটা আমার? আহ্‌... 
আমি জানি আমারটাও এর চেয়ে আলাদা কিছু নয়


যদি / শুভ আঢ্য

আমি যখন এখানে বসে ভাবছিলাম গতরাতে,
কিছুযদিঢুকে পড়েছিল কানে আমার
আর সারারাত লাফালাফি করেছিল
গেয়েছিল তাদের সেই পুরোনোযদি গানঃ
কি হতো যদি আমি যদি বোবা হতাম?
কি হতো যদি তারা বন্ধ করে দিতো সাঁতার আমার?
কি হতো যদি আমি প্রচুর মার খেতাম?
কি হতো যদি আমার কাপে ধরা থাকত জেলখানা কোনো?
কি হতো আমি কাঁদতে শুরু করলে?
কি হতো অসুখের পর মারা গেলে আমি?
কি হতো বিপত্তি ঘটালে স্বাদ নেবার সময়?
কি হতো যদি বুকে আমার ঘাস বেড়ে উঠতো?
কি হতো যদি পছন্দ করতো না কেউ আমায়?
কি হতো বজ্রাহত হলে আমি?
কি হতো যদি আমি না হতাম এমন?
কি হতো যদি আমার মস্তিষ্ক ক্রমশ ছোটো হয়ে যেত?
কি হতো যদি মাছগুলো ঠুকরাতো না আর?
কি হতো হাওয়ার ছিঁড়ে গেলে ঘুড়ি?
কি হতো তারা শুরু করলে যুদ্ধ আবার?
কি হতো আমার বাবা-মা ছাড়াছাড়ি হলে?
কি হতো বাসটার সামান্য দেরীতে?
আমার দাঁত সোজা বেড়ে না উঠলেই বা কি হতো?
কি বা হতো ছিঁড়ে ফেললে প্যান্ট আমার?
কি হতো আমি যদি নাচতে না জানতাম?
ঠিক থাকতো সবকিছুই, 
যেমন দুঃস্বপ্ন আবার ফিরে আসে




সেখানে একটা ভাল্লুক / শুভ আঢ্য

আমাদের ফিজের মধ্যে একটা মেরুভাল্লুক আছে
সে জানে সেখানে ঠাণ্ডা, আর ভালবাসে
সেই মাংসের ওপর বসার জায়গা
আর তার মাছের দিকে মুখ
আর লোমশ থাবা মাখনের প্লেটে ওই
সে ঠোক্কর দিচ্ছে নুডলসে
খচরমচর করছে ভাত
আর কতকোঁত খাচ্ছে সোডা
চাটছে বরফ
দরজা খুললেই চিৎকার করে উঠছে
যা দেখে ভয় পাচ্ছি আমি, কারণ
আমি জানি যে আমাদের ফ্রিজে
একটা মেরুভাল্লুক আছে 



ছোট ছেলেটি আর ওই বৃদ্ধ লোকটা / শুভ আঢ্য 

আমি মাঝেমধ্যেই চামচ ফেলে দিইছোটো ছেলেটা বলল
আমিওবললেন বৃদ্ধ লোকটি
ছোট ছেলেটি ফিসফিসিয়ে তার প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলার গল্প বললে 
বৃদ্ধ লোকটি হেসে জানালেন একই পরিণামের কথা
ছেলেটি তার প্রায়শই কান্নার কথা বলতে
বৃদ্ধ লোকটিও বলল, “আমিও
সবচেয়ে দুঃখের কথা যে বড়রা তাকে দেখেও দেখে না বলতে
ছোট ছেলেটি কোঁচকানো হাত পেল তার হাতের ওপর 
বৃদ্ধটি বলল, “আমি জানি তুমি কি বলতে চাইছ
আমার Samsung Galaxy স্মার্টফোন থেকে পাঠানো হয়েছে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন